ঢাকা ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ভারতের ষড়যন্ত্রে পাহাড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে : রাশেদ খান ফেনিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার আলোচনা সভা দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করা হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র সচিব আমাদের সবার একটি পরিচয়, আমরা বাংলাদেশি : অনিন্দ্য ইসলাম অমিত শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে সীমান্তবর্তী উপজেলা শ্যামনগর,কালিগঞ্জ ও দেবহাটা শ্যামনগরে বিভিন্ন পূজা মন্ডব পরিদর্শন ও মতবিনিময় করেন কেন্দ্রীয় যুব নেতা আমিন শাল্লায় পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে ব্যারিষ্টার মাহাদীন চৌধুরী আগৈলঝাড়ায় দূর্গাপূজা মন্ডপে আনসার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে কেন, প্রশ্ন অ্যাটর্নি জেনারেলের জামালপুরে নূর ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিকের ১৬ তম বর্ষে পদার্পন উপলক্ষে পল্লী চিকিৎসকদের নিয়ে ডক্টরস ডে ও ফ্রি মেডিকেল অনুষ্ঠিত

বউ পেটানোর শীর্ষে বরিশাল

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫ ১৬৬ বার পড়া হয়েছে

মো:আশরাফ, বরিশাল বিভাগীয় ক্রাইম রিপোর্টার :-

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS) এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (UNFPA)-এর যৌথভাবে পরিচালিত ২০২৪ সালের এক জরিপে উঠে এসেছে নারীর প্রতি সহিংসতার একটি ভয়াবহ চিত্র। ঘর কিংবা বাইরে, প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন নারীরা।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময়ে তাদের স্বামী বা ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক, মানসিক, যৌন কিংবা অর্থনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।জরিপ অনুযায়ী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে নারীর প্রতি ঘরোয়া সহিংসতার হার সবচেয়ে বেশি। বরিশালে ৮২ শতাংশ এবং খুলনায় ৮১ শতাংশ নারী তাদের জীবনকালে স্বামী বা সঙ্গীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ নারীর মধ্যে চারজনেরও বেশি এমন সহিংসতার অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়াচ্ছেন, যা সমাজে নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তোলে।যেখানে ঘর হওয়ার কথা ছিল নিরাপত্তার আশ্রয়স্থল, ভালোবাসার পরিবেশ- সেই ঘরই পরিণত হয়েছে নীরব এক কারাগারে। যেখানে একজন নারী যিনি সমাজে মা, স্ত্রী, কর্মজীবী বা শিক্ষার্থী হিসেবে সম্মান পান, সেখানে ঘরে ফিরে তাঁর সেই পরিচয়ের কোনো মর্যাদা থাকে না। বরং তিনি সহ্য করেন অব্যাহত নির্যাতন, যা অনেক সময় তাকে পরিণত করে চুপচাপ সহ্য করে যাওয়া এক ‘শিকারী’তে।বরিশাল ও খুলনার পর চট্টগ্রামে ৭৬ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৭৫, রাজশাহীতে প্রায় ৭৫ এবং রংপুরে ৭৪ শতাংশ নারী ঘরোয়া সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এমনকি তুলনামূলকভাবে ‘কম’ সহিংসতার অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত সিলেট ও ঢাকা বিভাগেও যথাক্রমে ৭৩ শতাংশ নারী এমন সহিংসতার শিকার। অর্থাৎ দেশের কোনো বিভাগেই এই হার ৭০ শতাংশের নিচে নামেনি।জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী, বাংলাদেশের নারীদের জীবদ্দশায় সহিংসতার গড় হার ৭০ শতাংশ। শুধু গত এক বছরেই ৪১ শতাংশ নারী এই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তবে দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতায় এই সংজ্ঞা কিছুটা সম্প্রসারিত করলে চিত্র আরও ভয়াবহ—জীবদ্দশায় ৭৬ শতাংশ নারী এবং গত বছরে ৪৯ শতাংশ নারী পারিবারিক সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন।প্রতিবেদনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে- প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলিতে নারীদের প্রতি সহিংসতার হার আরও বেশি। ঘরের ছাদ যেমন হারায়, তেমনি নারীর নিরাপত্তা, সম্মান ও মানবাধিকারও সংকটে পড়ে। দুর্যোগের সময় নারীদের লড়তে হয় কেবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে নয়, বরং ঘরের ভেতরের অমানবিকতা, দারিদ্র্যের চাপ, বাস্তুচ্যুতি এবং পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধেও।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

বউ পেটানোর শীর্ষে বরিশাল

আপডেট সময় : ০৫:১৯:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

মো:আশরাফ, বরিশাল বিভাগীয় ক্রাইম রিপোর্টার :-

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS) এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (UNFPA)-এর যৌথভাবে পরিচালিত ২০২৪ সালের এক জরিপে উঠে এসেছে নারীর প্রতি সহিংসতার একটি ভয়াবহ চিত্র। ঘর কিংবা বাইরে, প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন নারীরা।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময়ে তাদের স্বামী বা ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক, মানসিক, যৌন কিংবা অর্থনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।জরিপ অনুযায়ী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে নারীর প্রতি ঘরোয়া সহিংসতার হার সবচেয়ে বেশি। বরিশালে ৮২ শতাংশ এবং খুলনায় ৮১ শতাংশ নারী তাদের জীবনকালে স্বামী বা সঙ্গীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ নারীর মধ্যে চারজনেরও বেশি এমন সহিংসতার অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়াচ্ছেন, যা সমাজে নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তোলে।যেখানে ঘর হওয়ার কথা ছিল নিরাপত্তার আশ্রয়স্থল, ভালোবাসার পরিবেশ- সেই ঘরই পরিণত হয়েছে নীরব এক কারাগারে। যেখানে একজন নারী যিনি সমাজে মা, স্ত্রী, কর্মজীবী বা শিক্ষার্থী হিসেবে সম্মান পান, সেখানে ঘরে ফিরে তাঁর সেই পরিচয়ের কোনো মর্যাদা থাকে না। বরং তিনি সহ্য করেন অব্যাহত নির্যাতন, যা অনেক সময় তাকে পরিণত করে চুপচাপ সহ্য করে যাওয়া এক ‘শিকারী’তে।বরিশাল ও খুলনার পর চট্টগ্রামে ৭৬ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৭৫, রাজশাহীতে প্রায় ৭৫ এবং রংপুরে ৭৪ শতাংশ নারী ঘরোয়া সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এমনকি তুলনামূলকভাবে ‘কম’ সহিংসতার অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত সিলেট ও ঢাকা বিভাগেও যথাক্রমে ৭৩ শতাংশ নারী এমন সহিংসতার শিকার। অর্থাৎ দেশের কোনো বিভাগেই এই হার ৭০ শতাংশের নিচে নামেনি।জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী, বাংলাদেশের নারীদের জীবদ্দশায় সহিংসতার গড় হার ৭০ শতাংশ। শুধু গত এক বছরেই ৪১ শতাংশ নারী এই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তবে দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতায় এই সংজ্ঞা কিছুটা সম্প্রসারিত করলে চিত্র আরও ভয়াবহ—জীবদ্দশায় ৭৬ শতাংশ নারী এবং গত বছরে ৪৯ শতাংশ নারী পারিবারিক সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন।প্রতিবেদনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে- প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলিতে নারীদের প্রতি সহিংসতার হার আরও বেশি। ঘরের ছাদ যেমন হারায়, তেমনি নারীর নিরাপত্তা, সম্মান ও মানবাধিকারও সংকটে পড়ে। দুর্যোগের সময় নারীদের লড়তে হয় কেবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে নয়, বরং ঘরের ভেতরের অমানবিকতা, দারিদ্র্যের চাপ, বাস্তুচ্যুতি এবং পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধেও।