ঢাকা ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাণীশংকৈলে সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রেখে শারদীয় দূর্গা পূজা পালন করা হবে সহকারী পুলিশ সুপার পুলিশ অপকর্ম অপরাধে জড়িয়েছেন -ডিসি মাসুদ রাউজান ডাবুয়ায় শ্রীশ্রী লোকনাথ বাবার আবির্ভাব দিবস উদযাপিত ফেনীর শহীদ মিনার হকার মাদক ব্যবসায়ী কিশোর গ্যাং এর দখলে দুর্নীতি ও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত শ্যামনগর থানার কনস্টেবল সানি নির্বাচনে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে ঘুষ বাণিজ্য: কালিগঞ্জ থানার কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বিকাশ নাম্বারে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ রাণীশংকৈলে বিএনপি ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত বকশীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সাবেক নৌ সদস্যের মৃত্যু বকশীগঞ্জ নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ জহুরুল হোসেন

ফরিদপুরে মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডে এলাকা রণক্ষেত্র, ২ ভাই নিহত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৪৭:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৮৮ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:-

ফরিদপুরের মধুখালী মন্দিরের কালী প্রতিমায় আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হামলায় সহোদর দুই নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আরও ৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের বারোয়ারী মন্দিরে আগুনের ঘটনা ঘটে। এরপর এই আগুন দেওয়ার অভিযোগে মন্দিরের পাশের স্কুলে নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান স্থানীয়রা।

নিহত শ্রমিকরা হলেন- মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও আরশাদুল (১৫)।

জানা গেছে, হিন্দু অধ্যুষিত পঞ্চপল্লী গ্রামের ওই বারোয়ারি মন্দিরের কালী প্রতিমায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা মন্দির থেকে ২০ গজ দূরের পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশরুম নির্মাণকাজে নিয়োজিত মুসলিম সাত শ্রমিককে সন্দেহ করে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে অবরুদ্ধ করে মারপিট করে। খবর পেয়ে মধুখালী থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনা স্থলে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখে, এবং হতাহতদের উদ্ধারে বাধা দেয়। পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ৪ জনকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন মারা যান। আহত আরও দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন সাংবাদিকদের জানান, মাগরিবের নামাজ শেষে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার অজিত বাবুর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পান হাজার হাজার জনতা। তিনি জনগণকে শান্ত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনকে ফোনে অবহিত করেন। পরবর্তীতে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-মধুখালী সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, একটি মন্দিরে কে বা কারা আগুন দিয়েছে। বিক্ষুব্ধ লোকজন নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছে, মারপিট করেছে। এতে দুই ভাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

পুলিশ সুপার জানান, শত শত মানুষ এই হামলায় অংশ নেওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপুল সংখ্যক শটগানের ফাঁকা গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হলেও ঠিক কতজন সদস্য আহত হয়েছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারিনি। এই ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান তালুকদার জানান, তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের জন্য বলা হয়েছে। তারা শুক্রবার সকাল থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

ফরিদপুরে মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডে এলাকা রণক্ষেত্র, ২ ভাই নিহত

আপডেট সময় : ১২:৪৭:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:-

ফরিদপুরের মধুখালী মন্দিরের কালী প্রতিমায় আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হামলায় সহোদর দুই নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আরও ৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের বারোয়ারী মন্দিরে আগুনের ঘটনা ঘটে। এরপর এই আগুন দেওয়ার অভিযোগে মন্দিরের পাশের স্কুলে নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান স্থানীয়রা।

নিহত শ্রমিকরা হলেন- মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও আরশাদুল (১৫)।

জানা গেছে, হিন্দু অধ্যুষিত পঞ্চপল্লী গ্রামের ওই বারোয়ারি মন্দিরের কালী প্রতিমায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা মন্দির থেকে ২০ গজ দূরের পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশরুম নির্মাণকাজে নিয়োজিত মুসলিম সাত শ্রমিককে সন্দেহ করে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে অবরুদ্ধ করে মারপিট করে। খবর পেয়ে মধুখালী থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনা স্থলে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখে, এবং হতাহতদের উদ্ধারে বাধা দেয়। পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ৪ জনকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন মারা যান। আহত আরও দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন সাংবাদিকদের জানান, মাগরিবের নামাজ শেষে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার অজিত বাবুর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পান হাজার হাজার জনতা। তিনি জনগণকে শান্ত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনকে ফোনে অবহিত করেন। পরবর্তীতে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-মধুখালী সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, একটি মন্দিরে কে বা কারা আগুন দিয়েছে। বিক্ষুব্ধ লোকজন নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছে, মারপিট করেছে। এতে দুই ভাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

পুলিশ সুপার জানান, শত শত মানুষ এই হামলায় অংশ নেওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপুল সংখ্যক শটগানের ফাঁকা গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হলেও ঠিক কতজন সদস্য আহত হয়েছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারিনি। এই ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান তালুকদার জানান, তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের জন্য বলা হয়েছে। তারা শুক্রবার সকাল থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে।