ফটিকছড়িতে একজন নির্লোভ হাক্কানী আলেমের বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু

- আপডেট সময় : ১১:০০:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫ ৫২ বার পড়া হয়েছে

মাসুদুল ইসলাম মাসুদ:- সদর নেত্রকোনা হতে জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে এসেছিলেন এই প্রান্তে। সবুজ শ্যামল ছোট ছোট টিলা বেষ্টনী ঘেরা এই প্রকৃতি কে বেচে নিয়েছিল জীবনযুদ্ধের জন্য। অন্ধকার একটি এলাকাতে কোরআনের মশাল জ্বলানোর কাজে নেমে যান যোদ্ধা মৌলানা নুরুজ জালাল। নুরুজ জালাল জীবন যুদ্ধের চালাতে থাকেন অবিরাম সংগ্রাম। এই সংগ্রাম ছিল শিক্ষার আলো জ্বালানোর সংগ্রাম। নিজের জীবন ছিল জরাজীর্ণ। বিপন্ন ছিল নিজের জগত সংসার। এই জগত সংসারে তার ছিল অভাব অনটন। চলতে ছিল নিজের জীবন সংসার। তার মাঝে দায়িত্ব পালন করেন একটি মাদ্রাসার। পাশাপাশি জমিন চাষাবাদ এর কাজ করতো অথবা যখন যেটা সম্ভব সেটাই করত। এর পাশাপাশি তিনি আরো একটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে গরিব অসহায় মানুষের ছেলেমেয়েরা কোরআনের শিক্ষা নিত। প্রকৃতির নিয়মে সব চলে আসছিল এতদিন। করেছেন বিয়ে সাদি, হয়েছে ঘর সংসার। সংসার জুড়ে এসেছে ছেলে মেয়ে।দু’মুঠো বাড়তি রিজিকের আশায় পরিশ্রম করতেছেন আজকেও। করতেছিলেন ধান মাড়াই এর কাজ। বৈদ্যুতিক পাখার হাওয়া দিয়ে ধান আর খড় আলাদা করার কাজ করার সময় পাখাটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ঘরের ভিতর গিয়ে বৈদ্যুতিক লাইনের সাথে সংযোগ করার সময় অসাবধান বশত একটি কেবল মাল্টিপ্লাগে দিলেও দ্বিতীয় কেবলটি তার হাতে লেগে থাকে। সাথে সাথে একটা শব্দ করে মাটিতে পরে যায়। শব্দ শুনে আশপাশের প্রতিবেশী ছুটে এসে মেইন সুইস বন্ধ করে দিয়ে তাকে বৈদ্যুতিক মুক্ত করে। একটু একটু নড়াচড়া দেখলে সাথে সাথে গাড়ি করে তাকে নাজিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান হতে খবর আসে মাওলানা নুরুজ জালাল আর নেই। সাথে সাথে সেই খবর পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পরে। সকল মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে শোনা যায় নিহত নুরুজ জালালের সুনাম। সবাই বলে সেই ছিল একজন ভদ্র নম্র বিনয়ী মানুষ। কোনোদিন কারো সাথে দু কথা হয়নি। একটি প্রতিষ্ঠানে এত বছর পরিচালক হিসেবে ছিল কিন্তু কোনোদিন কারো সাথে দ্বীমত হয়নি। মৃত্যু কালে তিনি তার স্ত্রী ও চার কন্যা সন্তান রেখে যান। তার কন্যাদের মধ্যে দু কন্যা এখন বিবাহ উপযুক্ত। তার স্বজনরা বলেন তার মৃত্যুতে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরেছে। একই দিন সোমবার সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে তার কর্মস্থল গোলছাপা মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে তার প্রথম জানাজা শেষে তার নিজ জন্মস্থান নেত্রকোনায় তার মরদেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয়।