ঢাকা ০৪:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বয়স্ক,বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ মাতুভুঁইয়া ইউনিয়নের মমরিজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০বছর রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠিত হয় রাজাপুরে এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী আহাদ শিকদারের পক্ষে গনসংযোগ ফেনীতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ঝালকাঠতে জেলা জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত ৯দিনের ছুটি শেষে প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত পবিপ্রবি ক্যাম্পাস দেবহাটা বহেরা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট হেলাল উদ্দিন ও সাদিয়া অনৈতিক অবস্থায় জনগণের হাতে আটক স্বামীর লোভের কারনে আত্মহত্যার পথ বেচে নিল চট্টগ্রামের মেয়ে আবিদা তাসমিন আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার আসামি আব্দুল্লাহ সরদার গ্রেপ্তার রাণীশংকৈলে জাল টাকা সহ আটক ১

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ জয়

নিজেস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৩১:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৭৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশরাফ

রাওয়ালপিন্ডিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। সম্ভাবনা ছিল বজ্রঝড়েরও। তাতে শঙ্কা জাগে দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা গড়ানোয়! যদিও খেলা চলেছে, বাংলাদেশের জয়ে বাগড়াও দেয়নি বৃষ্টি।পাকিস্তানের নখদন্তহীন বোলাররাও পারেনি। শান মাসুদদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জয়ের পর শেষ টেস্টে ৬ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। দুহাত ভরে দেওয়া সফরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতেছে টেস্ট সিরিজ। তাও হোয়াইটওয়াশ করে। এর আগে দেশের বাইরে টেস্টে শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবল ধোলাই করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এবার ধরাশায়ী পূর্ণ শক্তির পাকিস্তান।পাকিস্তান হয়ত চতুর্থ দিনেই হারের স্বাদ পেয়ে যেত, যদি না বৃষ্টি এবং বাজে আবহাওয়া বাগড়া দিত! ‘পাকিস্তানকে বাঁচাতে পারে বৃষ্টি’— এমনও বলা হচ্ছিল। পিন্ডিতে চতুর্থ দিনের শেষ সেশনটা চলে যায় বৃষ্টির পেটে। তখন টিম টাইগার্সের হয়ে ব্যাটিংয়ে ছিলেন সাদমান হোসেন আর জাকির আলী। পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ১৮৫ রানের লক্ষ্যে আগেরদিনই জমা করে ফেলে ৪৩। আজ শেষ দিনে কয়েকটি উইকেট হারালেও নাজমুল হোসেন শান্তদের জয়ে বাগড়া দিতে পারেনি পাকিস্তান। দুর্দান্ত বোলিং আর দারুণ প্রত্যাবর্তনের বোলিংয়ে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। জয়ের সুবাস আগের দিনই পেয়েছিল। লাঞ্চের পর সেটি খাতা-কলমে নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ।আগের দিন বাংলাদেশের পক্ষে শুরু করেছিলেন হাসান মাহমুদ। চতুর্থ দিনে যোগ দেন আরও দুই পেসার। গতকাল সোমবার পেসারদের দশে দশ পাওয়ার দিনে হাসান মাতেন ফাইফারের আনন্দে। আরেক পেসার নাহিদ রানা দাগেন গতির তোপ, ফেরান পাকিস্তানের চার ব্যাটারকে। হাসানের পাঁচ, নাহিদের চার আর বাকি এক তাসকিন আহমেদের ঝুলিতে। টাইগার পেস তাণ্ডবের মুখে দ্বিতীয় ইনিংসে বেশিদূর যেতেও পারেনি স্বাগতিকরা। ছোট লক্ষ্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে শুরুটাও হয়েছে নির্ভুল। বেরসিক বৃষ্টি বাগড়াও দেয়নি। স্বাগতিকদের হতাশার সাগরে ডুবিয়ে তাতেই পেয়েছে বড় জয়ের আনন্দ। ‘বাংলাওয়াশের’ আনন্দ।পঞ্চম দিনে মুমিনুলের ৪০ রান, সাদমান ইসলামের ২৪ এবং অধিনায়ক শান্তর ব্যাটে আসে ৩৮ রান। মুমিনুল হকের ৩৪ রানে বিপদ আরও কমে আসলে, শেষ তুলির আচড় দেন মুশফিক ও সাকিব। মুশফিকের ২২ এবং সাকিবের ২১ রানেই পাকিস্তানের লক্ষ্য টপকে যায় বাংলাদেশ।
পিন্ডির মাঠে গতি, আগ্রাসন আর লাইন-লেন্থের কারিশমা আগের দিন দেখিয়েছেন তিন পেসার। পাকিস্তানের টপ, মিডল কিংবা লোয়ার মিডল— টাইগার পেসত্রয়ীর সামনে দাঁড়াতেই যেন পারছিলেন না কেউ। ১৭২ রান আনার দিনে সালমান আগার ৪৭ রান বাদে সবাই ছিলেন ব্যর্থ। উইকেট বিলিয়ে নয়, উইকেট দিয়ে আসতেই বাধ্য করেছিলেন টাইগার পেসাররা। লাইন-লেন্থ পড়তে না পেরে উইকেটের পেছনেই ক্যাচ দিয়েছেন চার ব্যাটার। বাকিদেরও চোখের জলে নাকের জলের মতো অবস্থা হয়ে উঠেছিল। সবশেষ পাকিস্তান আরেকটি টেস্ট হারের দ্বারপ্রান্তে। স্বাগতিকদের ১৮৪ রানের লক্ষ্যে টর্নেডো শুরু করেছে বাংলাদেশ।টেস্টের চতুর্থ দিনে শুরুর ৪৫ মিনিট পর প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। ওপেনার সাইমকে ড্রেসিং রুমের পথ দেখান তাসকিন। এরপর থেকেই পেসতাণ্ডবে পাকিস্তানি ব্যাটারদের পিণ্ডি চটকানো। নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই নাহিদের সাফল্য। পরে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে কুপোকাত বাবর আজম। নাহিদ রানার ব্যাক অব লেন্থের অফস্টাম্পের বাইরের বলটি বুঝে উঠতেই পারেননি সৌদ শাকিল। মাত্র তিন ওভারেই প্রতিপক্ষের তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে বল হাতে তখন রুদ্ররূপে রানা। রানের খাতা খোলার আগে জীবন পাওয়া রিজওয়ান ও সালমান সপ্তম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন। লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন থাকেন। কিন্তু পাকিস্তানকে টানতে পারেননি। নাহিদ তোপ থামলে আগ্রাসন চালান হাসান। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে রিজওয়ানকে ব্যাট বগলদাবা করান। ভাঙেন ৫৫ রানের জুটি। পরের বলে মোহাম্মদ আলীও পরাস্ত। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও সেই স্বাদ পাননি হাসান। তবে ৪৩ রানের বিনিময়ে ফাইফারের স্বপ্নপূরণ করে নিয়েছেন। পিন্ডির অনার্স বোর্ডে নাম ওঠাতে হাসান সবশেষ শিকার করেন মীর হামজাকে। আগের ইনিংসে ১২ রান নিয়ে শুরু করা পাকিস্তান দেড়শ ছাড়িয়ে তাই বেশিদূর যেতেও পারেনি।সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সপ্তম পেসার হিসেবে টেস্টে এক ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছেন হাসান। পাকিস্তানের মাটিতে তো বটেই, পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনিই প্রথম। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকার করা আগের বাংলাদেশিদের সবাই ছিলেন স্পিনার। মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা হাসানের এটিই প্রথম ৫ উইকেট। টেস্টে প্রথম হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পেসারদের ১০ উইকেট নেওয়ার ঘটনা আরও আছে।রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের টেস্টে ১০ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার নাজমুল হোসেন শান্তদের সামনে আরেকটি ইতিহাস গড়ার হাতছানি। দশে দশ পাওয়া বোলারদের কাজ আপাতত শেষ। এবার ব্যাট হাতে টাইগারদের প্রমাণের পালা। সেই প্রমাণের পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ সফরকারী দুই ওপেনার। জাকির হাসান ৩১ রানে আর সাদমান ইসলাম আছেন ৯ রানে অপরাজিত। বাজে আবহাওয়ার পর বৃষ্টিতে দিনের খেলা পণ্ড হওয়ার আগে একচ্ছত্র দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ।রাওয়ালপিন্ডির টেস্টের মূলত তিন দিন শেষ হলো। টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টির কারণে টসই হয়নি। পরের দিন পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে স্পিন ভেলকি। এর পরের দিন বিভীষিকার শিকার হতে যাওয়া থেকে মিরাজ-লিটনের ‍জুটিতে রক্ষা। চতুর্থ দিনেই ছিল জয়ের সুঘ্রাণ। পাকিস্তানের মাটি তো বটে, দলটির বিপক্ষে কখনই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যতিক্রম এবারের সফরে। দুদলের ১৩তম টেস্টে বাংলাদেশের জয় এবং ১৪তম ম্যাচেও বড় হার পাকিস্তানের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ জয়

আপডেট সময় : ০৯:৩১:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশরাফ

রাওয়ালপিন্ডিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। সম্ভাবনা ছিল বজ্রঝড়েরও। তাতে শঙ্কা জাগে দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা গড়ানোয়! যদিও খেলা চলেছে, বাংলাদেশের জয়ে বাগড়াও দেয়নি বৃষ্টি।পাকিস্তানের নখদন্তহীন বোলাররাও পারেনি। শান মাসুদদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জয়ের পর শেষ টেস্টে ৬ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। দুহাত ভরে দেওয়া সফরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতেছে টেস্ট সিরিজ। তাও হোয়াইটওয়াশ করে। এর আগে দেশের বাইরে টেস্টে শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবল ধোলাই করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এবার ধরাশায়ী পূর্ণ শক্তির পাকিস্তান।পাকিস্তান হয়ত চতুর্থ দিনেই হারের স্বাদ পেয়ে যেত, যদি না বৃষ্টি এবং বাজে আবহাওয়া বাগড়া দিত! ‘পাকিস্তানকে বাঁচাতে পারে বৃষ্টি’— এমনও বলা হচ্ছিল। পিন্ডিতে চতুর্থ দিনের শেষ সেশনটা চলে যায় বৃষ্টির পেটে। তখন টিম টাইগার্সের হয়ে ব্যাটিংয়ে ছিলেন সাদমান হোসেন আর জাকির আলী। পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ১৮৫ রানের লক্ষ্যে আগেরদিনই জমা করে ফেলে ৪৩। আজ শেষ দিনে কয়েকটি উইকেট হারালেও নাজমুল হোসেন শান্তদের জয়ে বাগড়া দিতে পারেনি পাকিস্তান। দুর্দান্ত বোলিং আর দারুণ প্রত্যাবর্তনের বোলিংয়ে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। জয়ের সুবাস আগের দিনই পেয়েছিল। লাঞ্চের পর সেটি খাতা-কলমে নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ।আগের দিন বাংলাদেশের পক্ষে শুরু করেছিলেন হাসান মাহমুদ। চতুর্থ দিনে যোগ দেন আরও দুই পেসার। গতকাল সোমবার পেসারদের দশে দশ পাওয়ার দিনে হাসান মাতেন ফাইফারের আনন্দে। আরেক পেসার নাহিদ রানা দাগেন গতির তোপ, ফেরান পাকিস্তানের চার ব্যাটারকে। হাসানের পাঁচ, নাহিদের চার আর বাকি এক তাসকিন আহমেদের ঝুলিতে। টাইগার পেস তাণ্ডবের মুখে দ্বিতীয় ইনিংসে বেশিদূর যেতেও পারেনি স্বাগতিকরা। ছোট লক্ষ্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে শুরুটাও হয়েছে নির্ভুল। বেরসিক বৃষ্টি বাগড়াও দেয়নি। স্বাগতিকদের হতাশার সাগরে ডুবিয়ে তাতেই পেয়েছে বড় জয়ের আনন্দ। ‘বাংলাওয়াশের’ আনন্দ।পঞ্চম দিনে মুমিনুলের ৪০ রান, সাদমান ইসলামের ২৪ এবং অধিনায়ক শান্তর ব্যাটে আসে ৩৮ রান। মুমিনুল হকের ৩৪ রানে বিপদ আরও কমে আসলে, শেষ তুলির আচড় দেন মুশফিক ও সাকিব। মুশফিকের ২২ এবং সাকিবের ২১ রানেই পাকিস্তানের লক্ষ্য টপকে যায় বাংলাদেশ।
পিন্ডির মাঠে গতি, আগ্রাসন আর লাইন-লেন্থের কারিশমা আগের দিন দেখিয়েছেন তিন পেসার। পাকিস্তানের টপ, মিডল কিংবা লোয়ার মিডল— টাইগার পেসত্রয়ীর সামনে দাঁড়াতেই যেন পারছিলেন না কেউ। ১৭২ রান আনার দিনে সালমান আগার ৪৭ রান বাদে সবাই ছিলেন ব্যর্থ। উইকেট বিলিয়ে নয়, উইকেট দিয়ে আসতেই বাধ্য করেছিলেন টাইগার পেসাররা। লাইন-লেন্থ পড়তে না পেরে উইকেটের পেছনেই ক্যাচ দিয়েছেন চার ব্যাটার। বাকিদেরও চোখের জলে নাকের জলের মতো অবস্থা হয়ে উঠেছিল। সবশেষ পাকিস্তান আরেকটি টেস্ট হারের দ্বারপ্রান্তে। স্বাগতিকদের ১৮৪ রানের লক্ষ্যে টর্নেডো শুরু করেছে বাংলাদেশ।টেস্টের চতুর্থ দিনে শুরুর ৪৫ মিনিট পর প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। ওপেনার সাইমকে ড্রেসিং রুমের পথ দেখান তাসকিন। এরপর থেকেই পেসতাণ্ডবে পাকিস্তানি ব্যাটারদের পিণ্ডি চটকানো। নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই নাহিদের সাফল্য। পরে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে কুপোকাত বাবর আজম। নাহিদ রানার ব্যাক অব লেন্থের অফস্টাম্পের বাইরের বলটি বুঝে উঠতেই পারেননি সৌদ শাকিল। মাত্র তিন ওভারেই প্রতিপক্ষের তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে বল হাতে তখন রুদ্ররূপে রানা। রানের খাতা খোলার আগে জীবন পাওয়া রিজওয়ান ও সালমান সপ্তম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন। লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন থাকেন। কিন্তু পাকিস্তানকে টানতে পারেননি। নাহিদ তোপ থামলে আগ্রাসন চালান হাসান। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে রিজওয়ানকে ব্যাট বগলদাবা করান। ভাঙেন ৫৫ রানের জুটি। পরের বলে মোহাম্মদ আলীও পরাস্ত। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও সেই স্বাদ পাননি হাসান। তবে ৪৩ রানের বিনিময়ে ফাইফারের স্বপ্নপূরণ করে নিয়েছেন। পিন্ডির অনার্স বোর্ডে নাম ওঠাতে হাসান সবশেষ শিকার করেন মীর হামজাকে। আগের ইনিংসে ১২ রান নিয়ে শুরু করা পাকিস্তান দেড়শ ছাড়িয়ে তাই বেশিদূর যেতেও পারেনি।সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সপ্তম পেসার হিসেবে টেস্টে এক ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছেন হাসান। পাকিস্তানের মাটিতে তো বটেই, পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনিই প্রথম। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকার করা আগের বাংলাদেশিদের সবাই ছিলেন স্পিনার। মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা হাসানের এটিই প্রথম ৫ উইকেট। টেস্টে প্রথম হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পেসারদের ১০ উইকেট নেওয়ার ঘটনা আরও আছে।রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের টেস্টে ১০ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার নাজমুল হোসেন শান্তদের সামনে আরেকটি ইতিহাস গড়ার হাতছানি। দশে দশ পাওয়া বোলারদের কাজ আপাতত শেষ। এবার ব্যাট হাতে টাইগারদের প্রমাণের পালা। সেই প্রমাণের পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ সফরকারী দুই ওপেনার। জাকির হাসান ৩১ রানে আর সাদমান ইসলাম আছেন ৯ রানে অপরাজিত। বাজে আবহাওয়ার পর বৃষ্টিতে দিনের খেলা পণ্ড হওয়ার আগে একচ্ছত্র দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ।রাওয়ালপিন্ডির টেস্টের মূলত তিন দিন শেষ হলো। টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টির কারণে টসই হয়নি। পরের দিন পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে স্পিন ভেলকি। এর পরের দিন বিভীষিকার শিকার হতে যাওয়া থেকে মিরাজ-লিটনের ‍জুটিতে রক্ষা। চতুর্থ দিনেই ছিল জয়ের সুঘ্রাণ। পাকিস্তানের মাটি তো বটে, দলটির বিপক্ষে কখনই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যতিক্রম এবারের সফরে। দুদলের ১৩তম টেস্টে বাংলাদেশের জয় এবং ১৪তম ম্যাচেও বড় হার পাকিস্তানের।