পরশুরাম বক্সমাহমুদে তুচ্ছ ঘটনা ব্যবসায়ি মোহাম্মদ উল্লাহ হত্যার আসামিরা বাদি ও স্বাক্ষীদের হত্যার হুমকি প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

- আপডেট সময় : ০৭:৩৭:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৬৭ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ হানিফ,ফেনী জেলা স্টাফ রিপোর্টার:ফেনীর পরশুরাম উপজেলা বক্স মাহমুদ ইউনিয়নের উত্তর টেটেস্বর গ্রামের বাসিন্দা খন্ডল বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ উল্লাহকে কলাগাছ কাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে হত্যা করার তিন মাস পার হলেও সকল আসামি এখনো গ্রেফতার না-হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পরিবার ও পরিজনরা। হত্যার হুমকির প্রতিবাদে এবং নিরাপত্তা ও সকল আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে দাবি জানিয়ে স্বজনরা শুক্রবার বসতবাড়ির সামনে যেখানে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে মোহাম্মদ উল্লাহকে সে স্হানে নিহতের ছোট ভাই ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে করেন।হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হোসনেআরা বেগম বাদী হয়ে দক্ষিণ টেটেস্বর গ্রামের বাসিন্দা আলী হোসেন, শুক্কুর আলী, মোঃ বাদশা, আনোয়ার হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন সহ অঙ্গাতনামা সাতজনকে আসামি করে পরশুরাম থানায় হত্যা মামলা নং,০৩ তারিখ ৬/৫/২৫ জিআর নাম্বার ৩৮/২৫ দায়ের করেন।
বাদিনী হোসনে আরা বেগম বলেন, একটি কলাগাছের কলার ছড়া কেটে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। তাদেরকে জিঙ্গেস করলে তারা হামলা চালিয়ে আমার স্বামীকে পিটিয়ে নির্মমভাবে আহত করে । তিনি পাঁচ দিন পরে মারা যান চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালে। আমি বাদি হয়ে মামলা করি।এখনো তিনজনকে পুলিশ ধরতে পারেনি। তাদের হুমকি ধমকি প্রাননাশের ভয়ভীতি প্রদর্শন করায়,আমার দেবর সহ স্বাক্ষীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। নিহতের ছোট ভাই মজনু বলেন,গত ৫ মে তারিখে আমাদের বাড়ির সামনে আমাদের সীমানা থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন একটি কলাগাছ কেটে নিয়ে যায়। আমরা তাদেরকে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের লোকজন পরিকল্পিত ভাবে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাকে কয়েকজন মারতে দেখে বড় ভাই এগিয়ে আসে উভয়ের মধ্যে সুরাহা বা নিষ্পত্তির জন্য।কিন্তু প্রতিপক্ষের লোকজন আমার ভাইয়ের মাথায় বড় একটি লাঠি দিয়ে জোরে আঘাত করে। এতে আমার ভাই লুটিয়ে পড়লে তাকে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।
সেখানে আইসিও তে সীট না-পেয়ে মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করার ৫ দিন পর গত ১০ মে সকাল এগারোটা মারা যান। পরে পোস্টমর্টেম শেষে বাড়িতে এনে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাপন সম্পন্ন করি।
সাত আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকীরা পলাতক থেকে আমাদের কে হুমকি ধমকি প্রাননাশের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
বাকী আসামিদের গ্রেফতার করে তাদের ফাঁসি সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। নিহতের ছোট ভাই আব্দুর রহিম জানান,মামলার ধারা দুর্বল হওয়ার কারনে আসামিরা উচ্চ আদালতের মাধ্যমে জামিনে এসে আমাদের কে মেরে ফেলে লাশ গুম করার অভিযোগ করেন তিনি।
নিহতের ছেলে বলেন, তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি। তারা আমার পিতার খুনি। আমি হত্যাকারিদের ফাঁসি চাই।
নিহত মোহাম্মদ উল্লাহর ভগ্নিপতি বলেন ,
আমার বড় ভাই একজন ভালো মানুষ ও খন্ডল বাজারের ব্যবসায়ী।কখনো মারামারি , ঝগড়া বিবাদ পছন্দ করতেন না। তিনি মিমাংসা ও সুরাহার জন্য এগিয়ে আসতেন।
সে লোককে তুচ্ছ ঘটনায় পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আসামিরা। তাদেরকে গ্রেফতার করে মৃত্যু দন্ডে দন্ডিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই।
নিহতএর স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা বলেন, একজন সহজ সরল লোক , ভালো মানুষ ও নামাজি বান্দাকে সামান্য একটা ঘটনায় পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করলো। তিনি আরো বলেন বাজারে আসামিদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ব্যবসায়ী সহ স্হানীয়রা। বাদীপক্ষের আইনজীবি এডভোকেট জামাল উদ্দিন এপিপি বলেন, এহত্যা মামলায় আসামী সাতজনসহ অজ্ঞাতনামা রয়েছে কয়েকজন। চার জন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরো বাকি তিনজন গ্রেফতার না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় বাদি ও স্বাক্ষীরা। আসামিরা উচ্চ আদালতের মাধ্যমে জামিনে এসে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে মর্মে আমাকে জানিয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার করা এবং তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে তিনি জানান।