নীলফামারীতে তথ্য চাওয়ায় সংবাদকর্মীকে হত্যার হুমকী দিলেন শিক্ষা কর্মকর্তা (ভিডিও ভাইরাল)

- আপডেট সময় : ০৪:১৫:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪ ৯৮ বার পড়া হয়েছে

নাহিন,নীলফামারী: তথ্য চাওয়ায় তেড়ে এসে স্থানীয় সংবাদকর্মীকে অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজসহ ৩ তলা থেকে ফেলে হত্যার হুমকি দিয়েছেন কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ।
এ ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ওই কর্মকর্তার অপসারণসহ শাস্তির দাবি তুলেছেন ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উপস্থিতি নিয়ে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলছেন ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী মনির হাসান জীবন। এসময় ওই কর্মকর্তা ভুক্তভোগীর বাড়ি কোথায় ও শিক্ষাগত যোগ্যতা জানতে চেয়ে চেয়ার থেকে উঠে এসে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে কক্ষ থেকে বের করে দেয়। আরও দেখা যায়, শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন বাড়ি কোথায় তোর? তুই শিক্ষার কি বুঝিস রে বের হও। একেবারে তোক দুনিয়া থেকে তুলে দেইম বদমাইশ। চওরে একেবারে দুনিয়া থাকি তুলি দেইম। তোকে লাথি মেরে তিন তলা থেকে ফেলে দিব।আর কখনো যাতে তোকে এখানে না দেখি”।
এ ঘটনায় আইনি প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী মনির হাসান জীবন।
অভিযোগে বর্ণিত, ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী মনির হাসান জীবন, পেশাগত কাজে কিশোরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে কর্তকর্তার কাছে তথ্য চাওয়ায় উত্তেজিত হয়ে তেড়ে এসে ওই সংবাদকর্মীকে অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ। গালিগালাজ করেই ক্ষান্ত হননি তিনি, হুমকি দিয়েছেন ৩ তলা থেকে ফেলে হত্যারও। এ ঘটনায় আমি আইনি প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী ওই সংবাদকর্মী জানান, “কিশোরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি সরকারী স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। এক একটি ক্লাসে ৪/৫জন শিক্ষার্থী। মুলত: এই বিষয়েই আমি ওই শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে তথ্য না দিয়ে আমার যোগ্যতা, আমার বাড়ী কই এসব বলে আমাকে লাঞ্চিত করে”।
এদিকে, ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে ২৫ জুন কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যায় বাংলাদেশের চিত্রসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা। ঘড়ির কাটায় তখন বেলা ১২টা। তখনও অফিসে অনুপস্থিত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ। কোথায় আছেন সে খবরও জানেন না কেউই। ফোন করা হলে তাতেও কোন সাড়া মেলেনি।পরে জানা গেল পারিবারিক কারণ দেখিয়ে মৌখিক ছুটিতে রয়েছেন অভিযুক্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, “ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপটি আমি দেখেছি, ওই চেয়ারে বসে সংবাদকর্মীর সাথে এমন আচরণ সরকারী কর্মচারী আচরণ বিধির পরিপন্থি”।
পারিবারিক কারণ দেখিয়ে কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকে মৌখিক ছূটি নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে ফোন করে কান মৌখিক ছুটি নেননি। কিছুক্ষণ আগে আমার ইমেইলে একটি স্বাক্ষর বিহীন দুটির আবেদন প্রেরণ করেছেন তিনি। কিন্তু আমি তার কান ছুটি মঞ্জুর করিনি। যেহেতু তার স্বাক্ষর ছিলো না ওই আবেদনে”।
উপজেলা পর্যায়ের একজন শিক্ষা কর্মকর্তার এমন দর্ব্যবহারে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। ভবিষ্যতে যেন কোনও সংবাদকর্মীর সাথে এমন আচরণ না করে তাই তার অপসারণসহ যথাযথ শাস্তির দাবি করছেন তাঁরা।