দেবহাটায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে ঘেরের মাটি ও পানি পরীক্ষা

- আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে

জিএম আব্বাস উদ্দিন,সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি:-জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ–২০২৫ উপলক্ষে শনিবার দেবহাটা উপজেলার আটশত বিঘা এলাকায় ঘেরের মাটি ও পানি পরীক্ষার মাধ্যমে মৎস্যচাষিদের বিজ্ঞানভিত্তিক পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। এ সময় এলাকার প্রায় ৫০ জন মৎস্য চাষি সরাসরি উপস্থিত থেকে হাতে-কলমে পরীক্ষার ফলাফল জেনে নিজেদের ঘেরে করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন।
এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন দেবহাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক। উপস্থিত ছিলেন মেরিন ফিশারিজ অফিসার সাজ্জাদ হোসেন, মৎস্য দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ক্লাস্টার মবিলাইজারগণ।
চাষিদের মধ্যে আটশত বিঘা এলাকার লক্ষণ বাগ বলেন, “আগে ঘেরে সমস্যা হলে আন্দাজের ওপর ওষুধ বা সার দিতাম। এখন বুঝতে পারছি পরীক্ষা ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। আজ ঘেরের মাটি ও পানির রিপোর্ট হাতে পেয়েছি, এই পরামর্শ মেনে চললে উৎপাদন খরচ কমবে এবং লাভও বাড়বে।”
কালাবাড়িয়া গ্রামের চাষি আছাদুল হক বলেন, “আমরা জানতাম মানুষের শরীর পরীক্ষা করা লাগে, কিন্তু আজ শিখলাম মাছ ও চিংড়ির ঘেরেরও নিয়মিত পরীক্ষা দরকার। আমার ঘেরের পানিতে অ্যামোনিয়ার উপস্থিতি পরীক্ষা করলাম। এর ফলে চিংড়ি বাঁচার হার বাড়বে এবং রোগ কমবে বলে আশা করি।”
চাষিদের পক্ষ থেকে আরও দাবি উঠে আসে, যেন উপজেলা মৎস্য দপ্তর নিয়মিত মাঠপর্যায়ে এ ধরনের পরীক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যায়। অনেক চাষি জানান, পরীক্ষার সুবিধা সবসময় অফিসে পাওয়া গেলেও গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে ক্যাম্পেইন করলে তারা আরও উপকৃত হবেন।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক বলেন, “অফিস চলাকালীন সময়ে আমাদের দপ্তরে বিনামূল্যে মাটি ও পানির পরীক্ষা করা হয়। তবে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে বিশেষ উদ্যোগে আজ আমরা একযোগে ৫০টি ঘেরের মাটি ও পানির পি এইচ, অক্সিজেন, লবণাক্ততা ও অ্যামোনিয়ার পরীক্ষা করেছি। পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, নিয়মিত পরীক্ষা করলে ঘেরে রোগের ঝুঁকি কমে, উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন। এজন্য মৎস্য দপ্তর চাষিদের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছে।
চাষিরা আশা প্রকাশ করেছেন, যদি এ ধরনের সেবা নিয়মিত ও সহজলভ্য করা হয়, তাহলে দেবহাটা অঞ্চলটি চিংড়ি ও মাছ উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।