ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক গাজীপুরে হাইওয়ে রোডে দেহ ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি, এলাকাবাসীর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি ঝিনাইদহে বাসচাপায় শিশুসহ ২ জন নিহত রাণীশংকৈলে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব দুমকীতে পূজা মন্ডপে এনসিপির শুভেচ্ছা বিনিময় বিদায়ের সুরে শ্যামনগরের পূজা মণ্ডপগুলো পটুয়াখালীতে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ‎ ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক আসিফ কাজলের আজ জন্মদিন বিজয়া দশমী, আজ শেষ দিন দেবী দুর্গার বিসর্জনের বিএনপি বিশ্বাস করে ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার: তারেক রহমান

দুই দিন ধরে অন্ধকারাচ্ছন্ন পবিপ্রবি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

দৈবাচির প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ০৭:১০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪ ৬৮ বার পড়া হয়েছে

 

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একটু বাতাস হলেই থাকেনা বিদ্যুৎ। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এমনটা বার বার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

গত সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডব পটুয়াখালী জেলাসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় আঘাত হানে। অথচ পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ রোববার রাত থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

পবিপ্রবিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর রয়েছে। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেও ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলোতে জেনারেটর চালিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় না। অথচ প্রতিটি শিক্ষার্থী জেনারেটর বিল বাবদ ১৫০ টাকা ফি প্রদান করে থাকেন। ফি দিলেও বছরের পর বছর শিক্ষার্থীরা জেনারেটরের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, “যে জেনারেটর ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্যাবল রয়েছে তা কৃষি কলেজ আমলের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে কোন জেনারেটর বা বিদুৎ সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয় নাই।”

দুর্যোগ পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ না থাকায় পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা, গোসল, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুতেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আবাসিক হলগুলোতে দেখা দিয়েছিল পানি সংকট এবং খাদ্যাভাব। এমনকি ছিলনা কোনো আলোর ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ এর বিকল্প হিসেবে জেনারেটর থাকার পরেও শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কেন প্রশ্ন হাজারো শিক্ষার্থীর।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “রবিবার রাত আনুমানিক ২টার পর থেকে হলে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর গোসল এবং খাওয়া-দাওয়ায় বেগ পোহাতে হয়েছে। অনেকে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেয়েছেন। এমন ভয়াবহ দুর্যোগে যখন সারাদেশজুড়ে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল সেখানে পবিপ্রবি প্রশাসন ছিলেন নীরব দর্শকের মতো।”

২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মাহবুব আলম জয় বলেন, “আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বিদ্যুৎ না থাকায় খাওয়া-দাওয়া ও পড়ালেখা থেকে শুরু সবকিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও আমরা একটু বাতাস বা বৃষ্টিতেই বিদুৎহীন অবস্থায় পড়ি। এই ছোট্ট একটি ক্যাম্পাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদুৎ সরবরাহ করতে প্রশাসন বৈদুতিক লাইনগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে এখনো কোনো উদ্যোগ নেন নি। যা খুবই দুঃখজনক।”

বিদ্যুৎ বা জেনারেটরের সরবরাহের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রতি হলে নিজস্ব জেনারেটরের দাবি জানিয়ে বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা জেনারেটর এর ফি দেওয়া সত্ত্বেও জেনারেটর সুবিধা পাচ্ছি না। রিমেল জন্য পল্লী বিদ্যুৎ না থাকায় দুই দিন ধরে ছাত্রবাসে বিদ্যুৎ নাই। বিদ্যুৎ না থাকায় বাথরুমে পানি নাই, শিক্ষার্থীরা সারা রাত অন্ধকারে ছিলো। আমাদের ফি দিতে একদিন দেরি হলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয় না। কিন্তু দুইদিন ধরে জেনারেটর চালানো হচ্ছে না, অনেক অনুষদের পরীক্ষা চলছে। জেনারেটর না চালাতে পারলে ফি নেওয়া বন্ধ করুক।”

বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ইউনুস শরীফ বলেন, “বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্ব যে রয়েছে তার সাথে কথা বললে ভলো হবে। প্রধান প্রকৌশলী আসলে জেনারেটরের দায়িত্ব না৷” দায়িত্বে কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জেনারেটর পরিচালনার জন্য একটা কমিটি রয়েছে তারা জেনারেটরের সকল কিছু পরিচালনা করে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অ.দা.) ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ” প্রয়োজনীয় মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন ১১কেবি ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটর কেনার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

দুই দিন ধরে অন্ধকারাচ্ছন্ন পবিপ্রবি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ০৭:১০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪

 

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একটু বাতাস হলেই থাকেনা বিদ্যুৎ। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এমনটা বার বার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

গত সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডব পটুয়াখালী জেলাসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় আঘাত হানে। অথচ পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ রোববার রাত থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

পবিপ্রবিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর রয়েছে। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেও ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলোতে জেনারেটর চালিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় না। অথচ প্রতিটি শিক্ষার্থী জেনারেটর বিল বাবদ ১৫০ টাকা ফি প্রদান করে থাকেন। ফি দিলেও বছরের পর বছর শিক্ষার্থীরা জেনারেটরের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, “যে জেনারেটর ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্যাবল রয়েছে তা কৃষি কলেজ আমলের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে কোন জেনারেটর বা বিদুৎ সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয় নাই।”

দুর্যোগ পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ না থাকায় পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা, গোসল, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুতেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আবাসিক হলগুলোতে দেখা দিয়েছিল পানি সংকট এবং খাদ্যাভাব। এমনকি ছিলনা কোনো আলোর ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ এর বিকল্প হিসেবে জেনারেটর থাকার পরেও শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কেন প্রশ্ন হাজারো শিক্ষার্থীর।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “রবিবার রাত আনুমানিক ২টার পর থেকে হলে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর গোসল এবং খাওয়া-দাওয়ায় বেগ পোহাতে হয়েছে। অনেকে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেয়েছেন। এমন ভয়াবহ দুর্যোগে যখন সারাদেশজুড়ে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল সেখানে পবিপ্রবি প্রশাসন ছিলেন নীরব দর্শকের মতো।”

২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মাহবুব আলম জয় বলেন, “আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বিদ্যুৎ না থাকায় খাওয়া-দাওয়া ও পড়ালেখা থেকে শুরু সবকিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও আমরা একটু বাতাস বা বৃষ্টিতেই বিদুৎহীন অবস্থায় পড়ি। এই ছোট্ট একটি ক্যাম্পাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদুৎ সরবরাহ করতে প্রশাসন বৈদুতিক লাইনগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে এখনো কোনো উদ্যোগ নেন নি। যা খুবই দুঃখজনক।”

বিদ্যুৎ বা জেনারেটরের সরবরাহের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রতি হলে নিজস্ব জেনারেটরের দাবি জানিয়ে বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা জেনারেটর এর ফি দেওয়া সত্ত্বেও জেনারেটর সুবিধা পাচ্ছি না। রিমেল জন্য পল্লী বিদ্যুৎ না থাকায় দুই দিন ধরে ছাত্রবাসে বিদ্যুৎ নাই। বিদ্যুৎ না থাকায় বাথরুমে পানি নাই, শিক্ষার্থীরা সারা রাত অন্ধকারে ছিলো। আমাদের ফি দিতে একদিন দেরি হলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয় না। কিন্তু দুইদিন ধরে জেনারেটর চালানো হচ্ছে না, অনেক অনুষদের পরীক্ষা চলছে। জেনারেটর না চালাতে পারলে ফি নেওয়া বন্ধ করুক।”

বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ইউনুস শরীফ বলেন, “বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্ব যে রয়েছে তার সাথে কথা বললে ভলো হবে। প্রধান প্রকৌশলী আসলে জেনারেটরের দায়িত্ব না৷” দায়িত্বে কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জেনারেটর পরিচালনার জন্য একটা কমিটি রয়েছে তারা জেনারেটরের সকল কিছু পরিচালনা করে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অ.দা.) ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ” প্রয়োজনীয় মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন ১১কেবি ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটর কেনার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে।”