ঢাকা রুটের কোটি কোটি টাকার লঞ্চ কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ভাঙারিতে

- আপডেট সময় : ০৬:৫৫:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ ১০৫ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার
স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমেছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের।ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা,আর কোনও উৎসব এলে হুড়োহুড়ি করে লঞ্চে যায়গা পাওয়া নিয়ে যে ভোগান্তি ছিলো তা এখনও স্মরণ করলে আঁতকে ওঠেন বরিশালবাসী। তবে সেই দিন পাল্টে গেছে। এখন সড়কপথে খুব অল্প সময়ে পদ্মা সেতু পার হয়ে চলে যাওয়া যায় দক্ষিণের ২১ জেলায়।আবার দিনে দিনে রাজধানীতে এসে পৌঁছাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত নানান পণ্যও। আর এর প্রভাব পড়েছে দীর্ঘ কয়েক দশকের লঞ্চ ব্যবসায়। যাত্রী সংকট আর জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে যুগ যুগ ধরে চলা ঢাকা-বরিশাল রুটের জমজমাট লঞ্চ ব্যবসায় এখন বিলুপ্তির পথে।রোটেশন করে চালিয়েও লাভের মুখ দেখতে পারছেন না লঞ্চ মালিকরা, তাই বাধ্য হয়েই কোটি-কোটি টাকার লঞ্চ কেটে লোহার দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
২০১২ সালে সমগ্র নৌ-সেক্টরে সারা জাগানো কীর্তনখোলা-২ অবশেষে স্ক্র্যাপ করা হচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক বছর বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ লঞ্চ হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করা তৎকালীন স্পীডস্টার এবং বিলাসবহুল লঞ্চটি মাত্র ১২ বছরের মাথায় লঞ্চ সেক্টর থেকে হারিয়ে গেলো।
ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটে শক্তপোক্ত এবং স্ট্যাবল লঞ্চ হিসেবে পরিচিত কীর্তনখোলা-২ গত বেশ কয়েক বছর ধরেই সার্ভিসের বাইরে।ধুঁকতে ধুঁকতে অবশেষে স্ক্র্যাপের মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন হতে যাচ্ছে কীর্তনখোলা-২।
সরজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজ এর কাছে হাসনাবাদ ধোলেস্বর ডক ইয়ার্ডে
এম ভি কীর্তনখোলা-২ লঞ্চটি কাটার কাজ চলছে। তিনতলা এই লঞ্চটির সামনের অংশ কাটা হয়ে গেছে। বাকি অংশও কাটা হচ্ছে গ্যাসের আগুন দিয়ে।
বিশাল এই লঞ্চের লোহা ও সিটগুলো বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে।জায়গা হবে ভাঙারির দোকানে।পরে রিফাইন করে ব্যবহার করা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী গলিয়ে বানানো হবে রড বা বাসাসহ্ বিভিন্ন গ্রিল তৈরির কাজে। ইঞ্জিন ও অন্যান্য অনুষঙ্গও বিক্রি হয়েছে একইভাবে।
কিছুদিন আগে একইভাবে কেটে ফেলা হয়েছে দানব আকৃতির কয়েকটি লঞ্চ সেগুলো হলো রাজধানী,কামাল-১,আসা যাওয়া-১ , কালাম খান-১ সহ্ আরো বেশ কয়েকটি লঞ্চ ।
বরিশাল বাস মালিক সমিতি সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলে সড়কপথে যাত্রীর চাপ বাড়ায় নৌপথে সংকট দেখা দেয়। বরিশাল থেকে আধা ঘণ্টা পরপর বেসরকারি পরিবহন ও বিআরটিসির বাস ঢাকায় ছুটছে। আগে যেখানে ২৪ ঘণ্টায় একটি বাস সর্বোচ্চ দুটি ট্রিপ দিত, এখন দৈনিক তিন থেকে চারটি ট্রিপ দিচ্ছে। এ ছাড়া গত দেড় বছরে দক্ষিণের ৬ জেলায় অন্তত ৫০০ নতুন বাস যুক্ত হয়েছে।
লঞ্চমালিকরা জানান, পদ্মা সেতু চালুর পর নৌপথে অন্তত ৬০ ভাগ যাত্রী কমে যায়। লোকসান এড়াতে তাঁরা লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে এনেছেন। আগে যেখানে ছয়টি লঞ্চ চলত, এখন সেখানে পালা করে দুটি লঞ্চ চলছে।