জোয়ারের পানিতে কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

- আপডেট সময় : ১০:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ ৪৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
এই বর্ষার মৌসুমে প্রতি বছরের ন্যায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লগোচাপের কারণে কক্সবাজার জেলার সাগর অঞ্চল উত্তাল রয়েছে। দু’একদিন ধরে কক্সবাজার জেলা জুড়ে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এতে সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল স্বাভাবিকের অধিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে । সাগর উত্তাল থাকায় ইতোমধ্যে সাগরের সকল মাছ ধরার ট্রলার সহ সব ধরনের নওজান কূলে ফিরে এসেছেন বলে জানা গেছে ।
জানা যায়, নিম্নচাপের প্রভাব এবং অমাবস্যর জোয়ারের কারণে সাগরের জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে মহেশখালী-কুতুবদিয়া দ্বীপসহ উপকূলীয় এলাকায় বিভিন্ন বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। এতে পানিতে তলিয়ে গেছে কুতুবদিয়া থানার বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকার প্রায় সাতকানিক ঘরবাড়ি ও আলী আকবর ডেইল এলাকার আনিসের ডেইল, তাবলর চর ও কাহার পাড়া, সাইট পাড়া, রাস্তাঘাট, পুকুর জলাশয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা । অন্যদিকে মহেশখালীর ধলঘাটা কালামের ছড়ার পশ্চিম সাইট ও মাতারবাড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
জানতে চাইলে কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথোয়াই প্রু মারমা গণমাধ্যম কর্মী কে বলেন , সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকা। এলাকাবাসী জানান বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। আরো জানা গেছে ইতোমধ্যে কয়েকটি ভাঙনের কাজ শেষ করেছেন ইএনও মহোদয়ের মাধ্যমে । কিন্তু, যেসব অংশ এখনো মেরামত সম্ভব হয়নি সেসব পয়েন্ট দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকেতছে । প্লাবিত এলাকার মানুষগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আশপাশের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।
আবার এদিকে সাগরের ঢেউয়ের প্রবল ধাক্কায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কয়েকটি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি দেখা দিচ্ছে । কক্সবাজার -টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের টেকনাফ অংশের কয়েকটি পয়েন্টে আবারো ভাঙনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে । কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনও জানান, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বেশকিছু বাড়ি–ঘর প্লাবিত হয়েছে । তিনি আরো জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব রকম প্রস্তুতির কথা ।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের গোসলে সতর্কতা জারি এবং হাঁটু পরিনাম পানিতেও নামতে নিষেধ করেছে । ইতিমধ্যে লাইফ গার্ড কর্মীরাও সতর্কতা অবস্থায় রয়েছেন । প্রবল ঢেউয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গত কাল ধরে আজো অব্দি এই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তবে গতকাল সবচেয়ে বেশি ভাঙন সৃষ্টি হয়। ভাঙনে বিস্তীর্ণ বালিরচর ও শতাধিক ঝাউ গাছ বিলীন হয়ে গেছে ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কক্সবাজার অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপটি উত্তরপশ্চিম হয়ে বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকাসহ পশ্চিমবঙ্গের দিকে অবস্থান করছে । আবহাওয়া অফিস আরো জানিয়েছেন এই নিম্নচাপের কারণে আগামী সোমবার পর্যন্ত দমকা হাওয়ার পাশাপাশি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বিরাজ করছে । উপকূলীয় এলাকা সমূহে ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর পরিস্থিতির স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকাসমূহকে স্থানীয় ৩ নাম্বার সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।