জীবিত সন্তানকে মৃত দেখিয়ে জমি বিক্রি করল বাবা

- আপডেট সময় : ১১:১৮:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪ ৬৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
সন্তানকে মৃত দেখিয়ে জমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সিরাজ উদ্দিন নামে এক বাবার বিরুদ্ধে। অথচ তার সন্তানটি জীবিত রয়েছে। নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ভুক্তভোগী সুবন বেপারী ওরফে নাহিদ হাসান।
সম্প্রতি এই ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের সিরাজপুর গ্রামে।
ওই পরিবার জানায়, এক কন্যাসন্তান রেখে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন উপজেলার চান্দহুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের সিরাজ উদ্দিন। দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা বেগমের ঘরে জন্ম নেন সুবন বেপারীসহ দুই ছেলে। সে সময় সিরাজ উদ্দিন শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন। ১৯৯৯ সালে শ্বশুরের আর্থিক সহযোগিতায় চান্দহর ইউনিয়নের চর কালিগঙ্গা মৌজায় ৫৪ শতাংশ কৃষি জমি ক্রয় করেন সিরাজ উদ্দিন। সেই জমি অর্ধেক সিরাজ ও বাকি অর্ধেক ছেলে সুবন বেপারীর নামে রেজিস্ট্রি করা হয়। তখন সুবনের বয়স ছিল ৫ বছর। শ্বশুরবাড়ি থেকেই বিদেশে যান সিরাজ উদ্দিন। তারপর থেকে পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে সিরাজের। পরে সন্তান সুবন ওরফে নাহিদ হাসানকে মৃত দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ নেন সুবনের বাবা সিরাজ উদ্দিন। এরপর সুবনের ২৭ শতাংশসহ পুরো ৫৪ শতাংশ জমিই বিক্রি করে দেন সিরাজ উদ্দিন। ওয়ারিশ সনদে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন বাদল স্বাক্ষর করেছেন।
সুবনের মা নাজমা বেগম বলেন, সিরাজ উদ্দিনের প্রথম স্ত্রীর একটি মাত্র কন্যাসন্তান আছে। এখন দাবি করা হচ্ছে সেই ঘরে একটি ছেলে ছিল যার নাম সুবন। ছোটবেলাতেই সে মারা গেছে। এ কারণে তার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বাবা। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। সুবন তার দ্বিতীয় স্ত্রী অর্থাৎ আমার ছেলের নাম।
স্থানীয় বাসিন্দা আলম জানান, এর আগেও কয়েক দফা জমি বিক্রির পাঁয়তারা করেন সিরাজ উদ্দিন। কিন্তু সে সময় সফল হননি। চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদের সহযোগিতায় জীবিত সন্তানকে মৃত দেখিয়ে এ জালিয়াতি করা হয়েছে। মেম্বারের কথায় চেয়ারম্যান কীভাবে যাচাই-বাছাই ছাড়া একটা জীবিত মানুষকে মৃত করল। সিরাজউদ্দিন এখন সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।
চান্দহুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন বাদল বলেন, কেউ যদি তথ্য গোপন করে ওয়ারিশ সনদ নেয় এটা তার ব্যাপার। আমি সবসময় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের দিয়ে তদন্ত করিয়ে তারপর সার্টিফিকেট দেই। তারপরও যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে সংশোধনের সুযোগ আছে।
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনও আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।