ঢাকা ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নোয়াপাড়া পথেরহাট থেকে মাওলা আলী জামে মসজিদ সড়ক সংস্কারের আহ্বান এলাকাবাসীর শ্যামনগর জলবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান ৩১ দফা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে প্রশংসিত হলো বাকৃবি ছাত্রদল আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে — আলতাফ হোসেন চৌধুরী দুমকিতে গণছুটির কারণে বিদ্যুৎ অফিস অচল, ভোগান্তিতে সাধারণ জনগণ কবর জিয়ারত ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত পরিবারের খোঁজখবর নিলেন দুমকি  উপজেলা বিএনপি ১২ই রবিউল আউয়াল আসলে আশেকদের মন উৎফুল্লতায় ভরে উঠে- মাওলানা মনসুর পটুয়াখালীতে জিপিএ-৫ কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ঝিনাইদহে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবককে কু পি য়ে জ-খ-ম চট্টগ্রামে ‘উত্তম বাবুর্চি ক্যাটারিং সার্ভিস’ মানসম্মত খাবার পরিবেশের অঙ্গীকার

জবিতে চলছে ‘ব্রেক দ্য সাইলেন্স’ কর্মসূচি, তালা দিয়ে অবরুদ্ধ ভিসি ভবন

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:২৯:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫ ২৮ বার পড়া হয়েছে

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) গত কয়েকদিন ধরে সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের ২ দফা দাবিতে চলছে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে “ব্রেক দ্য সাইলেন্স” কর্মসূচির মাধ্যমে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করা হয় ভিসি ভবন।

রবিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

অতঃপর আশানুরূপ পদক্ষেপ গৃহীত না হওয়ায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টায় উপাচার্যের কক্ষের সামনে অবস্থান করে “ব্রেক দ্য সাইলেন্স” আন্দোলনের মাধ্যমে ২ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিসি ভবনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘ভিসি স্যার জানেন না নাকি, আমরা এখানে বসে গেছি’, ‘আটটা টু আটটা, বাজায় কার ঘণ্টা’, ‘হচ্ছে হবে বাদ দাও, কবে হবে বলে দাও’, ‘করছি করছি বাদ দাও, কবে হবে বলে দাও’ সহ বিভিন্ন স্লোগান তেলেন।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী জবির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শফিক খান হাসিব বলেন, “হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে মেস বা ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়, যা ঢাকার মতো শহরে ভীষণ ব্যয়বহুল। ফলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আর্থিক সংকটে ভোগেন। আবাসন বৃত্তি চালু হলে অন্তত ভাড়া ও জীবনযাপনের চাপ কিছুটা কমে আমরা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবো। আর জকসু আমাদের অধিকার ও গণতান্ত্রিক কণ্ঠস্বরের প্রতীক। আমাদের দুটি দাবি-ই ন্যায্য। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত।”

এ বিষয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জগন্নাথ শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “লং মার্চ টু যমুনার মাধ্যমে আমাদের আদায়কৃত দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। তাই সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর দাবিতে আমাদের এই কর্মসূচি গ্রহণ করতে হয়েছে। দাবি বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।”

জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, “শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি আবাসন বৃত্তি ও জকসু বাস্তবায়নে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতা ও বড় ধরনের গাফিলতি দেখতে পাচ্ছি। ব্রেক দ্য সাইলেন্স কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা এই দীর্ঘসূত্রিতার অবসান ঘটাতে চাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি আমরা চালিয়ে যাবো।”

অতঃপর দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে জবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বাধার মুখে পরিনি।”

এছাড়াও তিনি বলেন, “মঙ্গলবার বিশেষ সিন্ডিকেট সভা ডেকে জকসুর নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করা হবে। সিন্ডিকেটে অনুমোদনের পর তা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আইন পাশ হলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যেই জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

অতঃপর ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, “প্রশাসন ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের যে আশ্বাস দিয়েছে, তা “প্রহসন”। তারা ভাবছে জাতীয় নির্বাচনের আগে জকসু নির্বাচন না হলে তা আর কখনোই হবে না। আমরা তা হতে দিবো না। সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষনার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ভিসি ভবন ছাড়বো না। দরকার হলে আমরা আরো কঠোর অবস্থানের ঘোষনা দিবো।”

যারই পরিপ্রেক্ষিতে ভিসির কক্ষের সামনে অবস্থান করে আরো কিছুক্ষণ স্লোগান দিয়ে পুরো ভিসি ভবন তালাবদ্ধ করে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম জানান, “জকসুর ব্যাপারে সবকিছু ছাত্রনেতাদের বলেছি। তারপরও কেনো তারা তালা দিলো বুঝতে পারছি না। এখন আর কিছু বলতে পারছি না।”

প্রসঙ্গত, সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর এই দুই দফা দাবিতে গত ১৯ তারিখ থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন শিক্ষার্থীরা। আজকের এই তালাবদ্ধ করার মধ্যে একটি সুষ্ঠ সমাধানের প্রত্যাশা সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

###
নাদিয়া আফরিন কেয়া
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

জবিতে চলছে ‘ব্রেক দ্য সাইলেন্স’ কর্মসূচি, তালা দিয়ে অবরুদ্ধ ভিসি ভবন

আপডেট সময় : ০৯:২৯:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) গত কয়েকদিন ধরে সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের ২ দফা দাবিতে চলছে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে “ব্রেক দ্য সাইলেন্স” কর্মসূচির মাধ্যমে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করা হয় ভিসি ভবন।

রবিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

অতঃপর আশানুরূপ পদক্ষেপ গৃহীত না হওয়ায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টায় উপাচার্যের কক্ষের সামনে অবস্থান করে “ব্রেক দ্য সাইলেন্স” আন্দোলনের মাধ্যমে ২ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিসি ভবনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘ভিসি স্যার জানেন না নাকি, আমরা এখানে বসে গেছি’, ‘আটটা টু আটটা, বাজায় কার ঘণ্টা’, ‘হচ্ছে হবে বাদ দাও, কবে হবে বলে দাও’, ‘করছি করছি বাদ দাও, কবে হবে বলে দাও’ সহ বিভিন্ন স্লোগান তেলেন।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী জবির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শফিক খান হাসিব বলেন, “হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে মেস বা ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়, যা ঢাকার মতো শহরে ভীষণ ব্যয়বহুল। ফলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আর্থিক সংকটে ভোগেন। আবাসন বৃত্তি চালু হলে অন্তত ভাড়া ও জীবনযাপনের চাপ কিছুটা কমে আমরা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবো। আর জকসু আমাদের অধিকার ও গণতান্ত্রিক কণ্ঠস্বরের প্রতীক। আমাদের দুটি দাবি-ই ন্যায্য। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত।”

এ বিষয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জগন্নাথ শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “লং মার্চ টু যমুনার মাধ্যমে আমাদের আদায়কৃত দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। তাই সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর দাবিতে আমাদের এই কর্মসূচি গ্রহণ করতে হয়েছে। দাবি বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।”

জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, “শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি আবাসন বৃত্তি ও জকসু বাস্তবায়নে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতা ও বড় ধরনের গাফিলতি দেখতে পাচ্ছি। ব্রেক দ্য সাইলেন্স কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা এই দীর্ঘসূত্রিতার অবসান ঘটাতে চাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি আমরা চালিয়ে যাবো।”

অতঃপর দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে জবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বাধার মুখে পরিনি।”

এছাড়াও তিনি বলেন, “মঙ্গলবার বিশেষ সিন্ডিকেট সভা ডেকে জকসুর নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করা হবে। সিন্ডিকেটে অনুমোদনের পর তা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আইন পাশ হলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যেই জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

অতঃপর ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, “প্রশাসন ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের যে আশ্বাস দিয়েছে, তা “প্রহসন”। তারা ভাবছে জাতীয় নির্বাচনের আগে জকসু নির্বাচন না হলে তা আর কখনোই হবে না। আমরা তা হতে দিবো না। সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষনার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ভিসি ভবন ছাড়বো না। দরকার হলে আমরা আরো কঠোর অবস্থানের ঘোষনা দিবো।”

যারই পরিপ্রেক্ষিতে ভিসির কক্ষের সামনে অবস্থান করে আরো কিছুক্ষণ স্লোগান দিয়ে পুরো ভিসি ভবন তালাবদ্ধ করে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম জানান, “জকসুর ব্যাপারে সবকিছু ছাত্রনেতাদের বলেছি। তারপরও কেনো তারা তালা দিলো বুঝতে পারছি না। এখন আর কিছু বলতে পারছি না।”

প্রসঙ্গত, সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর এই দুই দফা দাবিতে গত ১৯ তারিখ থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন শিক্ষার্থীরা। আজকের এই তালাবদ্ধ করার মধ্যে একটি সুষ্ঠ সমাধানের প্রত্যাশা সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

###
নাদিয়া আফরিন কেয়া
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়