চুরির অভিযোগে কিশোরকে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

- আপডেট সময় : ০৬:৪৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৩৪ বার পড়া হয়েছে

মোঃ সজিব সরদার,স্টাফ রিপোর্টারঃ পটুয়াখালীর দুমকীতে চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাত-পা বেঁধে উল্টো করে রড ও লাঠি দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পঞ্চায়েত বাজার ব্রিজসংলগ্ন চরবয়েড়া গ্রামের একটি মুদি দোকানে এ নৃশংস ঘটনাটি ঘটে। পরবর্তীতে নির্যাতনের ২ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
নির্যাতনের শিকার কিশোর রমজান মল্লিক পার্শ্ববর্তী রাজাখালী গ্রামের বশির মল্লিকের ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেলেও পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
স্থানীয় শিশু ইমন, মাহফুজুর রহমান ও কামাল সিকদার জানান, কিশোর রমজানকে দোকানদার জলিল সিকদার, তাঁর দুই স্ত্রী, আরিফ ও ফয়সাল সিকদার মিলে হাত-পা বেঁধে লোহার গ্রীলের সাথে উল্টো করে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। রড ও লাঠির আঘাতে কিশোর চিৎকার করলেও নির্যাতনকারীরা থামেনি। এসময় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে খবর পেয়ে পুলিশ এসে কিশোরকে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, কিশোরের ভাই সাকিব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “আমার ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন। তুচ্ছ ঘটনায় তাঁকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা অমানবিক। নির্যাতনকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হোক।”
অভিযুক্ত দোকান মালিক জলিল সিকদার নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “রমজান আমার দোকানে ঢুকে নগদ টাকা চুরি করতে গেলে স্থানীয়রা হাতেনাতে ধরে ফেলে। আমি কাউকে নির্যাতন করিনি।
দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জাকির হোসেন বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে কিশোরকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। চুরির অভিযোগে মামলা দিয়ে তাঁকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই।”
এক কিশোরকে প্রকাশ্যে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ও তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা বলছেন, আইন হাতে তুলে নিয়ে কাউকে এভাবে নির্যাতন করার কোনো অধিকার কারো নেই। তাঁরা এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
মানবাধিকার কর্মীরা আরো বলেন, এ ধরনের নির্মম নির্যাতন সভ্য সমাজে লজ্জাজনক এবং আইনের শাসনের প্রতি চরম অবমাননা। দ্রুত বিচার না হলে এর পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।