ঢাকা ০৩:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নতুন কুঁড়ি ও মার্কস অলরাউন্ডার কৃতিত্বে ফেনীর দুই শিক্ষার্থী কুতুবদিয়া কালী মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মতবিনিময় সভা রাজাপুরে ধানের শীষের পক্ষে গোলাম আজম সৈকতের গণসংযোগ শার্শায় সাংবাদিক মনি’র মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কাউখালি বেকুটিয়ায় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ইং পালিত শাল্লায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম’র উপজেলা শাখায় কমিটি গঠন করা হয় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গ্রীন ভয়েসের মানববন্ধন কুলিয়া চরবালিথা মুনষ্টার তরুণ সংঘের নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের সংবর্ধনা উজিরপুরে বিএনপি নেতা বহিষ্কার: ধর্মীয় সম্প্রীতি ভাঙা ও কুকীর্তির গল্প শ্যামনগরে বিশ্ব নদী দিবসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে যাত্রীসহ পণ্য পরিবহনে একমাত্র জান হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪ ১৭৫ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:- আমার ঘোড়ার গাড়িতে বৌ সাজিয়ে…….। এটি সিনেমার একটি পুরনো গান। এক সময় গ্রাম বাংলার পাড়া গাঁয়ে ঘোড়ার গাড়ির পাশাপাশি পালকির বেশ প্রচলন ছিল। সে সময়ে নুতন বৌকে ঘোড়ার গাড়ি কিংবা পালকিতে করে বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি আনা হতো। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের ধীরে ধীরে পালকি বিলুপ্ত হলেও এখন ঘোড়ার গাড়ি দখল করেছে চরাঞ্চল।
গাইবান্ধার চরাঞ্চলে এখন শুকনো মৌসুমে যাত্রীসহ পণ্য পরিবহনে একমাত্র মাধ্যম ঘোড়ার গাড়ি। তাই ঘোড়ার গাড়ির কদর বেড়েছে চরাঞ্চলের মানুষের কাছে।

গাইবান্ধার মোট আয়তনের ২৫ ভাগেরও বেশী এলাকা তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর চরাঞ্চল। এসব প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে রাস্তাঘাট না থাকায় নদীর হাটুপানি ও বালু চরে পণ্য পরিবহন, অসুস্থ রোগীকে বহন এবং যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ঘোড়ার গাড়িকে। চরের খানাখন্দ ভরা বালুময় রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা,
ট্রলি, ট্রাক যেতে পারেনা সেই সকল রাস্তায় জনপ্রিয় বাহন হিসেবে কদর বেড়েছে ঘোড়ার গাড়ির। চরগুলোর সিংহভাগ জমিতে রবি শস্য উৎপাদিত হয়। পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, গম, ডাল, পিঁয়াজ, মরিচ, শাকসব্জীসহ বিভিন্ন ধরনের উৎপাদিত ফসল কৃষকরা এখন ঘোড়ার গাড়িতে করে পরিবহন করে হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। এসব ফসল এখন আর ফরিয়া ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে বিক্রি করতে হয় না। চরাঞ্চলের কৃষকরা এক দিকে যেমন উৎপাদিত ফসল সহজেই হাটে-বাজারে পরিবহন করছেন অপর দিকে কৃষি উপকরণ সার-বীজসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে ঘোড়ার গাড়িতে করে সহজেই বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও যাত্রীসহ রোগী বহনেও ঘোড়ার গাড়ির কদর লক্ষ্যনীয়। এ সুযোগে ঘোড়ার গাড়ির মালিকরাও অর্থ উপার্জন করে সুন্দরভাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

ঘোড়ার গাড়ি চালক আমজাদ হোসেন জানান, প্রতিদিন গাড়ি চালিয়ে প্রায় ৭/৮’শ টাকা উপার্জন করা যায়। ঘোড়ার পিছনে দৈনিক এক থেকে দেড়’শ টাকা খরচ হয়। বাকী টাকা তার দৈনিক আয়। চালক সাইদুর রহমান জানান, বগুড়া, রাজশাহী, ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে শ্রমিকের কাজ করেও ঠিকভাবে সংসার চালানো সম্ভব হতো না। এখন এ গাড়ি চালিয়ে সংসারের খরচ বহন ছাড়াও আয় করতে পারছি। এখন শ্বশুর বাড়িসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও যাই এই গাড়িতে। গাড়ি চালিয়ে দৈনিক যে আয় হয় তাতে আর কোন সমস্যা হয় না। কৃষক আনারুল জানান, চর অঞ্চলে এখন অসংখ্য ঘোড়ার গাড়ি। ঘোড়ার গাড়িতে এখন যাত্রী পরিবহন ছাড়াও চরের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে সহজ হচ্ছে। এতে দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। সব কিছু মিলে ঘোড়ার গাড়ি এখন চরাঞ্চলবাসীর পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে যাত্রীসহ পণ্য পরিবহনে একমাত্র জান হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি

আপডেট সময় : ১০:২৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:- আমার ঘোড়ার গাড়িতে বৌ সাজিয়ে…….। এটি সিনেমার একটি পুরনো গান। এক সময় গ্রাম বাংলার পাড়া গাঁয়ে ঘোড়ার গাড়ির পাশাপাশি পালকির বেশ প্রচলন ছিল। সে সময়ে নুতন বৌকে ঘোড়ার গাড়ি কিংবা পালকিতে করে বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি আনা হতো। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের ধীরে ধীরে পালকি বিলুপ্ত হলেও এখন ঘোড়ার গাড়ি দখল করেছে চরাঞ্চল।
গাইবান্ধার চরাঞ্চলে এখন শুকনো মৌসুমে যাত্রীসহ পণ্য পরিবহনে একমাত্র মাধ্যম ঘোড়ার গাড়ি। তাই ঘোড়ার গাড়ির কদর বেড়েছে চরাঞ্চলের মানুষের কাছে।

গাইবান্ধার মোট আয়তনের ২৫ ভাগেরও বেশী এলাকা তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর চরাঞ্চল। এসব প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে রাস্তাঘাট না থাকায় নদীর হাটুপানি ও বালু চরে পণ্য পরিবহন, অসুস্থ রোগীকে বহন এবং যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ঘোড়ার গাড়িকে। চরের খানাখন্দ ভরা বালুময় রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা,
ট্রলি, ট্রাক যেতে পারেনা সেই সকল রাস্তায় জনপ্রিয় বাহন হিসেবে কদর বেড়েছে ঘোড়ার গাড়ির। চরগুলোর সিংহভাগ জমিতে রবি শস্য উৎপাদিত হয়। পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, গম, ডাল, পিঁয়াজ, মরিচ, শাকসব্জীসহ বিভিন্ন ধরনের উৎপাদিত ফসল কৃষকরা এখন ঘোড়ার গাড়িতে করে পরিবহন করে হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। এসব ফসল এখন আর ফরিয়া ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে বিক্রি করতে হয় না। চরাঞ্চলের কৃষকরা এক দিকে যেমন উৎপাদিত ফসল সহজেই হাটে-বাজারে পরিবহন করছেন অপর দিকে কৃষি উপকরণ সার-বীজসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে ঘোড়ার গাড়িতে করে সহজেই বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও যাত্রীসহ রোগী বহনেও ঘোড়ার গাড়ির কদর লক্ষ্যনীয়। এ সুযোগে ঘোড়ার গাড়ির মালিকরাও অর্থ উপার্জন করে সুন্দরভাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

ঘোড়ার গাড়ি চালক আমজাদ হোসেন জানান, প্রতিদিন গাড়ি চালিয়ে প্রায় ৭/৮’শ টাকা উপার্জন করা যায়। ঘোড়ার পিছনে দৈনিক এক থেকে দেড়’শ টাকা খরচ হয়। বাকী টাকা তার দৈনিক আয়। চালক সাইদুর রহমান জানান, বগুড়া, রাজশাহী, ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে শ্রমিকের কাজ করেও ঠিকভাবে সংসার চালানো সম্ভব হতো না। এখন এ গাড়ি চালিয়ে সংসারের খরচ বহন ছাড়াও আয় করতে পারছি। এখন শ্বশুর বাড়িসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও যাই এই গাড়িতে। গাড়ি চালিয়ে দৈনিক যে আয় হয় তাতে আর কোন সমস্যা হয় না। কৃষক আনারুল জানান, চর অঞ্চলে এখন অসংখ্য ঘোড়ার গাড়ি। ঘোড়ার গাড়িতে এখন যাত্রী পরিবহন ছাড়াও চরের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে সহজ হচ্ছে। এতে দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। সব কিছু মিলে ঘোড়ার গাড়ি এখন চরাঞ্চলবাসীর পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম।