গাইবান্ধায় নারী হাজতিকে নির্যাতনের ঘটনায় দুই কারারক্ষীকে বদলি

- আপডেট সময় : ১০:০৬:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৯৩ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোটার :
গাইবান্ধা জেলা কারাগারে নারী হাজতিকে বিবস্ত্র করে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামসহ দুই কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছে।গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে তাদেরকে বদলির বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাদেরকে বদলি করা হয়। বদলি হওয়া অপর কারারক্ষীর নাম সাবানা খাতুন। প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর কারাগার এবং নারী কারারক্ষী সাবানা খাতুনকে ঠাঁকুরগাও কারাগারে বদলি করা হয়েছে।
জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভেতরে কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে মেঘনা খাতুন নামে এক নারী কয়েদির অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় মোর্শেদা খাতুন সীমা (৩৪) নামে এক নারী হাজতিকে বিবস্ত্র করে, হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেন অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীসহ অন্যরা। শুধু তাই নয়, নারী হাজতি সীমাকে কারাগারের নারী-পুরুষ উভয়ই মিলে বিবস্ত্র করে স্পর্শকাতর স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এমনকি কামড় দিয়ে ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে শরীরের গোশত।
এখানেই শেষ নয়, ঘটনা গোপন রাখতে দেখানো হয় প্রাণনাশসহ সম্ভ্রমহানির হুমকিও। অন্যথায় হত্যা করে হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়ার আল্টিমেটামও দেয় সুবেদারসহ অভিযুক্তরা। এ ঘটনা তুলে ধরে অসুস্থ ওই নারী হাজতির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা, জীবন ও সম্ভ্রম রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গত ১৬ এপ্রিল গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী হাজতির মা করিমন নেছা।
জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হাজতি মোর্শেদা খাতুন সীমা প্রায় ৫ বছর যাবৎ গাইবান্ধা জেলা কারাগারে আবদ্ধ রয়েছেন। কারাগারে অবস্থানকালে কিছু দিন পূর্বে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে কর্মরত সুবেদার আশরাফুল ইসলাম এবং নারী কয়েদি মেঘলা খাতুনের মধ্যে চলমান অবৈধ কার্যকলাপ দেখে ফেলেন সীমা। এতেই সুবেদার আশরাফুল ও কয়েদি মেঘলা খাতুন সীমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা প্রতিনিয়ত ঘটনার বিষয়ে কাউকে বললে কারাগারের ভেতরেই সীমাকে খুন-জখমে হত্যা করে আত্মহত্যা কিংবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দেখানো হবে বলে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিতে থাকে। হাজতি সীমা খাতুন বারবার তাদেরকে আশরাফুল-মেঘলা) ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বলবে না মর্মে জানানোর পরও সুবেদার আশরাফুল ও মেঘলা খাতুন আতঙ্কিত হয়ে কারাগারের ভেতরে সীমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।