(বিবিসি রেডিও থ্রি এর বিশেষ ধারাবাহিক 'দ্য গোল্ডেন এইজ অব ইসলাম' এর একটি পর্বে অধ্যাপক জুলিয়া ব্রে খলিফা হারুন আল-রশিদ এবং সেই সময়ের বাগদাদের চিত্র বর্ণনা করেছেন। খলিফা হারুনকে মুসলিম বিশ্বের একজন মহান শাসক হিসেবে বর্ণনা করা হলেও তার দুর্বল কৌশলের কারণে অনেক রক্তপাত ও বিশৃঙ্খলাও তৈরি হয়েছিল। এই প্রতিবেদনে সেটাই তুলে ধরা হলো।)
খলিফা হারুন আল-রশিদ সম্পর্কে সবাই জানে। বিখ্যাত আরব্য রজনীর কল্পকাহিনী আলিফ লায়লার একটি চরিত্র খলিফা হারুন আল-রশিদ। লেখক টেনিসনের মহান হৃদয়ের অধিকারী হারুন আল-রশিদ। কিন্তু আমরা আসলে তার সম্পর্কে কতটা জানি?
আমরা জানি যে তার ক্ষমতায় থাকার সময়কাল ছিল খিলাফত শাসনামলের স্বর্ণযুগ।
হারুন আল-রশিদের সাম্রাজ্য মধ্য এশিয়া থেকে লিবিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। টেনিসন তার লেখায় উল্লেখ করেছেন, এটা ছিল আদর্শ কাল ও আদর্শ স্থান, কারণ এটা ছিল মহান শাসক হারুন আল-রশিদের শাসনামল।
কিন্তু ওই সময়টা আসলেই কতটা আদর্শ ছিল? এই সময়টাকে ‘স্বর্ণযুগ’ বলা শুরু হয় আরও অনেক পরে এসে।
খিলাফতের বিক্ষিপ্ত মোট ৬০০ বছরের শাসনের ইসিহাসকে একক ভাবে এক বিন্দুতে প্রকাশ করার চেষ্টা থেকেই মূলত এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
খিলাফতের এই ৬০০ বছরের মধ্যে খলিফা হারুন আল-রশিদের শাসনকাল ছিল মাত্র ২০ বছরের কিছু বেশি। যা ছিল ৭৮৬ সাল থেকে ৮০৯ সাল পর্যন্ত।
অনেক মানুষই বিশ্বাস করেন যে, শিল্প, বিজ্ঞান এবং সাহিত্যের অনেক সেরা কাজ হারুন আল-রশিদের শাসনামলেই এসেছে।
তাদের মতে, হারুন আল-রশিদ এবং বাগদাদ- এই নাম দুটো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।
বাগদাদ ছিল একটি শক্তিশালী রাজ্য, ঠিক যেমনটা আলিফ লায়লায় বর্ণনা করা হয়েছে।
কিন্তু হারুন আল-রশিদ কেমন ছিলেন? আমরা তার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতে পারি না, কারণ হারুন আল-রশিদ যে বাগদাদকে শাসন করতেন তার কিছুই আর এখন অবশিষ্ট নেই।
কিন্তু আমরা জানি যে, তার শাসনামলের শেষ দশ বছরে তার প্রিয় শহর ছিল সিরিয়ার শহর রাক্কা। এটি বাগদাদ থেকে উত্তর দিকে এবং খিলাফত সাম্রাজ্য ও বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের সীমান্তের কাছে অবস্থিত ছিল।
প্রত্নতত্ত্ববিদরা রাক্কায় শুধু প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষই খুঁজে পাননি, বরং সেখানে তারা কারখানারও সন্ধান পেয়েছেন। অষ্টম শতকে কারখানা থাকার বিষয়টি নিঃসন্দেহে আগ্রহ উদ্দীপক। কিন্তু এই অঞ্চলে শিল্প গড়ে উঠার পেছনে হারুন আল-রশিদের কতটা হাত ছিল তা জানা যায় না।
বাস্তবতা হচ্ছে, গল্প থেকে আমরা হারুন আল-রশিদ সম্পর্কে যা জেনেছি এবং মধ্যযুগীয় ইতিহাসগ্রন্থ ও আধুনিক প্রত্নতত্ত্ববিদরা যা আবিষ্কার করেছেন তার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। বরং এসব থেকে তার সম্পর্কে নতুন কিছু জানা যাচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রায়হান সুলতান।
যোগাযোগঃ ৭২/৭-৮ মানিকনগর, মুগদা,ঢাকা-১২০৩
মোবাইলঃ +৮৮০৯৬৩৮০৮৯০১৪
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র. All rights reserved.