ঢাকা ০৫:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দক্ষিণ রাউজানে মহানবমী পূজা উদযাপন ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে ১৯টি পূজা মন্ডপে অনুদানের চেক বিতরণ বিজয়া দশমী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম পশ্চিম গুজরায় জ্বালা কুমারী তরুণ সংঘে উগ্যােগে দুর্গোৎসব উদযাপন না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক গাজীপুরে হাইওয়ে রোডে দেহ ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি, এলাকাবাসীর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি ঝিনাইদহে বাসচাপায় শিশুসহ ২ জন নিহত রাণীশংকৈলে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব দুমকীতে পূজা মন্ডপে এনসিপির শুভেচ্ছা বিনিময় বিদায়ের সুরে শ্যামনগরের পূজা মণ্ডপগুলো

কৃষিজমি ধ্বংস করে চলছে ঘের দখল: কোচ বিলে ফসলি জমি রক্ষায় চাষিদের মানববন্ধন

নিজেস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৫:১০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫ ১১৯ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার,মনিরামপুর:যশোরের মনিরামপুর উপজেলার জয়পুর কোচ বিলে কৃষিজমি রক্ষায় এবং সুষ্ঠু পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী চাষিরা।
বুধবার সকাল ১১টায় কোচ বিল সংলগ্ন এলাকায় এই মানববন্ধনে শতাধিক কৃষক অংশ নেন।

চাষিদের অভিযোগ, একসময় এই কোচ বিল ছিল তিন ফসলি জমি—যেখানে বছরের তিন মৌসুমেই ধানসহ নানা ফসল উৎপাদন করা হতো। কিন্তু বর্তমানে কিছু প্রভাবশালী ও লোভী ঘের মালিকের কারণে সেই উৎপাদন আজ হুমকির মুখে।

কৃষকরা বলেন, এলাকার সহজ-সরল চাষিদের মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে ১০ থেকে ২০ বছরের চুক্তিনামা করিয়ে নিচ্ছে কিছু অসাধু ঘের ব্যবসায়ী। পরে সেই জমিগুলোতে মাছ চাষের জন্য ঘের খনন করে, যা সম্পূর্ণ কৃষি আইন পরিপন্থী। ঘের তৈরির ফলে চারপাশের আবাদি জমিতে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে—আষাঢ় ও শ্রাবণে—বৃষ্টির পানি জমে থেকে যায়, ফলে সেই জমিতে আর ধান চাষ করা সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে চাষিদের অতিরিক্ত খরচ করে সেচ পাম্প ভাড়া করে পানি নিষ্কাশন করতে হয়। এতে করে একদিকে যেমন সময় নষ্ট হয়, অন্যদিকে খরচ বেড়ে যায় বহুগুণ।

চাষিরা বলেন, অনেক সময় একমাত্র ফসলটুকুও ঘরে তুলতে পারি না। পরিবার চালানো, সন্তানদের পড়াশোনা, ঋণ শোধ—সবকিছুতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অথচ এই জমিগুলো আমাদের পূর্বপুরুষের হালচাষ করা ফসলি জমি। আজ সেই জমিতে দখলের রাজত্ব কায়েম করেছে কিছু লোভী ঘের মালিক।

সম্প্রতি কোচ বিলে নতুন করে একটি ঘের খননের চেষ্টার খবর পেয়ে চাষিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্নার কাছে অভিযোগ জানান। ইউএনও ঘটনাস্থলে এসে সরেজমিনে পরিদর্শন করে আপাতত ঘের খননের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।

কৃষকরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন—অবৈধ ঘের অপসারণ করে কৃষিজমির স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে যারা জোর করে কৃষিজমি দখল করে ঘের বানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

চাষিরা বলেন, আমরা আর ঘের চাই না, চাই আমাদের ফসলি জমি ফেরত। চাই বাঁচার অধিকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

কৃষিজমি ধ্বংস করে চলছে ঘের দখল: কোচ বিলে ফসলি জমি রক্ষায় চাষিদের মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৫:১০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার,মনিরামপুর:যশোরের মনিরামপুর উপজেলার জয়পুর কোচ বিলে কৃষিজমি রক্ষায় এবং সুষ্ঠু পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী চাষিরা।
বুধবার সকাল ১১টায় কোচ বিল সংলগ্ন এলাকায় এই মানববন্ধনে শতাধিক কৃষক অংশ নেন।

চাষিদের অভিযোগ, একসময় এই কোচ বিল ছিল তিন ফসলি জমি—যেখানে বছরের তিন মৌসুমেই ধানসহ নানা ফসল উৎপাদন করা হতো। কিন্তু বর্তমানে কিছু প্রভাবশালী ও লোভী ঘের মালিকের কারণে সেই উৎপাদন আজ হুমকির মুখে।

কৃষকরা বলেন, এলাকার সহজ-সরল চাষিদের মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে ১০ থেকে ২০ বছরের চুক্তিনামা করিয়ে নিচ্ছে কিছু অসাধু ঘের ব্যবসায়ী। পরে সেই জমিগুলোতে মাছ চাষের জন্য ঘের খনন করে, যা সম্পূর্ণ কৃষি আইন পরিপন্থী। ঘের তৈরির ফলে চারপাশের আবাদি জমিতে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে—আষাঢ় ও শ্রাবণে—বৃষ্টির পানি জমে থেকে যায়, ফলে সেই জমিতে আর ধান চাষ করা সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে চাষিদের অতিরিক্ত খরচ করে সেচ পাম্প ভাড়া করে পানি নিষ্কাশন করতে হয়। এতে করে একদিকে যেমন সময় নষ্ট হয়, অন্যদিকে খরচ বেড়ে যায় বহুগুণ।

চাষিরা বলেন, অনেক সময় একমাত্র ফসলটুকুও ঘরে তুলতে পারি না। পরিবার চালানো, সন্তানদের পড়াশোনা, ঋণ শোধ—সবকিছুতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অথচ এই জমিগুলো আমাদের পূর্বপুরুষের হালচাষ করা ফসলি জমি। আজ সেই জমিতে দখলের রাজত্ব কায়েম করেছে কিছু লোভী ঘের মালিক।

সম্প্রতি কোচ বিলে নতুন করে একটি ঘের খননের চেষ্টার খবর পেয়ে চাষিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্নার কাছে অভিযোগ জানান। ইউএনও ঘটনাস্থলে এসে সরেজমিনে পরিদর্শন করে আপাতত ঘের খননের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।

কৃষকরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন—অবৈধ ঘের অপসারণ করে কৃষিজমির স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে যারা জোর করে কৃষিজমি দখল করে ঘের বানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

চাষিরা বলেন, আমরা আর ঘের চাই না, চাই আমাদের ফসলি জমি ফেরত। চাই বাঁচার অধিকার।