ঢাকা ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে ঘুষ বাণিজ্য: কালিগঞ্জ থানার কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বিকাশ নাম্বারে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ রাণীশংকৈলে বিএনপি ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত বকশীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সাবেক নৌ সদস্যের মৃত্যু বকশীগঞ্জ নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ জহুরুল হোসেন শ্যামনগরে জেলা প্রশাসকের নানাবিধ উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন চুয়াডাঙ্গায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের দুই প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে পুলিশের মাসিক পরিদর্শন সোনাগাজীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা বেপরোয়া চেয়ারম্যান পরিবহন, আতঙ্কে দুমকীবাসী তৌফিকুর রহমানের প্রতিবেদন “সাদাকে সাদা কালোকে–“

উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের শিক্ষক জাকির হোসেন, ব্যবহারিকের জন্য নেন অতিরিক্ত টাকা ও ক্লাসে বসেই পড়ান প্রাইভেট।

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ৮৯ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:- সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সরকারি
আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তিনি ক্লাসের সময় শ্রেণিকক্ষে বসে নিয়মিত প্রাইভেট পড়িয়ে যাচ্ছেন । এ ছাড়াও সম্প্রতি ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর দেওয়ার কথা বলে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৪ মার্চ) সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে এর প্রমাণও পাওয়া গেছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৪ তম বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডার জাকির হোসেন ২০০৫ সালের জুলাই মাসে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৯ বছর একই কর্মস্থলে থাকায় তিনি কলেজ ঘিরে তৈরি করেছেন নিজস্ব বলয়, বাগিয়ে নিয়েছেন কলেজ শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদদের পদটিও। সেই বলয় ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেই কলেজে ক্লাস চলাকালীন সময়ে তিনি প্রাইভেট পড়ান এবং নানাভাবে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে পড়তে বাধ্য করেন।

জানা গেছে, ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয়ে বাধ্যমূলক তার কাছে প্রাইভেট পড়েন শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই হয়ে আসছে বলে জানান অনেকেই। শিক্ষার্থীরা আগেও কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সমাধান মেলেনি। উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ রানা পাপ্পু,সাবিনা, কুলসুম মারুফ সিদ্দিক, সাজ্জাদ হোসেন খান, মো. রাব্বি, অনন্ত রানাসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, জাকির হোসেন এখনো অর্নাস ১ম বর্ষের ক্লাসের সময় শ্রেণিকক্ষে বসে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন এবং তার জন্য টাকাও নিচ্ছেন। এ ছাড়াও, তিনি অর্নাস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষার মার্ক দেওয়ায় কথা বলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০-৮০০ টাকা করে নিয়েছেন। যা নিয়ম বহির্ভূত ও অবৈধ। অভিযোগে শিক্ষার্থীরা আরও উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের

জানা মতে, সরকারি পরিপত্রে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ১৫০ টাকার বেশি নেওয়ার নিয়ম নেই। অথচ তিনি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ব্যবহার পরীক্ষার নামে ৫০০- ৮০০ করে টাকা নিচ্ছেন। আর এই টাকা না দিলে আমাদের ফেল করানোর ভয় দেখান। বিষয়গুলো আমরা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছি।’ এ বিষয়ে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক মঞ্জুর মোর্শেদ ভুইয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা একটি লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী বরাবর দাখিল করেছে। তারা সোমবার আমার কাছেও একটি অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমি সেটি গ্রহণ না করে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ সিনিয়র শিক্ষকদের বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছি। সে মোতাবেক তারা অভিযোগকারী শিক্ষার্থীসহ অভিযুক্ত শিক্ষককে নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করছেন।’ এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিবার কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে বিষয়টি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, ‘অভিযোগের কপিটি হাতে পেয়েছি।

বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের শিক্ষক জাকির হোসেন, ব্যবহারিকের জন্য নেন অতিরিক্ত টাকা ও ক্লাসে বসেই পড়ান প্রাইভেট।

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:- সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সরকারি
আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তিনি ক্লাসের সময় শ্রেণিকক্ষে বসে নিয়মিত প্রাইভেট পড়িয়ে যাচ্ছেন । এ ছাড়াও সম্প্রতি ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর দেওয়ার কথা বলে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৪ মার্চ) সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে এর প্রমাণও পাওয়া গেছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৪ তম বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডার জাকির হোসেন ২০০৫ সালের জুলাই মাসে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৯ বছর একই কর্মস্থলে থাকায় তিনি কলেজ ঘিরে তৈরি করেছেন নিজস্ব বলয়, বাগিয়ে নিয়েছেন কলেজ শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদদের পদটিও। সেই বলয় ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেই কলেজে ক্লাস চলাকালীন সময়ে তিনি প্রাইভেট পড়ান এবং নানাভাবে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে পড়তে বাধ্য করেন।

জানা গেছে, ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয়ে বাধ্যমূলক তার কাছে প্রাইভেট পড়েন শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই হয়ে আসছে বলে জানান অনেকেই। শিক্ষার্থীরা আগেও কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সমাধান মেলেনি। উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ রানা পাপ্পু,সাবিনা, কুলসুম মারুফ সিদ্দিক, সাজ্জাদ হোসেন খান, মো. রাব্বি, অনন্ত রানাসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, জাকির হোসেন এখনো অর্নাস ১ম বর্ষের ক্লাসের সময় শ্রেণিকক্ষে বসে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন এবং তার জন্য টাকাও নিচ্ছেন। এ ছাড়াও, তিনি অর্নাস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষার মার্ক দেওয়ায় কথা বলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০-৮০০ টাকা করে নিয়েছেন। যা নিয়ম বহির্ভূত ও অবৈধ। অভিযোগে শিক্ষার্থীরা আরও উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের

জানা মতে, সরকারি পরিপত্রে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ১৫০ টাকার বেশি নেওয়ার নিয়ম নেই। অথচ তিনি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ব্যবহার পরীক্ষার নামে ৫০০- ৮০০ করে টাকা নিচ্ছেন। আর এই টাকা না দিলে আমাদের ফেল করানোর ভয় দেখান। বিষয়গুলো আমরা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছি।’ এ বিষয়ে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক মঞ্জুর মোর্শেদ ভুইয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা একটি লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী বরাবর দাখিল করেছে। তারা সোমবার আমার কাছেও একটি অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমি সেটি গ্রহণ না করে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ সিনিয়র শিক্ষকদের বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছি। সে মোতাবেক তারা অভিযোগকারী শিক্ষার্থীসহ অভিযুক্ত শিক্ষককে নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করছেন।’ এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিবার কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে বিষয়টি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, ‘অভিযোগের কপিটি হাতে পেয়েছি।

বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’