ঢাকা ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যশোরে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নারীর আঙুল কামড়ে ছিঁড়ে ফেললেন যুবক, অবশেষে ধরা রাজাপুরে এনসিপির উঠান বৈঠক মঠবাড়ীয়া উপজেলার বিএনপিতে ফ্যাসিষ্ট দোসরদের পদ পদবী পাওয়ার কারনে ঝুকি পূর্ন সুন্দরবনে নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ লা সেপ্টেম্বর খুলছে প্রবেশের দ্বার রাণীশংকৈলে আদালতে মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সন্তানের লাশ কবর থেকে উত্তোলন বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জনাব তারেক রহমান ঠাকুরগায়ে গন অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার দীর্ঘ ২৩ বছর পরে আজিজ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল কমপ্লিট শাটডাউনে পবিপ্রবি বরিশাল ক্যাম্পাস একটি সুন্দর পরিবেশ বান্ধব উন্নত ও সমৃদ্ধ রূপগঞ্জ গড়ার লক্ষ্যে, জনাব মোঃ দুলাল হোসেনের অঙ্গীকার

‘আমি রেমিট্যান্স যোদ্ধা, আমাকে ছেলের লাশ উপহার দিয়েছে এই দেশ’

নিজেস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৪:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪ ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া:-
মায়ের স্নেহ, স্ত্রীর ভালোবাসায় আর প্রবাসী বাবার আদর। এমন সুখী পরিবারের মধ্যমণি হয়ে থাকতেন আব্দুর রহমান জিসান। এখন শুধু অক্ষত আছে এই ছবিগুলো। নির্বিচার গুলির মচ্ছবে তছনছ হয়ে পরিবারটি।

পঞ্চম শ্রেণি পাশ করা জিসান কাজ করতেন পানি সরবরাহের। কোটা আন্দোলন ঘিরে গত ২০ জুলাই শনিবার বিকেলে রাজধানীর রায়েরবাগে গোলাগুলির সময় ২ নম্বর গলিতে বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎই একটি গুলি তার চোখ ভেদ করে বেরিয়ে যায় মাথার পেছন দিয়ে। জিসানের এমন মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে ৯ দিনের মাথায় আত্মহত্যা করেন তার স্ত্রী মিষ্টি বেগম। যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মাত্র ১৪ মাস আগে।

একমাত্র পুত্র সন্তানের মৃত্যুর খবরের একদিন পর দেশে ছুটে এসেছিলেন জিসানের দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী বাবা বাবুল সরদার। সেই শোক না কাটাতেই পুত্রবধূর আত্মহত্যা। এমন অবস্থায় দিশেহারা তিনি। ছেলের মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ যেয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে। আমার ছেলেটা দোকানের সামনে তখন দাঁড়িয়ে ছিল। তার কপালে গুলি লেগে মাথার পিছে দিয়ে বের হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেটার উপর আমার অনেক ভরসা ছিল। বিদেশ নেয়ার জন্যে অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু সে যায়নি। আমাকে গুলি করে মেরে ফেলতো আমার কষ্ট হতো না। আমার ছেলেটা তখন আমার সংসারের হাল ধরতে পারতো। এখন আমার কিছু হলে সংসারের কি হবে।

বাবুল সরদারের ছেলের দাফন হয়েছে মাতুয়াইল কবরস্থানে। আর পুত্রবধূ শায়িত হয়েছেন গ্রামের বাড়ি রংপুরের পাগলাপীরে। এই কয়দিনে অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিনি।

পুত্রবধূ সম্পর্কে বলেন, দুপুর বারোটার দিকে দরজা লাগিয়ে ফ্যানের সাথে রশি ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করে মিষ্টি। দু-দুটা পরিবার ধ্বংস হয়ে গেলো। আমি আজ সাড়ে আট বছর ধরে বাইরে থাকি আমার ছেলে-মেয়েকে মানুষ করার জন্যে। আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা, কিন্তু আজ আমাকে আমার ছেলের লাশ উপহার দিয়েছে এই দেশ।

কার বিরুদ্ধে মামলা করবেন, কার কাছে বিচার চাইবেন, সেসব কিছুই মাথায় ধরছে না বাবুল সরদারের। সামনের দিনে স্ত্রী ও কন্যা সন্তান নিয়ে দেখছে অমানিশার অন্ধকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

‘আমি রেমিট্যান্স যোদ্ধা, আমাকে ছেলের লাশ উপহার দিয়েছে এই দেশ’

আপডেট সময় : ০৬:৪৪:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া:-
মায়ের স্নেহ, স্ত্রীর ভালোবাসায় আর প্রবাসী বাবার আদর। এমন সুখী পরিবারের মধ্যমণি হয়ে থাকতেন আব্দুর রহমান জিসান। এখন শুধু অক্ষত আছে এই ছবিগুলো। নির্বিচার গুলির মচ্ছবে তছনছ হয়ে পরিবারটি।

পঞ্চম শ্রেণি পাশ করা জিসান কাজ করতেন পানি সরবরাহের। কোটা আন্দোলন ঘিরে গত ২০ জুলাই শনিবার বিকেলে রাজধানীর রায়েরবাগে গোলাগুলির সময় ২ নম্বর গলিতে বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎই একটি গুলি তার চোখ ভেদ করে বেরিয়ে যায় মাথার পেছন দিয়ে। জিসানের এমন মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে ৯ দিনের মাথায় আত্মহত্যা করেন তার স্ত্রী মিষ্টি বেগম। যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মাত্র ১৪ মাস আগে।

একমাত্র পুত্র সন্তানের মৃত্যুর খবরের একদিন পর দেশে ছুটে এসেছিলেন জিসানের দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী বাবা বাবুল সরদার। সেই শোক না কাটাতেই পুত্রবধূর আত্মহত্যা। এমন অবস্থায় দিশেহারা তিনি। ছেলের মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ যেয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে। আমার ছেলেটা দোকানের সামনে তখন দাঁড়িয়ে ছিল। তার কপালে গুলি লেগে মাথার পিছে দিয়ে বের হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেটার উপর আমার অনেক ভরসা ছিল। বিদেশ নেয়ার জন্যে অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু সে যায়নি। আমাকে গুলি করে মেরে ফেলতো আমার কষ্ট হতো না। আমার ছেলেটা তখন আমার সংসারের হাল ধরতে পারতো। এখন আমার কিছু হলে সংসারের কি হবে।

বাবুল সরদারের ছেলের দাফন হয়েছে মাতুয়াইল কবরস্থানে। আর পুত্রবধূ শায়িত হয়েছেন গ্রামের বাড়ি রংপুরের পাগলাপীরে। এই কয়দিনে অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিনি।

পুত্রবধূ সম্পর্কে বলেন, দুপুর বারোটার দিকে দরজা লাগিয়ে ফ্যানের সাথে রশি ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করে মিষ্টি। দু-দুটা পরিবার ধ্বংস হয়ে গেলো। আমি আজ সাড়ে আট বছর ধরে বাইরে থাকি আমার ছেলে-মেয়েকে মানুষ করার জন্যে। আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা, কিন্তু আজ আমাকে আমার ছেলের লাশ উপহার দিয়েছে এই দেশ।

কার বিরুদ্ধে মামলা করবেন, কার কাছে বিচার চাইবেন, সেসব কিছুই মাথায় ধরছে না বাবুল সরদারের। সামনের দিনে স্ত্রী ও কন্যা সন্তান নিয়ে দেখছে অমানিশার অন্ধকার।