আগৈলঝাড়ায় শ্বশুরকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুমের হত্যাকারী জামাই গ্রেপ্তার

- আপডেট সময় : ০৭:০২:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫ ৪৭ বার পড়া হয়েছে

মো: আশরাফ,ক্রাইম রিপোর্টার বরিশাল:বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শ্বশুরকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করেছে জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈ। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিউটি হালদার বাদী হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়েরের পর হত্যাকারী জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈকে গ্রেপ্তার করে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আগৈলঝাড়া থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামনন্দের আঁখ গ্রামের মৃত মনিমোহন হালদারের ছেলে অখিল হালদার মন্টু স্থানীয় বাজার থেকে দুধ ক্রয় করে প্রতিদিনের ন্যায় ২০ আগষ্ট দুপুরে দুধ বিক্রি করতে গৈলা বাজারে যান।একইদিন বিকেলে দুধ বিক্রি করে বাড়ি যাওয়ার পথে রাজিহার বাজারের ওয়াপদা সড়কে আসলে শ্বশুর মন্টুকে অপহরন করে নিয়ে যায় জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈ। সে বাড়িতে ফিরে না আসায় পরের দিন ২১ আগষ্ট নিহতের স্ত্রী আগৈলঝাড়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন।শ্বশুর অখিল হালদার মন্টুকে অপহরণ করে বাশাইল বাটরা সড়কের আহুতি বাটরা নির্জন স্থানে নিয়ে গলা টিপে হত্যা করে তার লাশ খালে কচুরিপানার নিচে গুম করে জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈ। শ্বশুরের ভ্যান ও ৫টি দুধের কলস নিয়ে জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈ মাদারীপুর সদরে গিয়ে বিক্রি করে দেন। ওই পরিবার থেকে জামাইকে ওই দিন রাতে শ্বশুর বাড়িতে আসতে বলেন। সে ওই বাড়িতে পরের দিন আসে।এসময় তার কথাবার্তায় অসংলগ্ন হলে শ্বশুর পরিবার ও স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অধিকতর তদন্ত শুরু করেন। এসময় তারা মন্টু নিখোজের পূর্বে তার ফোন ও মেয়ে জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈর ফোনের লোকেশন একই স্থানে দেখতে পায় এবং ডাসার থানার পাথুরিয়ারপাড় একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে নিহত অখিল হালদারের দুধের কলসসহ ভ্যান চালিয়ে মাদারীপুরের দিকে যেতে দেখেন জামাইকে। পরে জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈকে নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে নিজেই একা হত্যার কথা স্বীকার করেন।সে গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বাকাই গ্রামের কানাই বাড়ৈর ছেলে। তার স্বীকারক্তিমতে ২২ আগষ্ট রাতেই জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈকে নিয়ে উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের আহুতি বাটরা গ্রামের সড়কের পাশে খালের কচুরিপানার নিচ থেকে শ্বশুর মন্টুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এসময় পুলিশ মাদারীপুর থেকে জামাইর বিক্রি করা ভ্যান উদ্ধার করে।এঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিউটি হালদার বাদী হয়ে ২৩ আগস্ট সকালে আগৈলঝাড়া থানায় অপহরণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। রোজ শনিবার সকালে গ্রেপ্তারকৃত জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈকে বরিশাল আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে ও লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী বিউটি হালদার বলেন, আমার স্বামীর অমতে প্রায় দুই বছর পূর্বে মেয়ে আঁখী হালদার কৃষ্ণ বাড়ৈকে বিয়ে করায় প্রথম থেকেই অশান্তি শুরু হয়। বিভিন্ন কারনে জামাই আমাদের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল।এব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম বলেন, সাধারণ ডায়েরীর সূত্র ধরে জামাইকে সন্দেহ হয়। তাকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জামাই কৃষ্ণ বাড়ৈ হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে নিয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।