ঢাকা ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মানিকছড়ি উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মদিন পালন গোমদন্ডী দরবারে জিকরে মোস্তফা সম্মেলন সোমবার জামালপুর মাদারগঞ্জে তারতাপাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী গৌ- মইদৌড় খেলা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা আশুলিয়ায় হিজড়া সম্প্রদায়ের মানববন্ধন, বাৎসরিক ওরশ শরীফে বাঁধা ও চাঁদার দাবি বিবেকানন্দ ষ্টাডি এন্ড ফিলানফ্রপিক সেন্টার অব নিউইয়র্ক উদ্যোগ কম্বল বিতরণ যশোরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন উদযাপন নীলফামারীতে আন্তঃজেলা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকীতে বাকৃবিতে নিম গাছ রোপণ সাতক্ষীরার বিভিন্ন সীমান্ত জব্দ হওয়া বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য ধ্বংস ঢাকা সাভারে পুলিশের অভিযানে সোয়া ২ টন নিষিদ্ধ পলিথিন উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরিতে ৯ জন শিক্ষক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪ ১০২ বার পড়া হয়েছে

১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরিতে ৯ জন শিক্ষক

নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের কাছারী লক্ষীচাপ ডি.ডি এস দাখিল মাদরাসা সর্বমোট তিন শতাধিক শিক্ষার্থী থাকার দাবি করা হলেও সরেজমিনে পাওয়া গেছে মাত্র ১০ জন। এর বিপরীতে স্কুলে আছেন ৯ জন শিক্ষক। যদিও উপস্থিত পাওয়া গেছে ৭ জন শিক্ষককে।

মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ১৯৭৩ সালে এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী নিজস্ব জমি ও অর্থায়নে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৮০ সালে ১১ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়ে মাদরাসটি এমপিওভুক্ত হয়। এরপর একজন শিক্ষক অবসরে যান। বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী রয়েছেন।

বুধবার (৬মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম শ্রেনী থেকে ৫ শ্রেনী পযর্ন্ত ছাত্র/ছাত্রী না থাকলেও প্রধান শিক্ষক বই তুলছেন প্রায় ১০০জনের । বই তুলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন ১০জন শিক্ষার্থী । অনেক শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহৃত না হওয়ায় ধুলাবালির আস্তরণ পড়ে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরাও কর্মচারীদের নিয়ে স্কুলমাঠে বসে খোশগল্পে মেতেছেন।

তবে শিক্ষার্থী না থাকলেও হাজিরা খাতায় সন্তোষজনক উপস্থিতি লিখে রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ে আড্ডায় বসে সময় কাটান শিক্ষকরা

মাদরাসার পাশেই কুদ্দুস মিয়া বাড়ি। চোখের সামনে প্রতিষ্ঠানটির এমন অবস্থা দেখে তিনি বলেন, স্কুলের শিক্ষকরা প্রতিদিন স্কুলে আসেন আর চেয়ার নিয়ে মাঠে বসে পেপার পড়ে ও গল্প করে সময় পার করেন। মাঝে মধ্যে দুই চারজন শিক্ষার্থী স্কুলে এলেও তাদের ঠিকমতো ক্লাস নেওয়া হয় না। শিক্ষার্থীরা দুই একটা ক্লাস করে সময় কাটিয়ে বাড়ি চলে যায়।

এলাকার সাকিব হাসান, ফরিদ, মশিউরসহ আরও অনেকে বলেন, মাদরাসাটি আগে ভালো চলতো, বর্তমান সুপারের কারনে মাদারাসাটি অবস্থা খারাপ। শিক্ষকরা মাদরাসায় এসে দু‌’একটি ক্লাস করে সাড়াদিন বসে থাকে। দুপুর ১টা বাজলে মাদরাসা ছুটি দিয়ে বাড়ী চলে যায়। অথচ এ বিষয়ে কখনো কোনো শিক্ষকের মাঝে উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়নি। মূলত প্রধান শিক্ষকের অবহেলার কারণেই আজ মাদরাসাটি ধ্বংসের পথে।

মাদরাসার পাশের লাকু আহম্মেদ বলেন। শিক্ষকদের অবহেলায় আজ মাদরাসাটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমি মাদরাসাটির প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকেই দায়ী করবো। এছাড়া মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারীরা কীভাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করে, সেটা কি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেখেন না?

মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না । কেউ কখনোই আমাকে এ বিষয়ে অবগত করেননি। বিষয়টি আমি জানলাম এবং দেখবো।

এ বিষয়ে লক্ষীচাপ ডি.ডি এস দাখিল মাদরাসা প্রধান শিক্ষক মো মাহমুদুল হাসান বলেন, বর্তমান দাখিল পরীক্ষা চলার কারনে ছাত্র/ছাত্রী আসছে কম। বই বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বই মাদরাসা আছে দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেনি। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম। এটি উন্নত করার চেষ্টা চলছে।

নীলফামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো আইবুল ইসলাম বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের এমন বেহাল দশা, এটি আমার জানা নেই। ইতিমধ্যে ইউএনও স্যার জানিয়েছেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে নীলফামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি আমি শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখবো এবং সত্যিকার অর্থেই যদি এমন হয় তাহলে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ###

আব্দুর রউফ, নীলফামারী
মোবাইল ০১৭০০৬৪৪৯০৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরিতে ৯ জন শিক্ষক

আপডেট সময় : ১১:৫৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪

১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরিতে ৯ জন শিক্ষক

নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের কাছারী লক্ষীচাপ ডি.ডি এস দাখিল মাদরাসা সর্বমোট তিন শতাধিক শিক্ষার্থী থাকার দাবি করা হলেও সরেজমিনে পাওয়া গেছে মাত্র ১০ জন। এর বিপরীতে স্কুলে আছেন ৯ জন শিক্ষক। যদিও উপস্থিত পাওয়া গেছে ৭ জন শিক্ষককে।

মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ১৯৭৩ সালে এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী নিজস্ব জমি ও অর্থায়নে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৮০ সালে ১১ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়ে মাদরাসটি এমপিওভুক্ত হয়। এরপর একজন শিক্ষক অবসরে যান। বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী রয়েছেন।

বুধবার (৬মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম শ্রেনী থেকে ৫ শ্রেনী পযর্ন্ত ছাত্র/ছাত্রী না থাকলেও প্রধান শিক্ষক বই তুলছেন প্রায় ১০০জনের । বই তুলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন ১০জন শিক্ষার্থী । অনেক শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহৃত না হওয়ায় ধুলাবালির আস্তরণ পড়ে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরাও কর্মচারীদের নিয়ে স্কুলমাঠে বসে খোশগল্পে মেতেছেন।

তবে শিক্ষার্থী না থাকলেও হাজিরা খাতায় সন্তোষজনক উপস্থিতি লিখে রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ে আড্ডায় বসে সময় কাটান শিক্ষকরা

মাদরাসার পাশেই কুদ্দুস মিয়া বাড়ি। চোখের সামনে প্রতিষ্ঠানটির এমন অবস্থা দেখে তিনি বলেন, স্কুলের শিক্ষকরা প্রতিদিন স্কুলে আসেন আর চেয়ার নিয়ে মাঠে বসে পেপার পড়ে ও গল্প করে সময় পার করেন। মাঝে মধ্যে দুই চারজন শিক্ষার্থী স্কুলে এলেও তাদের ঠিকমতো ক্লাস নেওয়া হয় না। শিক্ষার্থীরা দুই একটা ক্লাস করে সময় কাটিয়ে বাড়ি চলে যায়।

এলাকার সাকিব হাসান, ফরিদ, মশিউরসহ আরও অনেকে বলেন, মাদরাসাটি আগে ভালো চলতো, বর্তমান সুপারের কারনে মাদারাসাটি অবস্থা খারাপ। শিক্ষকরা মাদরাসায় এসে দু‌’একটি ক্লাস করে সাড়াদিন বসে থাকে। দুপুর ১টা বাজলে মাদরাসা ছুটি দিয়ে বাড়ী চলে যায়। অথচ এ বিষয়ে কখনো কোনো শিক্ষকের মাঝে উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়নি। মূলত প্রধান শিক্ষকের অবহেলার কারণেই আজ মাদরাসাটি ধ্বংসের পথে।

মাদরাসার পাশের লাকু আহম্মেদ বলেন। শিক্ষকদের অবহেলায় আজ মাদরাসাটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমি মাদরাসাটির প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকেই দায়ী করবো। এছাড়া মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারীরা কীভাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করে, সেটা কি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেখেন না?

মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না । কেউ কখনোই আমাকে এ বিষয়ে অবগত করেননি। বিষয়টি আমি জানলাম এবং দেখবো।

এ বিষয়ে লক্ষীচাপ ডি.ডি এস দাখিল মাদরাসা প্রধান শিক্ষক মো মাহমুদুল হাসান বলেন, বর্তমান দাখিল পরীক্ষা চলার কারনে ছাত্র/ছাত্রী আসছে কম। বই বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বই মাদরাসা আছে দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেনি। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম। এটি উন্নত করার চেষ্টা চলছে।

নীলফামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো আইবুল ইসলাম বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের এমন বেহাল দশা, এটি আমার জানা নেই। ইতিমধ্যে ইউএনও স্যার জানিয়েছেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে নীলফামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি আমি শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখবো এবং সত্যিকার অর্থেই যদি এমন হয় তাহলে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ###

আব্দুর রউফ, নীলফামারী
মোবাইল ০১৭০০৬৪৪৯০৪