ঢাকা ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বয়স্ক,বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ মাতুভুঁইয়া ইউনিয়নের মমরিজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০বছর রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠিত হয় রাজাপুরে এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী আহাদ শিকদারের পক্ষে গনসংযোগ ফেনীতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ঝালকাঠতে জেলা জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত ৯দিনের ছুটি শেষে প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত পবিপ্রবি ক্যাম্পাস দেবহাটা বহেরা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট হেলাল উদ্দিন ও সাদিয়া অনৈতিক অবস্থায় জনগণের হাতে আটক স্বামীর লোভের কারনে আত্মহত্যার পথ বেচে নিল চট্টগ্রামের মেয়ে আবিদা তাসমিন আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার আসামি আব্দুল্লাহ সরদার গ্রেপ্তার রাণীশংকৈলে জাল টাকা সহ আটক ১

সরকারি হাসপাতাল থেকে রুগী ভাগানোর তথ্য সংগ্রহ করায় সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫ ১১৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি:-

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রুগী ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার তথ্য সংগ্রহ করায় সাংবাদিক কে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ডাক্তারের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের ট্রমা সেন্টারে ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ডাক্তার মোঃ হাফিজুল্লাহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অর্থপেডিক সার্জারীর কনসালটেন্ট এবং সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারের পরিচালক।

হামলা শিকার সাংবাদিক মনির ইসলাম মনি, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং টিভি চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোর’র সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক গাজী ফরহাদ।

প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুর রহমান কলেজের প্রভাষক আমিনুর রহমান বলেন, হঠাৎ করেই দেখলাম ডাক্তার মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ তার স্টাফদের বলছে ট্রমা সেন্টারের সামনের গেট আটকে দিতে । এরপরেই ডাক্তারের নির্দেশে তার স্টাফরা ফিল্মি স্টাইলে সাংবাদিক মনির উপর হামলা করে। তথ্য সংগ্রহ করায় ডাক্তারের নেতৃত্বে এমন মারপিট মেনে নেওয়া যায় না।

হামলার শিকার সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, তারাবির নামাজ শেষে সাংবাদিক সংকর্মীদের সাথে ট্রমা সেন্টারে একটি রোগীকে দেখতে যাই। রোগী দেখে বাইরে বের হয়ে দেখি এক বৃদ্ধ মহিলা ভ্যানের উপরে শুয়ে কাতরাচ্ছে। এ সময় আমি তাদের কাছে জানতে চাইলাম কি হয়েছে? রোগীর সজনরা জানায় তারা বৃহস্পতিবার থেকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল, কিন্তু তিন দিনেও ট্রিটমেন্ট না পেয়ে হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে ট্রমা সেন্টার এসছেন তারা।

তিনি বলেন, তারা আমার কাছে সহযোগিতা চেয়ে তারা আকুতি মিনতি করে। এক পর্যায়ে আমি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক সার্জারীর বিভাগের প্রধান ডাক্তার প্রবীর কুমারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলি। এসময় রোগীর চিকিৎসা না পাওয়া সহ হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে রোগী বাইরে পাঠানোর বিষয়টি তাকে অবগত করি। প্রবীর কুমার আমাকে বলেন এর আগেও ডাক্তার হাফিজুল্লাহর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আশায় তাকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি ভুক্তভোগী রোগীদের পুনরায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন এবং রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলেন। এ সময় হঠাৎ হাফিজুল্লাহসহ ও তার ক্লিনিকের লোকজন আমার উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। উপস্থিত দৈনিক কাল বেলার সাংবাদিক গাজী ফরহাদসহ অন্যান্য সাংবাদিক সহকর্মীরা ঠেকাতে গেলে তাদের উপরেও চড়া হয় এবং তাদের উপর হামলা করে।

ভুক্তভোগী সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর এলাকার জুলেখা বেগমের ছেলে ইশার আলী গাজী জানান, আমার আম্মা কয়েক দিন ধরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তবে কয়েকদিন ধরে কোন প্রকার চিকিৎসা পাচ্ছিল না। আজ হাসপাতালে লোকজন আমাদেরকে বলে চিকিৎসা পেতে হলে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যেতে। তাই আমরা আমার বাবার ভ্যানে করে আমার মাকে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাই।

তিনি বলেন, ট্রমা সেন্টারের সামনে আসার পরে আমার মায়ের কান্নাকাটি দেখে সাংবাদিক ভাই এগিয়ে আসে। আমরা সব ঘটনা খুলে বললে তিনি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বড় ডাক্তারের কাছে কল দেয়। বড় ডাক্তার তার মোবাইল থেকে আমাদের সাথে কথা বলে পুনরায় মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলে। আমরা সেজন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ট্রমা সেন্টারের ডাক্তার ও তার লোকজন সাংবাদিক ভাইয়ের উপর আক্রমণ করে। তারা ট্রমা সেন্টারের সামনের গেট বন্ধ করে সাংবাদিক ভাইকে বেধড়ক মারপিট করে।

রোগীর আরেক স্বজন কাজল বেগম বলেন, আমরা সব ঘটনা বলে সাংবাদিক ভাইয়ের সাহায্য চাই। কিন্তু ট্রমা সেন্টারের ডাক্তার সহ তাদের লোকজন সাংবাদিক ভাই আমাদের সহযোগিতা করায় তাকে ব্যাপক মারপিট করেছে। মারপিট দেখে আমি ও আমার খালা ঠেকাতে গেলে তারা আমাদের উপরও মারপিট করে। এ সময় অন্যান্য সাংবাদিকরা ঠেকাতে গেলে তাদেরকেও মারপিট করে আহত করে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ।

সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শামিনুল হক বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ছবি: অভিযুক্ত ডাক্তার মোঃ হাফিজুল্লাহার নেতৃর্বে সাংবাদিক কে মারপিটের দৃশ্য। ইনসেটে অভিযুক্ত ডাক্তার মোঃ হাফিজুল্লাহ ফটো

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

সরকারি হাসপাতাল থেকে রুগী ভাগানোর তথ্য সংগ্রহ করায় সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা

আপডেট সময় : ০৮:০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিনিধি:-

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রুগী ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার তথ্য সংগ্রহ করায় সাংবাদিক কে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ডাক্তারের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের ট্রমা সেন্টারে ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ডাক্তার মোঃ হাফিজুল্লাহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অর্থপেডিক সার্জারীর কনসালটেন্ট এবং সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারের পরিচালক।

হামলা শিকার সাংবাদিক মনির ইসলাম মনি, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং টিভি চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোর’র সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক গাজী ফরহাদ।

প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুর রহমান কলেজের প্রভাষক আমিনুর রহমান বলেন, হঠাৎ করেই দেখলাম ডাক্তার মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ তার স্টাফদের বলছে ট্রমা সেন্টারের সামনের গেট আটকে দিতে । এরপরেই ডাক্তারের নির্দেশে তার স্টাফরা ফিল্মি স্টাইলে সাংবাদিক মনির উপর হামলা করে। তথ্য সংগ্রহ করায় ডাক্তারের নেতৃত্বে এমন মারপিট মেনে নেওয়া যায় না।

হামলার শিকার সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, তারাবির নামাজ শেষে সাংবাদিক সংকর্মীদের সাথে ট্রমা সেন্টারে একটি রোগীকে দেখতে যাই। রোগী দেখে বাইরে বের হয়ে দেখি এক বৃদ্ধ মহিলা ভ্যানের উপরে শুয়ে কাতরাচ্ছে। এ সময় আমি তাদের কাছে জানতে চাইলাম কি হয়েছে? রোগীর সজনরা জানায় তারা বৃহস্পতিবার থেকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল, কিন্তু তিন দিনেও ট্রিটমেন্ট না পেয়ে হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে ট্রমা সেন্টার এসছেন তারা।

তিনি বলেন, তারা আমার কাছে সহযোগিতা চেয়ে তারা আকুতি মিনতি করে। এক পর্যায়ে আমি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক সার্জারীর বিভাগের প্রধান ডাক্তার প্রবীর কুমারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলি। এসময় রোগীর চিকিৎসা না পাওয়া সহ হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে রোগী বাইরে পাঠানোর বিষয়টি তাকে অবগত করি। প্রবীর কুমার আমাকে বলেন এর আগেও ডাক্তার হাফিজুল্লাহর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আশায় তাকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি ভুক্তভোগী রোগীদের পুনরায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন এবং রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলেন। এ সময় হঠাৎ হাফিজুল্লাহসহ ও তার ক্লিনিকের লোকজন আমার উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। উপস্থিত দৈনিক কাল বেলার সাংবাদিক গাজী ফরহাদসহ অন্যান্য সাংবাদিক সহকর্মীরা ঠেকাতে গেলে তাদের উপরেও চড়া হয় এবং তাদের উপর হামলা করে।

ভুক্তভোগী সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর এলাকার জুলেখা বেগমের ছেলে ইশার আলী গাজী জানান, আমার আম্মা কয়েক দিন ধরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তবে কয়েকদিন ধরে কোন প্রকার চিকিৎসা পাচ্ছিল না। আজ হাসপাতালে লোকজন আমাদেরকে বলে চিকিৎসা পেতে হলে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যেতে। তাই আমরা আমার বাবার ভ্যানে করে আমার মাকে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাই।

তিনি বলেন, ট্রমা সেন্টারের সামনে আসার পরে আমার মায়ের কান্নাকাটি দেখে সাংবাদিক ভাই এগিয়ে আসে। আমরা সব ঘটনা খুলে বললে তিনি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বড় ডাক্তারের কাছে কল দেয়। বড় ডাক্তার তার মোবাইল থেকে আমাদের সাথে কথা বলে পুনরায় মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলে। আমরা সেজন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ট্রমা সেন্টারের ডাক্তার ও তার লোকজন সাংবাদিক ভাইয়ের উপর আক্রমণ করে। তারা ট্রমা সেন্টারের সামনের গেট বন্ধ করে সাংবাদিক ভাইকে বেধড়ক মারপিট করে।

রোগীর আরেক স্বজন কাজল বেগম বলেন, আমরা সব ঘটনা বলে সাংবাদিক ভাইয়ের সাহায্য চাই। কিন্তু ট্রমা সেন্টারের ডাক্তার সহ তাদের লোকজন সাংবাদিক ভাই আমাদের সহযোগিতা করায় তাকে ব্যাপক মারপিট করেছে। মারপিট দেখে আমি ও আমার খালা ঠেকাতে গেলে তারা আমাদের উপরও মারপিট করে। এ সময় অন্যান্য সাংবাদিকরা ঠেকাতে গেলে তাদেরকেও মারপিট করে আহত করে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ।

সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শামিনুল হক বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ছবি: অভিযুক্ত ডাক্তার মোঃ হাফিজুল্লাহার নেতৃর্বে সাংবাদিক কে মারপিটের দৃশ্য। ইনসেটে অভিযুক্ত ডাক্তার মোঃ হাফিজুল্লাহ ফটো