ঢাকা ১১:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নাঙ্গলমোড়া উচ্চ বিদ্যালয়”র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মা দিবস ও অভিভাবক সমাবেশ পটিয়ায় দক্ষিণ জেলা তরুণ দলের পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গা জীবননগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম মোর্তুজা গ্রেপ্তার রাণীশংকৈলে যুবলীগ নেতা বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার জীবননগর সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক ১৪ জন রহমতের আলম হজ্ব কাফেলার হজ্ব প্রশিক্ষণ-২৫ অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ: ইতিহাসের মোড় ঘোরানো এক অধ্যায় শার্শা ১ বাগুড়ি বেলতলা আম বাজার কে কেন্দ্র করে সাংবাদিক আসাদ কে- বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত শ্রী শ্রী মা মগধেশ্বরী জাগ্রত মন্দিরের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসব সম্পন্ন রুপগঞ্জ শাখা মানবাধিকার অফিসের বর্তমান কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক নিযুক্ত – মোঃ রাশেদ মিয়াকে

শতাধিক মামলা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম শহরজুড়ে চুরি-ডাকাতি:নিয়ন্ত্রণে ডাকাত -৩

মোহাম্মদ মাসুদ, নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৪:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৯ বার পড়া হয়েছে

সারা চট্টগ্রাম শহরের তিন ডাকাতের নিয়ন্ত্রণে চলতো চুরি-ডাকাতি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সিএমপির অভিযানে চাঞ্চল্যকর তথ্যফাঁস। তাদের সিন্ডিকেটে একের পর এক নাটকীয় ভীষণ মিশনে নগর জুড়ে করে আসছিল একের পর এক ভয়ংকর ডাকাতি। তিন জনের বিরুেদ্ধ শহরের বিভিন্ন থানায় একশর বেশি মামলা রয়েছে। মূল ‘আস্তানা’ নগরের ডবলমুরিং থানার বারিক বিল্ডিং হলেও গোটা নগরজুড়েই তাদের রয়েছে অনেক ছোট ছোট আস্তানা। অভিজাত এলাকার বাসাবাড়ি এবং বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি হয় তিন ডাকাত মেহেদী, মনির এবং জাহিদের নির্দেশনায়।

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূইয়া।

সিএমপি তথ্যে জানা যায়, সম্প্রতি ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডে ডাকাতি, আগ্রাবাদের ‘ক্যাট’ নামক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি এবং পাঁচলাইশের একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনাতেও জড়িত ছিল এই সিন্ডিকেট। পুলিশ জানিয়েছে, বারিক বিল্ডিং এলাকায় ডাকাতির টাকা ভাগাভাগির খবর পেয়ে অভিযানে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের ছুরিকাঘাত করে তারা। ওই ঘটনার পর থেকেই এই চক্রকে ধরতে নজরদারি বৃদ্ধি করে তারা। ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে গ্রেফতারের পর তারা জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে এই চক্রের আদ্যোপান্ত। চক্রের অন্যতম হোতা আরিফ হোসেন মেহেদীকে ইতোমধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাকিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

ডাকাত দলের অন্যতম মূল হোতা মেহেদীকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে উপ-কমিশনার হোসাই মোহাম্মদ কবির ভূইয়া গণমাধ্যমকে বলনে, বিভিন্ন আবাসিক এলাকা এবং কমার্শিয়াল হাবগুলোতে সম্প্রতি ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সেই অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করা হয়। আজ সকালে বারিক বিল্ডিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরিফ হাসান মেহেদী ওরফে পলাশকে পিস্তলসহ গ্রেফতার করি। তার আস্তানা থেকে আমরা একটি টিপ ছোরা, চায়নিজ কুড়াল, দুটি ছুরি, একটি করে গামছা ও বালিশ এবং চারটি লোহার রড জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও উদ্ধার করা হয় ৫০ রাউন্ড কার্তুজও।

তিনি আরো বলেন, পহেলা এপ্রিল রাত ৩টা থেকে ৪টার দিকে পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা এলাকার একটি বাসা থেক ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৭ লাখ টাকা এবং ৫ হাজার ইউএস ডলার এই সংঘবদ্ধ চক্র নিয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে আমরা এই চক্রকে শনাক্ত করার চেষ্টা করি। একপর্যায়ে দেখা যায়, শ্রাবণ নামে এই চক্রের এক সদস্য প্রাইভেটকারে করে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে চক্রটি রামগড় দিয়ে হাটহাজারী এসে চলে যায় কর্ণফুলী এলাকায়। সেখানে সার্কেল এসপির নেতৃত্বে আমরা টিম পাঠাই।

হাটহাজারীতেও তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় উল্লেখ করে ডিসি বলেন, সেখানে চক্রের অন্যতম হোতা মেহেদী হাসান আরিফের মা ও বাবাকে পাওয়া যায়। এরমধ্যেই তারা আমাদের পরিকল্পনা টের পেয়ে যায়। আরিফের বাবা তাকে হাত দিয়ে ইশারা করে পালানোর জন্য ইশারা দেয়। ওখান থেকে আরিফ, রাজু এবং মেহেদী পালিয়ে যায়। তাদের সহযোগীদের মধ্য থেকে রিয়াদ হোসেন বাচ্চু, জয়নাল আবেদীন, জসিম উদ্দিন, তৌহিদ রাকিব, বাদশা মিয়াকে আমরা গ্রেফতার করেছি।

‘তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতে জানা যায়, তাদের মূলহোতা ডাকাত মেহেদী এবং মনির। তারা চট্টগ্রাম শহরে বড় বড় কমার্শিয়াল হাবে ডাকাতি করে যাচ্ছে। তাদের সাথে আরও আছে পিচ্চি জাহিদ। সিএমপিতেই যার বিরুদ্ধে ৪০ থেকে ৪২টি মামলা আছে’।
চক্রের সদস্যরা জামিনে বের হয়ে দল ভারি করার পরিকল্পনা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতার মেহেদীর বিরুদ্ধে ৫০টিরও বেশি মামলা আছে। মাস দুয়েক আগে বারিক বিল্ডিং মোড়ে অভিযান চালানোর সময় আমাদের দুজন পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে তারা পালিয়ে যায়। সেখান থেকেও আমরা দুজনকে গ্রেফতার করেছিলাম। তারা ডাকাতির টাকা সেখানে বসে ভাগ করছিল। আবার জামিনে বের হয়ে চক্রটি আরও বড় করেছে। এই চক্রের সাথে আরও জড়িত আছে রাতুল, হানিফ, নুরুন্নবি, শ্রাবণ এবং বদর।

‘আজ আমরা আরিফকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইবো। সেইসাথে আরও অন্যান্য যে মামলা আছে, বিশেষ করে ওয়ান ব্যাংকের ডাকাতি, আগ্রাবাদস্থ ক্যাট প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি, পাঁচলাইশে ডাকাতি; এসব লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করবো’।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

শতাধিক মামলা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম শহরজুড়ে চুরি-ডাকাতি:নিয়ন্ত্রণে ডাকাত -৩

আপডেট সময় : ০৭:৩৪:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

সারা চট্টগ্রাম শহরের তিন ডাকাতের নিয়ন্ত্রণে চলতো চুরি-ডাকাতি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সিএমপির অভিযানে চাঞ্চল্যকর তথ্যফাঁস। তাদের সিন্ডিকেটে একের পর এক নাটকীয় ভীষণ মিশনে নগর জুড়ে করে আসছিল একের পর এক ভয়ংকর ডাকাতি। তিন জনের বিরুেদ্ধ শহরের বিভিন্ন থানায় একশর বেশি মামলা রয়েছে। মূল ‘আস্তানা’ নগরের ডবলমুরিং থানার বারিক বিল্ডিং হলেও গোটা নগরজুড়েই তাদের রয়েছে অনেক ছোট ছোট আস্তানা। অভিজাত এলাকার বাসাবাড়ি এবং বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি হয় তিন ডাকাত মেহেদী, মনির এবং জাহিদের নির্দেশনায়।

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূইয়া।

সিএমপি তথ্যে জানা যায়, সম্প্রতি ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডে ডাকাতি, আগ্রাবাদের ‘ক্যাট’ নামক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি এবং পাঁচলাইশের একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনাতেও জড়িত ছিল এই সিন্ডিকেট। পুলিশ জানিয়েছে, বারিক বিল্ডিং এলাকায় ডাকাতির টাকা ভাগাভাগির খবর পেয়ে অভিযানে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের ছুরিকাঘাত করে তারা। ওই ঘটনার পর থেকেই এই চক্রকে ধরতে নজরদারি বৃদ্ধি করে তারা। ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে গ্রেফতারের পর তারা জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে এই চক্রের আদ্যোপান্ত। চক্রের অন্যতম হোতা আরিফ হোসেন মেহেদীকে ইতোমধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাকিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

ডাকাত দলের অন্যতম মূল হোতা মেহেদীকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে উপ-কমিশনার হোসাই মোহাম্মদ কবির ভূইয়া গণমাধ্যমকে বলনে, বিভিন্ন আবাসিক এলাকা এবং কমার্শিয়াল হাবগুলোতে সম্প্রতি ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সেই অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করা হয়। আজ সকালে বারিক বিল্ডিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরিফ হাসান মেহেদী ওরফে পলাশকে পিস্তলসহ গ্রেফতার করি। তার আস্তানা থেকে আমরা একটি টিপ ছোরা, চায়নিজ কুড়াল, দুটি ছুরি, একটি করে গামছা ও বালিশ এবং চারটি লোহার রড জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও উদ্ধার করা হয় ৫০ রাউন্ড কার্তুজও।

তিনি আরো বলেন, পহেলা এপ্রিল রাত ৩টা থেকে ৪টার দিকে পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা এলাকার একটি বাসা থেক ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৭ লাখ টাকা এবং ৫ হাজার ইউএস ডলার এই সংঘবদ্ধ চক্র নিয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে আমরা এই চক্রকে শনাক্ত করার চেষ্টা করি। একপর্যায়ে দেখা যায়, শ্রাবণ নামে এই চক্রের এক সদস্য প্রাইভেটকারে করে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে চক্রটি রামগড় দিয়ে হাটহাজারী এসে চলে যায় কর্ণফুলী এলাকায়। সেখানে সার্কেল এসপির নেতৃত্বে আমরা টিম পাঠাই।

হাটহাজারীতেও তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় উল্লেখ করে ডিসি বলেন, সেখানে চক্রের অন্যতম হোতা মেহেদী হাসান আরিফের মা ও বাবাকে পাওয়া যায়। এরমধ্যেই তারা আমাদের পরিকল্পনা টের পেয়ে যায়। আরিফের বাবা তাকে হাত দিয়ে ইশারা করে পালানোর জন্য ইশারা দেয়। ওখান থেকে আরিফ, রাজু এবং মেহেদী পালিয়ে যায়। তাদের সহযোগীদের মধ্য থেকে রিয়াদ হোসেন বাচ্চু, জয়নাল আবেদীন, জসিম উদ্দিন, তৌহিদ রাকিব, বাদশা মিয়াকে আমরা গ্রেফতার করেছি।

‘তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতে জানা যায়, তাদের মূলহোতা ডাকাত মেহেদী এবং মনির। তারা চট্টগ্রাম শহরে বড় বড় কমার্শিয়াল হাবে ডাকাতি করে যাচ্ছে। তাদের সাথে আরও আছে পিচ্চি জাহিদ। সিএমপিতেই যার বিরুদ্ধে ৪০ থেকে ৪২টি মামলা আছে’।
চক্রের সদস্যরা জামিনে বের হয়ে দল ভারি করার পরিকল্পনা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতার মেহেদীর বিরুদ্ধে ৫০টিরও বেশি মামলা আছে। মাস দুয়েক আগে বারিক বিল্ডিং মোড়ে অভিযান চালানোর সময় আমাদের দুজন পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে তারা পালিয়ে যায়। সেখান থেকেও আমরা দুজনকে গ্রেফতার করেছিলাম। তারা ডাকাতির টাকা সেখানে বসে ভাগ করছিল। আবার জামিনে বের হয়ে চক্রটি আরও বড় করেছে। এই চক্রের সাথে আরও জড়িত আছে রাতুল, হানিফ, নুরুন্নবি, শ্রাবণ এবং বদর।

‘আজ আমরা আরিফকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইবো। সেইসাথে আরও অন্যান্য যে মামলা আছে, বিশেষ করে ওয়ান ব্যাংকের ডাকাতি, আগ্রাবাদস্থ ক্যাট প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি, পাঁচলাইশে ডাকাতি; এসব লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করবো’।