ঢাকা ১১:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত জামালপুরের বকশীগঞ্জে দশানি নদীতে অভিযান চালিয়ে বিপুল চায়না জাল ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পবিপ্রবির তাপসী রাবেয়া হলে নবীনবরণ উৎসব ঠাকুরগায়ের হরিপুরে প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে জলবায়ু পরিবর্তনে মানবাধিকার নিশ্চিতকরনে এনগেজ প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত শাল্লায় বিএনপির নাছির চৌধুরী’র জনসভা ক্যান্সার আক্রান্ত হেফাজত নেতা মাওলানা ফারুকী’র পাশে তারেক রহমান যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে দুদক অভিযানে চালিয়ে ব‍্যপক অনিয়ম খুঁজে পেলেন শ্যামনগরে ডোবায় পড়ে এক কিশোরের মৃত্যু অবৈধ অস্ত্র আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টদের দমনে বিজিবিকে তথ্য সহায়তার আহবান

লাউকুন্ডা মাদ্রাসার ৪টি মেহগনি গাছ বিক্রি ঘিরে বিতর্ক: প্রশাসনিক অনুমতি ছিল কি না, উঠেছে প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:১০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫ ১০৩ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:-

যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের লাউকুন্ডা মাদ্রাসার চারটি পুরনো ও মূল্যবান মেহগনি গাছ বিক্রির ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল গোপনে এসব গাছ বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ এই বিক্রির পেছনে প্রশাসনিক কিংবা বন বিভাগের কোনও সুনির্দিষ্ট অনুমতি ছিল না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এতে করে গাছ কাটাকে ঘিরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাদ্রাসা প্রাঙ্গণের গাছগুলো সম্প্রতি কেটে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে লাউকুন্ডা মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মাওলানা মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, “আমরা ভবন নির্মাণের জন্য গাছ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই। এসি ল্যান্ড স্যার এবং বনবিভাগের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে আমাদের মৌখিক অনুমতি দেন। তাই আমরা গাছগুলো বিক্রি করেছি।”

তবে এই বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেন মনিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম। তিনি বলেন, “আমি তাদের কাউকে অনুমতি দিইনি। যদি কেউ দাবি করে আমি অনুমতি দিয়েছি, তাহলে তাদেরকে বলুন আমার স্বাক্ষরযুক্ত লিখিত অনুমতিপত্র দেখাক। আমি এই বিষয়ে সম্পূর্ণ অনবগত।”

এদিকে লাউকুন্ডা মাদ্রাসার বর্তমান প্রধান শিক্ষক মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, “এই ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কে গাছ বিক্রি করেছে বা কার অনুমতি ছিল, সে বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।”

ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমার জানা মতে, এই গাছ কাটার বিষয়ে কোনো বৈধ অনুমতি নেই। তবে এসি ল্যান্ড স্যারের কাছ থেকে যদি কোনো নির্দেশ আসে, তখন আমি পদক্ষেপ নিতে পারব।”

গাছের ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে প্রথমে তিনি জানান, “আমি ঠিক জানি না, কত টাকায় গাছ কিনেছি।” পরে কিছুটা চিন্তা করে বলেন, “চারটি গাছ ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় কিনেছি।”

স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, “সরকারি বা প্রতিষ্ঠানিক গাছ এমনভাবে গোপনে বিক্রি করা দুর্নীতির সামিল। এখানে কোনো টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি, স্থানীয় জনগণকে জানানো হয়নি, বরং মাদ্রাসার ভবনের কথা বলে প্রভাবশালীরা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করেছে।”

সংশ্লিষ্টদের মতে, এমন ঘটনা ভবিষ্যতে পুনরায় না ঘটে সে জন্য সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে গাছ বিক্রি করে থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

লাউকুন্ডা মাদ্রাসার ৪টি মেহগনি গাছ বিক্রি ঘিরে বিতর্ক: প্রশাসনিক অনুমতি ছিল কি না, উঠেছে প্রশ্ন

আপডেট সময় : ০৮:১০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:-

যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের লাউকুন্ডা মাদ্রাসার চারটি পুরনো ও মূল্যবান মেহগনি গাছ বিক্রির ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল গোপনে এসব গাছ বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ এই বিক্রির পেছনে প্রশাসনিক কিংবা বন বিভাগের কোনও সুনির্দিষ্ট অনুমতি ছিল না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এতে করে গাছ কাটাকে ঘিরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাদ্রাসা প্রাঙ্গণের গাছগুলো সম্প্রতি কেটে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে লাউকুন্ডা মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মাওলানা মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, “আমরা ভবন নির্মাণের জন্য গাছ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই। এসি ল্যান্ড স্যার এবং বনবিভাগের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে আমাদের মৌখিক অনুমতি দেন। তাই আমরা গাছগুলো বিক্রি করেছি।”

তবে এই বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেন মনিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম। তিনি বলেন, “আমি তাদের কাউকে অনুমতি দিইনি। যদি কেউ দাবি করে আমি অনুমতি দিয়েছি, তাহলে তাদেরকে বলুন আমার স্বাক্ষরযুক্ত লিখিত অনুমতিপত্র দেখাক। আমি এই বিষয়ে সম্পূর্ণ অনবগত।”

এদিকে লাউকুন্ডা মাদ্রাসার বর্তমান প্রধান শিক্ষক মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, “এই ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কে গাছ বিক্রি করেছে বা কার অনুমতি ছিল, সে বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।”

ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমার জানা মতে, এই গাছ কাটার বিষয়ে কোনো বৈধ অনুমতি নেই। তবে এসি ল্যান্ড স্যারের কাছ থেকে যদি কোনো নির্দেশ আসে, তখন আমি পদক্ষেপ নিতে পারব।”

গাছের ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে প্রথমে তিনি জানান, “আমি ঠিক জানি না, কত টাকায় গাছ কিনেছি।” পরে কিছুটা চিন্তা করে বলেন, “চারটি গাছ ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় কিনেছি।”

স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, “সরকারি বা প্রতিষ্ঠানিক গাছ এমনভাবে গোপনে বিক্রি করা দুর্নীতির সামিল। এখানে কোনো টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি, স্থানীয় জনগণকে জানানো হয়নি, বরং মাদ্রাসার ভবনের কথা বলে প্রভাবশালীরা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করেছে।”

সংশ্লিষ্টদের মতে, এমন ঘটনা ভবিষ্যতে পুনরায় না ঘটে সে জন্য সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে গাছ বিক্রি করে থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।