রৌমারী সীমান্তে বজ্রপাত—প্রকৃতির বজ্রাঘাতে বিজিবি সদস্য নিহত, আহত পাঁচ

- আপডেট সময় : ০৪:০৮:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ ৫২ বার পড়া হয়েছে

গালিব খাঁন
ভয়াবহ এক দুপুর। ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ১টা ছুঁই ছুঁই। রৌমারী সীমান্তে আকাশটা আচমকাই বদলে যায়।
কালো মেঘের নিচে থমকে যায় বাতাস, নিঃশব্দ আতঙ্ক জমে ওঠে সবুজ পোষাকে দাঁড়িয়ে থাকা ছয়জন সৈনিকের বুকের ভেতর।
তারা জানে না, এই মেঘের গর্জন শুধু শব্দ নয়—
এ এক মৃত্যুবার্তা, যার ঠিকানা লেখা ছিল তাদেরই কারও নামে।
হঠাৎ বজ্রপাত।
আকাশ যেন ছিঁড়ে পড়ে এক সেকেন্ডের গর্জনে।
মাটিতে কাঁপন লাগে।
এক বিজিবি সদস্য ঝলসে পড়েন মাটিতে—
নিঃশ্বাসহীন, নিস্তব্ধ, নিথর।
তার শরীরটা তখন আর শুধু শরীর নয়,
এ এক জাতীয় পোশাকে মোড়ানো আত্মত্যাগ।
পাঁচজন আহত।
দেহের কোথাও পুড়ে গেছে চামড়া,
কোনো চোখে ধোঁয়াশা, কোথাও রক্ত আর আর্তনাদ।
সঙ্গীরা ছুটে আসে, ডাক পড়ে এম্বুলেন্সে।
চিৎকার আর সাইরেনের ভেতর দিয়ে ছুটে চলে আহতদের জীবন।
তাদের চোখে ভয়, আর হাতে হাত ধরে থাকা একে অপরের প্রতি সহানুভূতির কম্পন।
সীমান্ত তখন থেমে গেছে।
বন্দুক থেমে গেছে, জিপ থেমে গেছে—
শুধু বাতাস চলছে, আর চলছে স্মৃতির রক্তপাত।
স্থানীয়রা জানায়, বজ্রপাতের সময় মেঘের গর্জন এতটাই তীব্র ছিল যে মনে হচ্ছিল,
আকাশ যেন ক্ষুব্ধ হয়ে আগুন ছুড়ে মারছে মাটির বুকে।
আর সেই আগুনে পুড়ে গেল এক জন সৈনিকের জীবন।
বিজিবি কর্তৃপক্ষের বিবৃতি এসেছে।
শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে নিহত বীরকে।
আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে রংপুর সিএমএইচ-এ।
প্রশ্ন নেই কারও মুখে—
শুধু নীরবতা, আর দেশের প্রতি এই নিঃশব্দ আত্মদান।
এই মৃত্যু কোনো যুদ্ধক্ষেত্রের নয়, তবু যুদ্ধের চেয়ে কমও নয়।
কারণ সীমান্তে দাঁড়ানো মানেই,
প্রতিদিন মৃত্যুর সম্ভাবনাকে পকেটে নিয়ে হেঁটে চলা।
আজ রৌমারী কাঁদে।
দেশের উত্তর সীমান্তে বৃষ্টির শব্দ যেন কানে কানে বলে—
“এই বীরেরা চুপচাপ মরে যায়,
আমরা শুধু কাগজে লিখে রাখি— বজ্রপাতে মৃত্যু।”
তথ্যসূত্র:
প্রথম আলো,
বাংলা ট্রিবিউন,
চ্যানেল ২৪ নিউজ প্রতিবেদন