ঢাকা ১২:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিশ্বের সেরা জুলুসে জনস্রোতে চট্টগ্রাম পৌনে ১কোটি জনতার রেকর্ড শ্যামনগরে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত রাণীশংকৈলে কৃষকদলের সভাপতি বহিষ্কৃত কৃষক দলের নেতার বিরুদ্ধে থানায়  জিডি  সোনাগাজীতে প্রবাসী পরিবারের উপর হামলা ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ঝিনাইদহে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ১১ তম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত নীলফামারীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত তানোরে জামায়াতের আয়োজনে সিরাতে রাসুল (স:) সেমিনার অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত জমি বিক্রির নামে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ঝিনাইদহে চিহ্নিত প্রতারক পরিবারের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত এক গৃহবধু রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে জ্বালিয়ে দিলো তৌহিদি জনতা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে জ্বালিয়ে দিলো তৌহিদি জনতা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:২৪:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৪৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি :রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের দরবারে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর চালিয়েছে তৌহিদি জনতা। এ সময় নুরাল পাগলের ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে দুইপক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে হামলা চালানো হয় পুলিশের ওপর, ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। এতে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।পরে নুরাল পাগলের কয়েক দিন আগে দাফন করা লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিয়েছে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগল বহু বছর আগে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন দরবার শরিফ। আশির দশকের শেষের দিকে নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করে আলোচনায় আসেন তিনি। ওই সময়ে তার বিরুদ্ধে তীব্র জনরোষ তৈরি হয়। পরে ১৯৯৩ সালের ২৩ মার্চ জনরোষ এড়াতে তিনি মুচলেকা (অঙ্গীকারনামা) দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন।এর কিছু দিন পর তিনি আবার ফিরে এসে তার দরবার শরিফের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন। গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ওই দিনই সন্ধ্যায় এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার ভক্ত-অনুরাগীদের অংশগ্রহণে দরবার শরিফের ভেতরে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাত ১০টার দিকে তাকে মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট উঁচু স্থানে বিশেষ কায়দায় দাফন করা হয়।
পবিত্র কাবা শরিফের আদলে তার কবরের রঙ করা হয়। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৌহিদি জনতা। তাদের আন্দোলনের ফলে কবরের রঙ পরিবর্তন করা হয়। এ বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক হয় তৌহিদি জনতা ও নুরাল পাগলের স্বজনদের। পরে এ বিষয়ে দুই দফা সংবাদ সম্মেলন করে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তৌহিদি জনতা। কবর নিচে নামানো না হলে ভেঙে ফেলার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জুমার পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তৌহিদি জনতা। বিক্ষোভ থেকে হামলা চালানো হয় নুরাল পাগলের দরবারে। পাল্টা আক্রমণ করেন নুরাল পাগলের ভক্তরা। ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ তুমুল সংঘর্ষে দুপক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হন।
একপর্যায়ে নুরাল পাগলের দরবারে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে লাশ কবর থেকে তুলে গোয়ালন্দ পদ্মার মোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওপর নিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে হামলা চালানো হয় পুলিশের ওপর, ভাঙচুর করা হয় পুলিশের দুটি গাড়ি। এতে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী এলে তাদের ওপরও চড়াও হন। হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম। এর বাইরে এ বিষয়ে তিনি আর কোনও কথা বলতে রাজি হননি। ঘটনাস্থলে গিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীবসহ পুলিশের অন্য কর্মকর্তারাও। এ বিষয়ে তারাও কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে জ্বালিয়ে দিলো তৌহিদি জনতা

আপডেট সময় : ০৪:২৪:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিনিধি :রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের দরবারে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর চালিয়েছে তৌহিদি জনতা। এ সময় নুরাল পাগলের ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে দুইপক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে হামলা চালানো হয় পুলিশের ওপর, ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। এতে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।পরে নুরাল পাগলের কয়েক দিন আগে দাফন করা লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিয়েছে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগল বহু বছর আগে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন দরবার শরিফ। আশির দশকের শেষের দিকে নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করে আলোচনায় আসেন তিনি। ওই সময়ে তার বিরুদ্ধে তীব্র জনরোষ তৈরি হয়। পরে ১৯৯৩ সালের ২৩ মার্চ জনরোষ এড়াতে তিনি মুচলেকা (অঙ্গীকারনামা) দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন।এর কিছু দিন পর তিনি আবার ফিরে এসে তার দরবার শরিফের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন। গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ওই দিনই সন্ধ্যায় এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার ভক্ত-অনুরাগীদের অংশগ্রহণে দরবার শরিফের ভেতরে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাত ১০টার দিকে তাকে মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট উঁচু স্থানে বিশেষ কায়দায় দাফন করা হয়।
পবিত্র কাবা শরিফের আদলে তার কবরের রঙ করা হয়। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৌহিদি জনতা। তাদের আন্দোলনের ফলে কবরের রঙ পরিবর্তন করা হয়। এ বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক হয় তৌহিদি জনতা ও নুরাল পাগলের স্বজনদের। পরে এ বিষয়ে দুই দফা সংবাদ সম্মেলন করে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তৌহিদি জনতা। কবর নিচে নামানো না হলে ভেঙে ফেলার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জুমার পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তৌহিদি জনতা। বিক্ষোভ থেকে হামলা চালানো হয় নুরাল পাগলের দরবারে। পাল্টা আক্রমণ করেন নুরাল পাগলের ভক্তরা। ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ তুমুল সংঘর্ষে দুপক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হন।
একপর্যায়ে নুরাল পাগলের দরবারে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে লাশ কবর থেকে তুলে গোয়ালন্দ পদ্মার মোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওপর নিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে হামলা চালানো হয় পুলিশের ওপর, ভাঙচুর করা হয় পুলিশের দুটি গাড়ি। এতে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী এলে তাদের ওপরও চড়াও হন। হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম। এর বাইরে এ বিষয়ে তিনি আর কোনও কথা বলতে রাজি হননি। ঘটনাস্থলে গিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীবসহ পুলিশের অন্য কর্মকর্তারাও। এ বিষয়ে তারাও কোনও কথা বলতে রাজি হননি।