ঢাকা ১১:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শাল্লায় পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে ব্যারিষ্টার মাহাদীন চৌধুরী আগৈলঝাড়ায় দূর্গাপূজা মন্ডপে আনসার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে কেন, প্রশ্ন অ্যাটর্নি জেনারেলের জামালপুরে নূর ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিকের ১৬ তম বর্ষে পদার্পন উপলক্ষে পল্লী চিকিৎসকদের নিয়ে ডক্টরস ডে ও ফ্রি মেডিকেল অনুষ্ঠিত একজন ৬০ বছরের বৃদ্ধ মহিলার করুন আর্তনাদ প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ রাস্তার পাশে মরা গাছ ও পায়তালের ঝুঁকিতে আতংকিত হরিপুর বাসী বরিশালে বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন আনসার ভিডিপির রেঞ্জ কমান্ডার জলবদ্ধতায় নাকাল কালীগঞ্জ উপজেলা সদরবাসী মনিরামপুরের বিভিন্ন পূজা মন্দিরে শুভেচ্ছা ও উপহার বিতরণ করলেন বিএনপি নেতা মুতাছিম বিল্লাহ

মাঠের ভেতর ৩৪ কোটি টাকার সেতু

নিজেস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:৪৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪ ৯২ বার পড়া হয়েছে

মুসফিকুর রহমান কাজল, নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহঃ

মানিকগঞ্জের ঘিওরে সেতু নির্মাণের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে কোনো কাজেই আসছে না ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু। দুই পাশের কৃষিজমির ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি।

উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের বৈকুন্ঠপুর কালিগংগা নদীর ওপর ‘গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু (সিআইবিআরআর)’ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। দুই পাড়ে ৬৩০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।

তবে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই নদীর খেঁয়া পার হচ্ছে দুই পাড়ের অন্তত ৫০ গ্রামের মানুষ।

বিলনালাই সিংজুরী ইউপি ভায়া বৈকুন্ঠপুর বালিয়াবাধা এ সড়কে কালিগঙ্গা নদীর ওপর এ সেতুটি চালু হলে ঘিওর উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।

স্থানীয়রা জানান, সেতু নির্মাণের পর এক দিনের জন্যও যানবাহন এ পথে চলতে পারেনি। জনগণের আশা পূরণে সেতু নির্মাণ করলেও দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতু ব্যবহারে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করে ঢাকার দুই প্রতিষ্ঠানকে সেতুসহ সংযোগ সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

দরপত্র অনুযায়ী, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরইমধ্যে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার নির্দেশনা ছিল। এ সময়ের মধ্যেও কাজটি শেষ হয়নি। ৩৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৩৪ কোটি ৬০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা এবং অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হলেও ভূমি অধিগ্রহণ আর স্থাপনার ক্ষতিপূরণের টাকা দুই বছরেও বুঝে পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা। ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে না পাওয়ায় জমি ছাড়ছেন না তারা। জমি ও স্থাপনার মালিকরা বলছেন, প্রায় দুই বছর ধরে ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার ধরনা দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. মাসুদ মিয়া জানান, ভূমির মালিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় জমি ছাড়ছেন না। আর এলজিইডি বিভাগ জমি বুঝিয়ে দিচ্ছে না। কাজ শুরু করতে গেলে ভূমির মালিকরা বারবার বাধা দিচ্ছেন। এমন জটিলতায় বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে অধিগ্রহণ হয়ে গেলে কাজ শেষ করতে ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগবে।

স্থানীয় বালিয়াবাধা গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, সেতু নির্মাণের আগে ভূমি অধিগ্রহণ করলে এমন বিড়ম্বনা হতো না । সংযোগ সড়ক না হওয়ায় জরুরি মুহূর্তে জেলা শহরে যেতে হলে ১৫ কি.মি ঘুরে যেতে হয়।

উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, দুই বছর আগে সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ঠিকাদার দুই পাশের সংযোগ সড়ক করতে পারছে না। তবে অধিকরণের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের মাঝে চেক বিতরণ সম্পন্ন হলেই ঠিকাদার দ্রুত কাজ শুরু করে দেবে।

ভূমি অধিগ্রহণে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে জেলার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) এল এ শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মামুনুর রশিদ জানান, ভূমি অধিগ্রহণ বিষয় একটি চলমান প্রক্রিয়া। জমির মালিকদের এরইমধ্যে ৭ ধারা নোটিশ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক খুব দ্রুতই জমির মালিকদের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ করবেন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

মাঠের ভেতর ৩৪ কোটি টাকার সেতু

আপডেট সময় : ১২:৪৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

মুসফিকুর রহমান কাজল, নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহঃ

মানিকগঞ্জের ঘিওরে সেতু নির্মাণের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে কোনো কাজেই আসছে না ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু। দুই পাশের কৃষিজমির ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি।

উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের বৈকুন্ঠপুর কালিগংগা নদীর ওপর ‘গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু (সিআইবিআরআর)’ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। দুই পাড়ে ৬৩০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।

তবে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই নদীর খেঁয়া পার হচ্ছে দুই পাড়ের অন্তত ৫০ গ্রামের মানুষ।

বিলনালাই সিংজুরী ইউপি ভায়া বৈকুন্ঠপুর বালিয়াবাধা এ সড়কে কালিগঙ্গা নদীর ওপর এ সেতুটি চালু হলে ঘিওর উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।

স্থানীয়রা জানান, সেতু নির্মাণের পর এক দিনের জন্যও যানবাহন এ পথে চলতে পারেনি। জনগণের আশা পূরণে সেতু নির্মাণ করলেও দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতু ব্যবহারে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করে ঢাকার দুই প্রতিষ্ঠানকে সেতুসহ সংযোগ সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

দরপত্র অনুযায়ী, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরইমধ্যে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার নির্দেশনা ছিল। এ সময়ের মধ্যেও কাজটি শেষ হয়নি। ৩৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৩৪ কোটি ৬০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা এবং অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হলেও ভূমি অধিগ্রহণ আর স্থাপনার ক্ষতিপূরণের টাকা দুই বছরেও বুঝে পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা। ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে না পাওয়ায় জমি ছাড়ছেন না তারা। জমি ও স্থাপনার মালিকরা বলছেন, প্রায় দুই বছর ধরে ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার ধরনা দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. মাসুদ মিয়া জানান, ভূমির মালিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় জমি ছাড়ছেন না। আর এলজিইডি বিভাগ জমি বুঝিয়ে দিচ্ছে না। কাজ শুরু করতে গেলে ভূমির মালিকরা বারবার বাধা দিচ্ছেন। এমন জটিলতায় বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে অধিগ্রহণ হয়ে গেলে কাজ শেষ করতে ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগবে।

স্থানীয় বালিয়াবাধা গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, সেতু নির্মাণের আগে ভূমি অধিগ্রহণ করলে এমন বিড়ম্বনা হতো না । সংযোগ সড়ক না হওয়ায় জরুরি মুহূর্তে জেলা শহরে যেতে হলে ১৫ কি.মি ঘুরে যেতে হয়।

উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, দুই বছর আগে সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ঠিকাদার দুই পাশের সংযোগ সড়ক করতে পারছে না। তবে অধিকরণের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের মাঝে চেক বিতরণ সম্পন্ন হলেই ঠিকাদার দ্রুত কাজ শুরু করে দেবে।

ভূমি অধিগ্রহণে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে জেলার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) এল এ শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মামুনুর রশিদ জানান, ভূমি অধিগ্রহণ বিষয় একটি চলমান প্রক্রিয়া। জমির মালিকদের এরইমধ্যে ৭ ধারা নোটিশ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক খুব দ্রুতই জমির মালিকদের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ করবেন