ভুয়া শিক্ষকের এমপিও বাতিল, বৈধ শিক্ষকের এমপিও করার ও অধ্যক্ষ কে বরখাস্ত করার দাবি
- আপডেট সময় : ১০:২৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ৪০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্রাইম ডেস্ক
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলাধীর ঐতিহ্য বাহী “বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রি কলেজ” এখন ভয়াবহ দুর্নীতির দায়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বৈষম্য বিরোধী পতিত আওয়ামী লীগের দোসর ও দাপট ধারী সাবেক অবৈধ খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের (নিয়ামতপুর নিবাসী) দোসর ও দাপট ধারী অত্র কলেজের অধ্যক্ষ ড.মো: আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ, কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন, সরকারি নথিপত্র টেম্পারিং এবং প্রভাষক মো: এরশাদ- অর্থনীতি এর সাথে বৈষম্য করার সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে সরকারি তদন্তে। ফলে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে গোটা এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। সর্বত্র উঠেছে দুর্নীতিবাজ এই অধ্যক্ষের স্থায়ী বরখাস্ত সহ যথাযথ শাস্তির জোর দাবি।

জানা যায় যে সরকারি নিয়োগ বোর্ড টেম্পারিং করে অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন ডিগ্রি শাখায় বাংলা, ইংরেজি, দর্শন, রাষ্ট্রবি: ও ভুগোল বিষয়ে বিধি বর্হিভূত ভাবে ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। আরো জানা যায় যে দর্শন বিভাগের ভুয়া প্রভাষক মো: কামাল হোসেনের বেতন ভাতাদি কয়েক মাস আগে চালু করে দিয়েছেন। যা সরকারি অর্থ আত্মা সাতের সামিল।
যে সমস্ত সরকারি কাগজ অধ্যক্ষ গোপনে জাল করেন তা হলো- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গত ২৮/০৬/২০১৫ তারিখের চিঠি, ডিজির প্রতিনিধির গত ২৬/০৭/২০১৫ এর চিঠি, গত ৩১/০৭/২০১৫ তারিখের সিএসকপি, কলেজ গভর্নিং বডির গত ২২/০৮/২০১৫ তারিখের চলমান রেজুলেশন টেম্পারিং, গত ৩১/০৮/২০১৫ তারিখের প্রভাষক এরশাদ আলীর বৈধ নিয়োগের পদ পরিবর্তন ও সর্বশেষ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গত ২৯/০৪/২০২০ তারিখের স্মারক টেম্পারিং করা সহ এই সকল সরকারি দপ্তরের চিঠি টেম্পারিং করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ভুয়া রেকর্ড সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ অনুসারীদের ডিগ্রি শাখায় ৫ জন ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দেন। এই নিয়োগের পেছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে। কলেজ গভর্নিং বডির ২২ আগস্ট ২০১৫ সালের রেজুলেশন টেম্পারিং করে এসব নিয়োগ বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেন অর্থ লোভী অধ্যক্ষ আমজাদ। জানা যায় যে ভুয়া শিক্ষক গণের নাম শিক্ষক হাজিরা খাতায় রয়েছে এবং এখনো কলেজে তারা আসা যাওয়া করেন।

আরো জানা যায় বৈধ শিক্ষক এরশাদ আলীর নিয়োগ বোর্ড ব্যবহার করে অধ্যক্ষ কর্তৃক উক্ত অনিয়ম করার জন্য বৈধ প্রভাষক মো: এরশাদ আলীর ন্যায্য বেতন-ভাতাদী ২০১৯ সালের জুন জুলাই মাস থেকে আজ অবধি আটকে থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রভাষক এরশাদ আলীর পরিবার।
আরো জানা যায় যে কলেজে প্রায় ৫০ বিঘা জোত ভুমি, আম বাগান, কাঠের বাগান, কলেজ মার্কেট সহ বিভিন্ন আয়ের খাত থেকে বছরে যথেষ্ট আয় হয়। সরকারি তদন্তে ধরা পড়ে বিগত কয়েক বছরের আয় ব্যয়ের হিসাব দেখাতে পারেন নাই অধ্যক্ষ, এমনকি ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কলেজের আয়-ব্যয়ের কোনোই সুনির্দিষ্ট নথিপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি অধ্যক্ষ। বরং মনগড়া খাতে ভুয়া ব্যয় দেখিয়ে বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে তদন্তে ধরা পড়ে।
অধ্যক্ষ অর্থ আত্মসাৎ করে রাজশাহী শহরের বহরামপুর মোড়ে জমি কিনে বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছেন। জিরো থেকে হিরো হয়েছেন অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন।
এক সময় অধ্যক্ষ নিজেই স্বীকার করেন, “আমি বরখাস্ত হব।” সাবেক কলেজ সভাপতি যতীন্দ্র মোহন বলেন অধ্যক্ষের লজ্জা নাই, অধ্যক্ষের শাস্তি হবেই।মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর তার বেতাদি বন্ধ করেন।
আরো জানা যায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক, মাউশির সহকারী পরিচালক ও রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা অফিসের পরিচালক সহ সকল সরকারি কর্মকর্তা গণের আদেশ অমান্য করেন অধ্যক্ষ। বর্তমানে তিনি নিয়মিত ও সময় মত কলেজে না এসে নিজের মনগড়া তৈরি করা কমিটির সভাপতি ও শিক্ষক প্রতিনিধি দের নিয়ে নিজের অপরাধ লুকানোর জন্য ও চাকরি বাঁচাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ও মাউশি অধিদপ্তরে ছুটাছুটি করে কলেজের অর্থ অপচয় করছেন। অন্যদিকে বৈধ নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক মো: এরশাদ আলীর সাথে নানা ষড়যন্ত্র মূলক আচরণ করে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। জানা যায় যে অধ্যক্ষ এরশাদ আলীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার ও হামলা করার জন্য নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। আরো জানা যায় যে প্রভাষক এরশাদ আলী নিয়মিত ও সময় মত কলেজে উপস্হিত হওয়ার পরেও অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ষড়যন্ত্র করে তিনাকে হাজিরা করতে দিচ্ছেন না এবং ক্লাস নিতে দিচ্ছেন না। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের এবং মাউশি অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তাদের শ্রদ্ধার সহিত অধ্যক্ষের অনিয়মের পক্ষ না নেওয়ার ও সুপারিশ না করে বরং অধ্যক্ষ কে স্হায়ী বরখাস্ত করন সহ বিধি মোতাবেক ব্যবস্হা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছেন কলেজ প্রতিষ্ঠাতার আপন ভাতিজা আব্দুল হাকিম, কলেজ এলাকা বাসী, উপাধ্যক্ষ, সাধারণ শিক্ষক, ছাত্র ও অভিভাবক গণ, এরশাদের নিয়োগ কালীন সকল প্রতিনিধি মহোদয় গণ এবং ভুক্তভোগী বৈধ প্রভাষক এরশাদ আলী ও তিনার পরিবার।
এদিকে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো. আবদুল হাকিম, শিক্ষক সমাজ, অভিভাবকবৃন্দ, ব্যবসায়ী গণ এবং স্থানীয় জনগণ মিলে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের অর্থ আত্মা সাতের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন এবং অধ্যক্ষ ড. মো: আমজাদ হোসেনের স্থায়ী বরখাস্ত করণ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।
তারা বলেন, “একজন স্বঘোষিত জালিয়াত যিনি বছরের পর বছর ধরে কলেজের সুনাম নষ্ট করে চলেছেন, তার দ্রুত অপসারণ এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় এই মহান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মুখে পড়বে।”
তারা একইসঙ্গে বৈধ শিক্ষক মো. এরশাদ আলী- অর্থনীতি এর বকেয়া বেতনসহ সমস্ত সুযোগ-সুবিধা অবিলম্বে চালুর দাবি ও ভুয়া শিক্ষক কামাল হোসেনের বেতন ভাতা বন্ধ করার দাবি
জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়, মাউশি অধিদপ্তর ও রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা মহোদয় এর নিকট।


























