ঢাকা ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগ সভাপতি ও সাবেক এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার আর নেই সাতক্ষীরায় মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন বসত ভিটে ঢাকা বরিশাল মহাসড়কে গোল্ডেন লাইন এবং ইতি পরিবহন ইল্লা বাস স্ট্যান্ড মুখোমুখি সংঘর্ষ বাংলাদেশ জামাতের ইসলামী তানোর উপজেলার সেক্রেটারি মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টে গুরুতর আহত ইরানের পাল্টা হামলার শঙ্কায় খাবার ও পানি মজুত করছে ইসরায়েলিরা দলে দলে ফিরছে মানুষ, ঢাকাও ছাড়ছেন অনেকে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫তম তিরোধান দিবস চট্টগ্রামে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে উদযাপিত চট্টগ্রামের দুই সন্তানের জননী কে নিয়ে পালালো এক যুবক

বেরোবিতে সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে অনিয়ম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪ ১৪৫ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:-
নিয়ম অনুযায়ী বিভাগীয় অধ্যাপকের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে তিন বছরের জন্য বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ করার, কোনো বিভাগে অধ্যাপক না থাকলে সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ করা, আইনের ওই ধারার শর্ত অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপকের নিম্নের কোন শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধান পদে নিযুক্ত করা যাবে না। সহযোগী অধ্যাপক না থাকলে তখন বিভাগের প্রবীণতম শিক্ষক বিভাগীয় প্রধান হতে পারবেন।

তবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রংপুরের গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে এসব নিয়ম নীতির তোয়াক্তা করা হয়নি। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৯ এর ২৮ (৩) ধারা লঙ্ঘন করে একজন সহকারী অধ্যাপককে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবৈধ এই আদেশ বাতিল চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান পদ প্রাপ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘প্রভাষক’ হিসেবে যোগদান করেন মো. তাবিউর রহমান প্রধান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আপগ্রেডেশন/প্রমোশন নীতিমালা অনুযায়ী যথানিয়মে ‘সহকারী অধ্যাপক’ এবং আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়ে ২০২১ সালের ৭ মার্চ থেকে ‘সহযোগী অধ্যাপক’ হিসেবে কর্মরত আছেন। এ বিভাগে কর্মরত শিক্ষকগণের মধ্যে তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, চারজন সহকারী অধ্যাপক এবং দুইজন প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। সহযোগী অধ্যাপকগণের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাবিউর রহমান প্রধানের অবস্থান দ্বিতীয়। বিভাগে কর্মরত জ্যেষ্ঠ সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম ১০ মার্চ বিভাগীয় প্রধান’ হিসেবে তাঁর দায়িত্বের মেয়াদ শেষ করেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন ২০০৯ এর ধারা-২৮(৩) অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রম অনুযায়ী ‘বিভাগীয় প্রধান’ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার কথা তাবিউর রহমান প্রধানের। কিন্তু তা না করে সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহারকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।

সহযোগী অধ্যাপক মো. তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রধান পদে নিয়োগের জন্য সহযোগী অধ্যাপক থাকা স্বত্ত্বেও বেরোবির আইন লঙ্ঘন করে সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহারকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে ‘আইনগত জটিলতা’ থাকার কথা বলা হলেও বিভাগে কর্মরত শিক্ষকবৃন্দের জ্যেষ্ঠতার বিষয়ে কোন আইনগত জটিলতা নেই। শিক্ষকগণের জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী যথানিয়মে বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী সকল কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলমান থাকলেও বিভাগীয় প্রধান নিয়ে কেন জ্যেষ্ঠতার প্রশ্ন তোলা হচ্ছে সেটা বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষকগণের পক্ষ থেকে উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর দেয়া অভিযোগপত্রটির অনুলিপি উপাচার্য , কোষাধ্যক্ষ, সকল অনুষদের ডিন, সকল বিভাগীয় প্রধান এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দিয়েছেন তিনি।
এদিকে ১০ মার্চ দেওয়া নিয়োগপত্রে বলা হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর-এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে কর্মরত শিক্ষকগণের জ্যেষ্ঠতার নির্ধারণে আইনগত জটিলতা থাকায় নিয়ামুন নাহারকে গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করা হলো। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহার বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে ইতোমধ্যেই লিখিতভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি। তবে গতকাল বিকেল ৫টায় এই রিপোর্ট লেখার সময়ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়ামুন নাহারকে দেখানো হচ্ছে।

নতুন বিভাগীয় প্রধান নিয়ামুন নাহার বলেন, আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে গত পরশুদিন। আমি ওটা রিফিউজ করেছি। আমি রিজাইন করেছি। আমি জয়েনেই করিনি।

আইনগত জটিলতার বিষয়ে কথা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, এই নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসরণ করে কার্যক্রম করা হয়েছে। তাবিউর রহমানের বিরুদ্ধে কোর্ট মামলা আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বেরোবিতে সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে অনিয়ম

আপডেট সময় : ০১:৪৯:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:-
নিয়ম অনুযায়ী বিভাগীয় অধ্যাপকের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে তিন বছরের জন্য বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ করার, কোনো বিভাগে অধ্যাপক না থাকলে সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ করা, আইনের ওই ধারার শর্ত অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপকের নিম্নের কোন শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধান পদে নিযুক্ত করা যাবে না। সহযোগী অধ্যাপক না থাকলে তখন বিভাগের প্রবীণতম শিক্ষক বিভাগীয় প্রধান হতে পারবেন।

তবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রংপুরের গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে এসব নিয়ম নীতির তোয়াক্তা করা হয়নি। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৯ এর ২৮ (৩) ধারা লঙ্ঘন করে একজন সহকারী অধ্যাপককে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবৈধ এই আদেশ বাতিল চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান পদ প্রাপ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘প্রভাষক’ হিসেবে যোগদান করেন মো. তাবিউর রহমান প্রধান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আপগ্রেডেশন/প্রমোশন নীতিমালা অনুযায়ী যথানিয়মে ‘সহকারী অধ্যাপক’ এবং আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়ে ২০২১ সালের ৭ মার্চ থেকে ‘সহযোগী অধ্যাপক’ হিসেবে কর্মরত আছেন। এ বিভাগে কর্মরত শিক্ষকগণের মধ্যে তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, চারজন সহকারী অধ্যাপক এবং দুইজন প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। সহযোগী অধ্যাপকগণের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাবিউর রহমান প্রধানের অবস্থান দ্বিতীয়। বিভাগে কর্মরত জ্যেষ্ঠ সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম ১০ মার্চ বিভাগীয় প্রধান’ হিসেবে তাঁর দায়িত্বের মেয়াদ শেষ করেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন ২০০৯ এর ধারা-২৮(৩) অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রম অনুযায়ী ‘বিভাগীয় প্রধান’ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার কথা তাবিউর রহমান প্রধানের। কিন্তু তা না করে সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহারকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।

সহযোগী অধ্যাপক মো. তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রধান পদে নিয়োগের জন্য সহযোগী অধ্যাপক থাকা স্বত্ত্বেও বেরোবির আইন লঙ্ঘন করে সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহারকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে ‘আইনগত জটিলতা’ থাকার কথা বলা হলেও বিভাগে কর্মরত শিক্ষকবৃন্দের জ্যেষ্ঠতার বিষয়ে কোন আইনগত জটিলতা নেই। শিক্ষকগণের জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী যথানিয়মে বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী সকল কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলমান থাকলেও বিভাগীয় প্রধান নিয়ে কেন জ্যেষ্ঠতার প্রশ্ন তোলা হচ্ছে সেটা বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষকগণের পক্ষ থেকে উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর দেয়া অভিযোগপত্রটির অনুলিপি উপাচার্য , কোষাধ্যক্ষ, সকল অনুষদের ডিন, সকল বিভাগীয় প্রধান এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দিয়েছেন তিনি।
এদিকে ১০ মার্চ দেওয়া নিয়োগপত্রে বলা হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর-এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে কর্মরত শিক্ষকগণের জ্যেষ্ঠতার নির্ধারণে আইনগত জটিলতা থাকায় নিয়ামুন নাহারকে গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করা হলো। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহার বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে ইতোমধ্যেই লিখিতভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি। তবে গতকাল বিকেল ৫টায় এই রিপোর্ট লেখার সময়ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়ামুন নাহারকে দেখানো হচ্ছে।

নতুন বিভাগীয় প্রধান নিয়ামুন নাহার বলেন, আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে গত পরশুদিন। আমি ওটা রিফিউজ করেছি। আমি রিজাইন করেছি। আমি জয়েনেই করিনি।

আইনগত জটিলতার বিষয়ে কথা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, এই নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসরণ করে কার্যক্রম করা হয়েছে। তাবিউর রহমানের বিরুদ্ধে কোর্ট মামলা আছে।