Canlı Maç İzle

SBOBET88

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

casino kurulum

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Eros Maç Tv

hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink Panel

Hacklink

extrabet

Hacklink

Hacklink

holiganbet giriş

olaycasino giriş

Hacklink

hacklink

Hacklink

bbo303

Hacklink

Hacklink

slot dana

Hacklink

บาคาร่า

daftar slot

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Buy Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

slot gacor

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

หวยออนไลน์

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink satın al

Hacklink

holiganbet

7mmbet, 7mmbet live chat, Agen Sbobet

betturkey

dizipal güncel

onwin

sahabet giriş

casibom

casibom giriş

casibom güncel

casibom güncel giriş

casibom giriş adresi

casibom güncel adres

vegabet

vegabet

betasus

casinoroyal

betovis

Hacklink panel

antalya dedektör

teknoloji ekibi tm2

tm2 dedektör

dedektör

dedektor

slot online

primebahis

toz toplama sistemleri

conrad gr4 dedektör

conrad gr4

conrad gr4 dual

conrad gr4 dedektör

conrad gr4

conrad gr4 dual

conrad gr4 yeraltı görüntüleme

antalya dedektör

antalya ikinci el dedektör

antalya xp dedektör

tipobet

tipobet

padişahbet

padişahbet giriş

galabet

galabet giriş

vaycasino

vaycasino

betnano

mariobet

slot gacor

minelab dedektör

dedektör

altın dedektörü

conrad gr4 dual

vaycasino

dedektör

dedektör fiyatları

altın dedektörü

define dedektörü

dedektör

dedektör

dedektör

via gold dedektör

minelab dedektör

model 15 alan tarama

escort johor

minelab gpx 6000

gpx 6000 dedektör

tlcasino

tlcasino.win

tlcasino giriş

wbahis

wbahis giriş

casinowon

casinowon giriş

casinowonadresgiris.com

bahiscasino

bahiscasino giriş

https://bahiscasino.pro/

Streameast

Betpas

onwin

Marsbahis

Marsbahis

Marsbahis

Marsbahis

Marsbahis

inan dedektör

antalya inan dedektör

conrad gr4

sekabet

antalya dedektör

Drunk porn

Drunk porn

fatih escort

livebahis

holiganbet

fatih escort

dizibox

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

https://tm.unimal.ac.id/

casibom

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Padişahbet

casibom güncel giriş

bahsegel

pusulabet

matbet

imajbet

meritking

marsbahis

Drunk porn

casibom

casibom güncel giriş

grandpashabet

sekabet

https://dizin.org.tr/

grandbetting

beylikdüzü escort

beyoğlu escort

beyoğlu escort

fatih escort

paşacasino

matadorbet

betebet

betpas

asyabahis

ultrabet

ptt kargo

Casibom giriş

Betturkey giris

matbet

holiganbet

grandpashabet

vdcasino

bahsegel

nitrobahis

superbet

bahiscom

betebet

atlasbet

casibom güncel

dizipal

giftcardmall/mygift

bakırköy escort

başakşehir escort

beylikdüzü escort

büyükçekmece escort

halkalı escort

kağıthane escort

pendik escort

esenler escort

esenyurt escort

dinamobet

matbet

piabellacasino

perabet

matbet,matbet giriş

matbet

casibom

timebet

matbet

maksibet

vaycasino

grandbetting

bahiscasino

marsbahis

marsbahis

casibom

pusulabet

matbet

casibom

ঢাকা ০১:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জামালপুরে ৩ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবাসহ নারী আটক ঝিনাইদহে নির্বাচনী গণসংযোগকালে রাশেদ খাঁন যথাসময়ে নির্বাচন না হলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া দলগুলোর নেতাকর্মীরা কেউই ভালো থাকতে পারব না আমাকে খুঁজবেন না, আমি আমার প্রেমিকের সঙ্গে আছি, ভালো আছি এমনেই ইঙ্গিত মিলেছে পুজা দাসের ঠাকুরগাঁয়ের হরিপুর উপজেলার রাউতনগর চড়োল পাড়া গ্রামে বাপ-দাদার ৭০ বছরের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ হরিপুরে ‎বিকেন্দ্রীকৃত পরিবীক্ষণ  পরিদর্শন ও মুল্যায়ন পদ্ধতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহে খুচরা সার বিক্রেতাদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হাফ ভাড়া নিয়ে শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর, আহত ৫০ সোনাগাজীতে উৎসবমুখর পরিবেশে রেনেসাঁ বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত নৈতিক ও ধর্মীয় মুল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষার শিক্ষকদের ভুমিকা শীর্ষক আলিপুরে সদর উপজেলার ইউনিয়ন বিএনপির সাথে ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুর রউফের মতবিনিময় সভা

বিএনপির সাথে সরকার-ছাত্রদের যেসব ইস্যুতে দূরত্ব

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট সময় : ১০:২০:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫ ৯২ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট :বাংলাদেশে আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ছয় মাস পার না হতেই অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে, বিশেষ করে শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা রাখা ছাত্রদের সাথে নির্বাচনসহ কয়েকটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে এ সময়ের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সাথে দূরত্ব আরও প্রকট হয়ে ওঠার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে থাকা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নির্বাচন ও নির্বাচন পরিচালনাকারী সরকার নিয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন তাতে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্যের বিষয়টিই প্রকাশ পেয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু নির্বাচন বিষয়ক ইস্যুই নয়, বরং রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেয়া ও ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের উদ্যোগকে যেভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছে বিএনপি তা উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট ও দূরত্বের মাত্রা বাড়িয়েছে।

দুটো উদ্যোগই আন্দোলনকারী ছাত্রদের দিক থেকে এসেছিলো। এখন আবার নতুন করে ছাত্রদের দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর আগে জুলাই-অগাস্টের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে মন্তব্য করেছিলেন। সম্প্রতি বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, “আমরা তো চাই আর্লি ইলেকশন। আগেও বলেছি আমরা। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার, যেটা ন্যূনতম সংস্কার, সেগুলো করে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা”।

অন্যদিকে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন “বিএনপি কেন যেন মনে করে সরকারটা হয়েছে কেবল একটা নির্বাচন দেয়ার জন্য। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা সরকার আছে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য, যে সময়ে তারা বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন করবে”।

তিনি একই সাথে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে রয়েছেন।

মি. ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন ‘বিএনপি কিছু অপ্রয়োজনীয় দূরত্ব সরকার বা ছাত্রদের সাথে তৈরি করেছে’। তবে এটার প্রয়োজন ছিলো না বলেই তিনি মনে করেন।

যদিও মি. আলমগীর বিবিসিকে বলেছিলেন যে শুরু থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে তাদের যে সম্পর্ক ছিলো এখনো তেমনটিই আছে।

মি.আলমগীর বিভিন্ন বিষয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন তাতে নাহিদ ইসলাম ছাড়াও পাল্টা মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

আবার আবার বিএনপির দিক থেকে মি. আলমগীরের মন্তব্যকে সমর্থন করে কথা বলেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভিও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলছেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে যে মতপার্থক্যের শুরু হয়েছিলো বিএনপি ও সরকারের মধ্যে, সেটিই আরও প্রকট হয়েছে রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন ও জুলাই ঘোষণাপত্র ইস্যুতে এসে।

তার মতে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে এটি পরিষ্কার যে, তারা মনে করছেন বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে না দেয়া বা বিলম্ব করানোর একটা চেষ্টা সরকারের ঘনিষ্ঠ কোন কোন মহল করছে বলে তারা মনে করেন। এ কারণেই উভয় পক্ষের মধ্যে এখন মতপার্থক্য ক্রমাগত বাড়ছে বলে তার ধারণা।

আরেকজন বিশ্লেষক অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলছেন, নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে পরস্পরের ওপর যে আস্থার সংকট সেটাই উভয়পক্ষের মধ্যে দূরত্বের মূল ভিত্তি।

“আমার মনে হয় ছাত্ররা কতদূর যেতে চায় সেটা নিয়ে বিএনপিতে উদ্বেগ আছে, আবার ছাত্রদের মধ্যে উদ্বেগ আছে যে বিএনপি নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসলেও এখনকার সংস্কার কর্মসূচি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করবে কি না,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

নির্বাচনের সময়, রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন ও জুলাই ঘোষণাপত্র:
গত বছরের আটই অগাস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিএনপি দ্রুততম সময়ের নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ দাবি করে আসছিলো। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার প্রথম দুটি ভাষণে তা না থাকায় আক্ষেপও প্রকাশ করেছিলো দলটি।

পরে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় হিসেবে উল্লেখ করলেও তাতেও সন্তুষ্ট হয়নি বিএনপি।

বরং জামায়াতসহ কিছু দল ও সংগঠন নির্বাচনের আগে সংস্কারের বিষয়ে গুরুত্ব দিলে তাতের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিএনপি এবং এই ইস্যুতেই জামায়াতের সাথে দৃশ্যমান বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে দলটি।

এবার বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে মি. আলমগীর বলেছেন, ”উনি (প্রধান উপদেষ্টা) যতগুলো সংস্কারের মধ্যে হাত দিয়েছেন, অতগুলো সংস্কার করতে গেলে দশ বছরের মধ্যেও শেষ হবে না। আর সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। দু’বছর আগে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। তার মধ্যে এই বিষয়গুলি তো রয়েছে।”

নির্বাচনের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম তার সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেছেন, “বিএনপি কেন যেন মনে করে সরকারটা হয়েছে কেবল একটা নির্বাচন দেয়ার জন্য। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা সরকার আছে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য- যে সময়ে তারা বিচার সংস্কার ও নির্বাচন করবে।

“আমরা ছাত্ররা এসেছি ওয়াচডগের জন্য। কেবল নির্বাচনের জন্য আসিনি। বিচার একটা পর্যায়ে যেতে হবে,” বলেছেন তিনি

আবার অন্যদিকে গত অক্টোবরে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী তার লেখা এক রিপোর্টে উল্লেখ করেছিলেন যে রাষ্ট্রপতি তাকে বলেছেন ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোন দালিলিক প্রমাণ তার হাতে নেই’।

এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও তাদের ঘনিষ্ঠ জাতীয় নাগরিক কমিটি রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনে তীব্র চাপ সৃষ্টি করলেও ‘সাংবিধানিক সংকট’ হবে উল্লেখ করে বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতিকে আর পরিবর্তন করা যায়নি।

ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলছেন, “আমরা পছন্দের কাউকে রাষ্ট্রপতি করতে চাইনি। আমরা চেয়েছি এই রাষ্ট্রপতি সরে যাক। আমরা বলেছিলাম প্রয়োজনে সবাই মিলে একজনকে ঠিক করি। আমরা তো পছন্দের কাউকে রাষ্ট্রপতি করতে চাইনি”।

তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আপত্তির কারণ খুব সঙ্গত কারণ। আমরা তো একটা সংবিধানের অধীনে আছি। রাষ্ট্রের যে সংবিধান, সেই সংবিধানের অধীনে আমরা আছি। এই সরকারও শপথ নিয়েছে সেই সংবিধানের অধীনে। সেখানে রাষ্ট্রপতিকে যে অপসারণ করবে, সেটা কে করবে? এটা এক।”

”দুই নম্বর হচ্ছে, রাষ্ট্রপতি আনবেন কাকে? তিন নম্বর হচ্ছে, এটার লেজিটেমেসি কার হাতে থাকবে? পার্লামেন্ট নাই। সুতরাং ওই প্রশ্নটাকে আমরা মনে করি যে, অবাস্তব প্রশ্ন।”

অন্যদিকে জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলছেন ছাত্ররাই একাই তো এটা দিতে চেয়েছিলো কিন্তু সেখানে বিএনপি বাধা হয়ে দাঁড়ালো। বিএনপি মহাসচিব হন্তদন্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে গেলেন, বললেন এভাবে ছাত্ররা করলে অনৈক্য তৈরি হবে।

“ছাত্ররাও ভাবলো সবাই মিলেই করি। আলোচনার টেবিলে দিলো। এখন পর্যন্ত সমাধান হলো না। তারা আগ্রহী না এটা আগেই বলতে পারতো। কিন্তু তারা শঠতা ও প্রতারণা করে এটাকে বাধাগ্রস্ত করলো,” বলেছেন মি. ইসলাম।

তবে এ বিষয়ে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন ‘এটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনাও করা হয়নি আগে, আমরা জানিও না এটা। আর (অভ্যুত্থানের) পাঁচ মাস পরে এই ডিক্লারেশনের কোনো যুক্তি আছে কি না?’

তিনি বলেন, “এটা একটা অভ্যুত্থান, একটা আন্দোলন। সেই আন্দোলনের ডিক্লারেশন তখনই হওয়া উচিৎ ছিল। এটা ছাত্ররা তারা দিতেই পারে। কিন্তু আমরা ওটার পার্ট তখনই হবো, যখন গোটা জাতির প্রশ্নটা আসবে তার মধ্যে, টোটাল জিনিসটা। কোনো আলোচনা না করেই তো আমরা এটা করতে পারি না। প্রশ্নই উঠতে পারে না।”

এছাড়াও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও বিএনপির সাথে ছাত্রদের মতবিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসিকে বলেছেন ‘যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে রাজনীতি করে, তাদেরকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারটাতে আমরা কখনোই একমত হইনি। এটা আমরা বলেছি যে, জনগণ ডিসাইড করবে যে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে-কি হবে না।’

নাহিদ ইসলাম বলছেন, এ বিষয়ে সবার অবস্থান আরও পরিষ্কার করা দরকার।

“নিরপেক্ষ সরকারের নামে আওয়ামী লীগকে আশ্রয় দেয়ার ষড়যন্ত্র হলে মানবো না। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ও নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যবস্থা করানোর দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। আশা করি কেউ এ ষড়যন্ত্রে পা দিবে না”।
ওদিকে বিএনপি মহাসচিব যে বলেছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করলে সরকার থেকে বেরিয়ে এসে সেটা করা উচিত,তার জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেছেন সরকারে থেকে কেউ নির্বাচনে অংশ নিবে না।

“কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সরকার ছেড়ে দিবে। দল গঠনে প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চাইলে সরকার ছেড়ে দিবো”।

মিস্টার ইসলাম অভিযোগ করেছেন, উদ্দেশ্য করে না বলেও বিএনপির কথার টোন আওয়ামী লীগের সাথে মিলে যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, মি. আলমগীর বিবিসিকে বলেছেন যে তিনি মনে করেন সরকার থেকে বেরিয়ে ছাত্রদের দল গঠন করা উচিত।

“অর্থাৎ সরকারের কোনো সাহায্য না নিয়ে তারা যদি দল গঠন করতে চায়, সেটা তাদের জন্যই ভালো হবে,” বলেছেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেছেন যে ‘প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিএনপি পন্থী লোকজন আছে তাদের রেখে নির্বাচন সুষ্ঠও নিরপেক্ষ সম্ভব কি-না’।

“রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন, জুলাই প্রক্লেমেশন—এগুলো কিন্তু ছাত্রদের দলীয় দাবি ছিলো না। এটা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। সেটার ভিত্তিতে ছাত্রদের পক্ষ থেকে দাবি এসেছে। একটা ভয় কেন যেন বিএনপির মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। এটা অমূলক,” বলেছেন তিনি।

জনআকাঙ্খা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে দূরত্ব আরও বাড়বে’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলছেন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ইস্যুতে বিএনপির শক্ত অবস্থান নেয়াটাই আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে তাদের মতপার্থক্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলো।

“সাংবিধানিক সংকটের আশঙ্কার কথা বলে রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে এবং প্রয়োজনীয়তার প্রশ্ন তুলে জুলাই ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধে বিএনপির শক্ত অবস্থান ছিলো আন্দোলনকারী ছাত্রদের অবস্থানের বিরুদ্ধে একটা ধাক্কা। এছাড়া বিএনপি মাঝে মধ্যেই মাইনাস টু ফর্মুলার কথাও তুলে ধরছে। এসব ইস্যুতে শুধু সরকার বা আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে নয় বরং জামায়াতসহ ইসলামপন্থী দলগুলোর সাথেও বিএনপির ঠাণ্ডা লড়াই স্পষ্ট হয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তার মতে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসতে পারবে কি না তা জনগণের ওপর যেভাবে বিএনপি ছেড়ে দিতে চাইছে সেটি আন্দোলনকারী ছাত্ররা মেনে নিতে পারছে না, যা তাদের মধ্যকার বিরোধকে আরও চাঙ্গা করে তুলতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

“আন্দোলনকারী ছাত্ররা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে যেভাবে সিদ্ধান্ত দিয়ে দিচ্ছেন তা বিএনপি ভালোভাবে নিচ্ছে না। আবার সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠরা যেভাবে চব্বিশের আন্দোলনকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাথে তুলনা করে সেটাও বিএনপির জন্য অস্বস্তির। এ কারণেই ৭১ ইস্যুতে জোরালো অবস্থান নিয়েছে বিএনপি,” বলছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, শনিবারই চাঁদপুরে ছাত্র জনতার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন ‘আওয়ামী লীগকে কোনভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই আরেকজন শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলছেন, জনআকাঙ্খা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে উভয় পক্ষের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়বে বলেই মনে করেন তিনি।

“সমাধান হলো সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেটি কখন করা উচিত সে বিষয়ে ঐকমত্য হবে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া যতদিন যাবে তত অনিশ্চয়তা বাড়বে। তাদের মধ্যেও দূরত্ব বাড়বে। পাশাপাশি জনমনে আশঙ্কা ও অস্থিরতা বাড়বে কারণ অনেকেই এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চাইবে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

বিএনপির সাথে সরকার-ছাত্রদের যেসব ইস্যুতে দূরত্ব

আপডেট সময় : ১০:২০:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট :বাংলাদেশে আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ছয় মাস পার না হতেই অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে, বিশেষ করে শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা রাখা ছাত্রদের সাথে নির্বাচনসহ কয়েকটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে এ সময়ের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সাথে দূরত্ব আরও প্রকট হয়ে ওঠার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে থাকা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নির্বাচন ও নির্বাচন পরিচালনাকারী সরকার নিয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন তাতে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্যের বিষয়টিই প্রকাশ পেয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু নির্বাচন বিষয়ক ইস্যুই নয়, বরং রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেয়া ও ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের উদ্যোগকে যেভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছে বিএনপি তা উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট ও দূরত্বের মাত্রা বাড়িয়েছে।

দুটো উদ্যোগই আন্দোলনকারী ছাত্রদের দিক থেকে এসেছিলো। এখন আবার নতুন করে ছাত্রদের দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর আগে জুলাই-অগাস্টের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে মন্তব্য করেছিলেন। সম্প্রতি বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, “আমরা তো চাই আর্লি ইলেকশন। আগেও বলেছি আমরা। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার, যেটা ন্যূনতম সংস্কার, সেগুলো করে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা”।

অন্যদিকে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন “বিএনপি কেন যেন মনে করে সরকারটা হয়েছে কেবল একটা নির্বাচন দেয়ার জন্য। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা সরকার আছে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য, যে সময়ে তারা বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন করবে”।

তিনি একই সাথে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে রয়েছেন।

মি. ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন ‘বিএনপি কিছু অপ্রয়োজনীয় দূরত্ব সরকার বা ছাত্রদের সাথে তৈরি করেছে’। তবে এটার প্রয়োজন ছিলো না বলেই তিনি মনে করেন।

যদিও মি. আলমগীর বিবিসিকে বলেছিলেন যে শুরু থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে তাদের যে সম্পর্ক ছিলো এখনো তেমনটিই আছে।

মি.আলমগীর বিভিন্ন বিষয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন তাতে নাহিদ ইসলাম ছাড়াও পাল্টা মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

আবার আবার বিএনপির দিক থেকে মি. আলমগীরের মন্তব্যকে সমর্থন করে কথা বলেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভিও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলছেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে যে মতপার্থক্যের শুরু হয়েছিলো বিএনপি ও সরকারের মধ্যে, সেটিই আরও প্রকট হয়েছে রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন ও জুলাই ঘোষণাপত্র ইস্যুতে এসে।

তার মতে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে এটি পরিষ্কার যে, তারা মনে করছেন বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে না দেয়া বা বিলম্ব করানোর একটা চেষ্টা সরকারের ঘনিষ্ঠ কোন কোন মহল করছে বলে তারা মনে করেন। এ কারণেই উভয় পক্ষের মধ্যে এখন মতপার্থক্য ক্রমাগত বাড়ছে বলে তার ধারণা।

আরেকজন বিশ্লেষক অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলছেন, নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে পরস্পরের ওপর যে আস্থার সংকট সেটাই উভয়পক্ষের মধ্যে দূরত্বের মূল ভিত্তি।

“আমার মনে হয় ছাত্ররা কতদূর যেতে চায় সেটা নিয়ে বিএনপিতে উদ্বেগ আছে, আবার ছাত্রদের মধ্যে উদ্বেগ আছে যে বিএনপি নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসলেও এখনকার সংস্কার কর্মসূচি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করবে কি না,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

নির্বাচনের সময়, রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন ও জুলাই ঘোষণাপত্র:
গত বছরের আটই অগাস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিএনপি দ্রুততম সময়ের নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ দাবি করে আসছিলো। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার প্রথম দুটি ভাষণে তা না থাকায় আক্ষেপও প্রকাশ করেছিলো দলটি।

পরে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় হিসেবে উল্লেখ করলেও তাতেও সন্তুষ্ট হয়নি বিএনপি।

বরং জামায়াতসহ কিছু দল ও সংগঠন নির্বাচনের আগে সংস্কারের বিষয়ে গুরুত্ব দিলে তাতের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিএনপি এবং এই ইস্যুতেই জামায়াতের সাথে দৃশ্যমান বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে দলটি।

এবার বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে মি. আলমগীর বলেছেন, ”উনি (প্রধান উপদেষ্টা) যতগুলো সংস্কারের মধ্যে হাত দিয়েছেন, অতগুলো সংস্কার করতে গেলে দশ বছরের মধ্যেও শেষ হবে না। আর সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। দু’বছর আগে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। তার মধ্যে এই বিষয়গুলি তো রয়েছে।”

নির্বাচনের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম তার সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেছেন, “বিএনপি কেন যেন মনে করে সরকারটা হয়েছে কেবল একটা নির্বাচন দেয়ার জন্য। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা সরকার আছে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য- যে সময়ে তারা বিচার সংস্কার ও নির্বাচন করবে।

“আমরা ছাত্ররা এসেছি ওয়াচডগের জন্য। কেবল নির্বাচনের জন্য আসিনি। বিচার একটা পর্যায়ে যেতে হবে,” বলেছেন তিনি

আবার অন্যদিকে গত অক্টোবরে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী তার লেখা এক রিপোর্টে উল্লেখ করেছিলেন যে রাষ্ট্রপতি তাকে বলেছেন ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোন দালিলিক প্রমাণ তার হাতে নেই’।

এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও তাদের ঘনিষ্ঠ জাতীয় নাগরিক কমিটি রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনে তীব্র চাপ সৃষ্টি করলেও ‘সাংবিধানিক সংকট’ হবে উল্লেখ করে বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতিকে আর পরিবর্তন করা যায়নি।

ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলছেন, “আমরা পছন্দের কাউকে রাষ্ট্রপতি করতে চাইনি। আমরা চেয়েছি এই রাষ্ট্রপতি সরে যাক। আমরা বলেছিলাম প্রয়োজনে সবাই মিলে একজনকে ঠিক করি। আমরা তো পছন্দের কাউকে রাষ্ট্রপতি করতে চাইনি”।

তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আপত্তির কারণ খুব সঙ্গত কারণ। আমরা তো একটা সংবিধানের অধীনে আছি। রাষ্ট্রের যে সংবিধান, সেই সংবিধানের অধীনে আমরা আছি। এই সরকারও শপথ নিয়েছে সেই সংবিধানের অধীনে। সেখানে রাষ্ট্রপতিকে যে অপসারণ করবে, সেটা কে করবে? এটা এক।”

”দুই নম্বর হচ্ছে, রাষ্ট্রপতি আনবেন কাকে? তিন নম্বর হচ্ছে, এটার লেজিটেমেসি কার হাতে থাকবে? পার্লামেন্ট নাই। সুতরাং ওই প্রশ্নটাকে আমরা মনে করি যে, অবাস্তব প্রশ্ন।”

অন্যদিকে জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলছেন ছাত্ররাই একাই তো এটা দিতে চেয়েছিলো কিন্তু সেখানে বিএনপি বাধা হয়ে দাঁড়ালো। বিএনপি মহাসচিব হন্তদন্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে গেলেন, বললেন এভাবে ছাত্ররা করলে অনৈক্য তৈরি হবে।

“ছাত্ররাও ভাবলো সবাই মিলেই করি। আলোচনার টেবিলে দিলো। এখন পর্যন্ত সমাধান হলো না। তারা আগ্রহী না এটা আগেই বলতে পারতো। কিন্তু তারা শঠতা ও প্রতারণা করে এটাকে বাধাগ্রস্ত করলো,” বলেছেন মি. ইসলাম।

তবে এ বিষয়ে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন ‘এটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনাও করা হয়নি আগে, আমরা জানিও না এটা। আর (অভ্যুত্থানের) পাঁচ মাস পরে এই ডিক্লারেশনের কোনো যুক্তি আছে কি না?’

তিনি বলেন, “এটা একটা অভ্যুত্থান, একটা আন্দোলন। সেই আন্দোলনের ডিক্লারেশন তখনই হওয়া উচিৎ ছিল। এটা ছাত্ররা তারা দিতেই পারে। কিন্তু আমরা ওটার পার্ট তখনই হবো, যখন গোটা জাতির প্রশ্নটা আসবে তার মধ্যে, টোটাল জিনিসটা। কোনো আলোচনা না করেই তো আমরা এটা করতে পারি না। প্রশ্নই উঠতে পারে না।”

এছাড়াও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও বিএনপির সাথে ছাত্রদের মতবিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসিকে বলেছেন ‘যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে রাজনীতি করে, তাদেরকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারটাতে আমরা কখনোই একমত হইনি। এটা আমরা বলেছি যে, জনগণ ডিসাইড করবে যে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে-কি হবে না।’

নাহিদ ইসলাম বলছেন, এ বিষয়ে সবার অবস্থান আরও পরিষ্কার করা দরকার।

“নিরপেক্ষ সরকারের নামে আওয়ামী লীগকে আশ্রয় দেয়ার ষড়যন্ত্র হলে মানবো না। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ও নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যবস্থা করানোর দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। আশা করি কেউ এ ষড়যন্ত্রে পা দিবে না”।
ওদিকে বিএনপি মহাসচিব যে বলেছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করলে সরকার থেকে বেরিয়ে এসে সেটা করা উচিত,তার জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেছেন সরকারে থেকে কেউ নির্বাচনে অংশ নিবে না।

“কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সরকার ছেড়ে দিবে। দল গঠনে প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চাইলে সরকার ছেড়ে দিবো”।

মিস্টার ইসলাম অভিযোগ করেছেন, উদ্দেশ্য করে না বলেও বিএনপির কথার টোন আওয়ামী লীগের সাথে মিলে যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, মি. আলমগীর বিবিসিকে বলেছেন যে তিনি মনে করেন সরকার থেকে বেরিয়ে ছাত্রদের দল গঠন করা উচিত।

“অর্থাৎ সরকারের কোনো সাহায্য না নিয়ে তারা যদি দল গঠন করতে চায়, সেটা তাদের জন্যই ভালো হবে,” বলেছেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেছেন যে ‘প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিএনপি পন্থী লোকজন আছে তাদের রেখে নির্বাচন সুষ্ঠও নিরপেক্ষ সম্ভব কি-না’।

“রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন, জুলাই প্রক্লেমেশন—এগুলো কিন্তু ছাত্রদের দলীয় দাবি ছিলো না। এটা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। সেটার ভিত্তিতে ছাত্রদের পক্ষ থেকে দাবি এসেছে। একটা ভয় কেন যেন বিএনপির মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। এটা অমূলক,” বলেছেন তিনি।

জনআকাঙ্খা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে দূরত্ব আরও বাড়বে’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলছেন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ইস্যুতে বিএনপির শক্ত অবস্থান নেয়াটাই আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে তাদের মতপার্থক্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলো।

“সাংবিধানিক সংকটের আশঙ্কার কথা বলে রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে এবং প্রয়োজনীয়তার প্রশ্ন তুলে জুলাই ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধে বিএনপির শক্ত অবস্থান ছিলো আন্দোলনকারী ছাত্রদের অবস্থানের বিরুদ্ধে একটা ধাক্কা। এছাড়া বিএনপি মাঝে মধ্যেই মাইনাস টু ফর্মুলার কথাও তুলে ধরছে। এসব ইস্যুতে শুধু সরকার বা আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে নয় বরং জামায়াতসহ ইসলামপন্থী দলগুলোর সাথেও বিএনপির ঠাণ্ডা লড়াই স্পষ্ট হয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তার মতে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসতে পারবে কি না তা জনগণের ওপর যেভাবে বিএনপি ছেড়ে দিতে চাইছে সেটি আন্দোলনকারী ছাত্ররা মেনে নিতে পারছে না, যা তাদের মধ্যকার বিরোধকে আরও চাঙ্গা করে তুলতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

“আন্দোলনকারী ছাত্ররা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে যেভাবে সিদ্ধান্ত দিয়ে দিচ্ছেন তা বিএনপি ভালোভাবে নিচ্ছে না। আবার সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠরা যেভাবে চব্বিশের আন্দোলনকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাথে তুলনা করে সেটাও বিএনপির জন্য অস্বস্তির। এ কারণেই ৭১ ইস্যুতে জোরালো অবস্থান নিয়েছে বিএনপি,” বলছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, শনিবারই চাঁদপুরে ছাত্র জনতার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন ‘আওয়ামী লীগকে কোনভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই আরেকজন শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলছেন, জনআকাঙ্খা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে উভয় পক্ষের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়বে বলেই মনে করেন তিনি।

“সমাধান হলো সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেটি কখন করা উচিত সে বিষয়ে ঐকমত্য হবে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া যতদিন যাবে তত অনিশ্চয়তা বাড়বে। তাদের মধ্যেও দূরত্ব বাড়বে। পাশাপাশি জনমনে আশঙ্কা ও অস্থিরতা বাড়বে কারণ অনেকেই এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চাইবে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।