ঢাকা ০৮:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কালিগঞ্জে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে কেড়ে নিল ১ কৃষকের লক্ষ টাকার স্বপ্ন ঢাকা সাভার আশুলিয়ায় ছুরিকাঘাতে পোশাক শ্রমিক নিহত, আটক ২ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হলে ভারতও ক্ষতিগ্রস্থ হবে—- সাতক্ষীরায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত মাদক সেবনের অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত চুয়াডাঙ্গা ভিমরুল্লার চঞ্চলসহ ৩জন গ্রেফতার হারুয়ালছড়ি বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার: বাকৃবির গবেষণা যে কারণে বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন স্বেচ্ছাসেবকরা নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে স্বীকৃত – স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজ ৭১ অনলাইন পোর্টালে”প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত আশাশুনির হাঁড়িভাঙ্গা বাজারে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বরগুনায় সাংবাদিক মাসউদ হত্যার অভিযোগে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৩৯:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মার্চ ২০২৪ ১০১ বার পড়া হয়েছে

||বরগুনায় সাংবাদিক মাসউদ হত্যার অভিযোগে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা||

নিজেস্ব প্রতিবেদক;
দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার বরগুনা সাংবাদিক তালুকদার মাসউদকে হত্যায় ১৩জনকে আসামী করে বরগুনা থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। সোমবার বেলা তিনটার দিকে নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোঃ মিজানুর রহমান।

জানা যায়, তালুকদার মাসউদ ১৯ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ টায় সাংবাদিক মুশফিক আরিফ, মিজানুর রহমান ও হারুন রহ রশিদ রিংকুর সঙ্গে বরগুনা প্রেসক্লাবে ক্যারাম খেলতে যায়। একটু পর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংবাদিক সোহেল হাফিজ প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে তাদের আগমন বিষয় জানতে চায়। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে যান তারা। ধীরে ধীরে প্রেসক্লাবের সদস্যরা আসতে থাকেন। কথা কাটাকাটিতে উত্তেজিত হয় উভয় পক্ষ। এক পর্যায় এজাহার ভুক্ত আসামী আ.স.ম হাফিজ আল আসাদ (সোহেল হাফিজ), আরিফুল ইসলাম মুরাদ (২৮), মোঃ কাসেম হাওলাদার (৩০), ফেরদৌস খান ইমন (৪০) মোঃ সাইফুল ইসলাম মিরাজ (৩০), মোঃ ছগির হোসেন টিটু (২৮), আঃ মালেক মিঠু (২৮) ওয়ালিউল্লাহ ইমরান (২৮), জাহিদুল ইসলাম মেহেদী (২৮), সোহাগ হাওলাদার (২৫), এ.এস.এম সিফাত (২৭), শহিদুল ইসলাম শহিদ (৪৫), ও মোঃ জাফর হোসেন হাওলাদার। এদের মধ্যে আ.স.ম হাফিজ আল আসাদ (সোহেল হাফিজ) এনটিভি, ফেরদৌস খান ইমন যমুনা টিভি, আঃ মালেক মিঠু ডিবিসি নিউজ, মোঃ সাইফুল ইসলাম মিরাজ সময় টেলিভিশন ও মোঃ জাফর হোসেন হাওলাদার মোহনা টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। এ ছাড়াও অজ্ঞাত আসামীরা মারধর শুরু করে। মারধরে এক পর্যায় তালুকদার মাসউদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পরে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। দ্রুত তালুকদার মাসউদকে এ্যাম্বুলেন্সে প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। বরগুনার চিকিৎসক মাসউদকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বরিশাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে প্রেরণ করেন। মাসউদ একটু সুস্থ হলে তাকে বরগুনার বাড়িতে নিয়ে আসে স্বজনরা। শনিবার আবার অসুস্থ হলে মাসউদকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। শনিবার রাত ১১ টায় মাসউদ মৃত্যু বরণ করে।

নিহত সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে গোরাপদ্মা এলাকার ইউপি আবদুল ওয়াহাব মাষ্টারের ছেলে। তিনি দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার বরগুনা জেলা প্রতিনিধি। এছাড়াও তিনি ওই এলাকার ইউপি সদস্য ছিলেন। তার স্ত্রী সাজেদা বেগম একজন স্কুলশিক্ষক, মেয়ে সাদিয়া তালুকদার তন্নি বরগুনা পলিটেকনিকে সিভিল প্রকৌশলে ৭ম সেমিস্টারে ও ছেলে তালুকদার তানহা বরগুনা জিলা স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত।

মাসউদের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, আমার স্বামী তালুকদার মাসউদ ভোরের ডাক পত্রিকায় কাজ করতেন। তিনি বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য হওয়ার আপ্রান চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে ২০১৫ সালের ২৯ জুলাই ‘বরগুনা জেলা প্রেসক্লাব’ নামে একটি সংগঠন করেন। এতে বরগুনা প্রেসক্লাবের নেতৃত্বস্থানীয় কিছু সদস্য তালুকদার মাসউদের উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। ওই আসামী ছাড়াও কিছু অজ্ঞাত আসামীরা আমার স্বামীকে সেই থেকে সহ্য করতে পারতেন না। ১৯ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টার বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য মুশফিক আরিফ, মিজান, রিংকুর সাথে বরগুনা প্রেসক্লাবে গিয়ে ক্যারাম খেলা শুরু করেন সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ। প্রেসক্লাবে মাসউদকে দেখে সোহেল হাফিজ তার দল নিয়ে তালুকদার মাসউদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্কের এক পর্যায়ে সোহেল হাফিজসহ অন্য আসামীরা প্রেসক্লাবের গেট বন্ধ করে হামলা চালায়। মুশফিক আরিফ, মিজান, রিংকুসহ অনেকে থামাবার চেস্টা করে ব্যর্থ হয়। মাসউদকে আসামীরা মারতে মারতে ফ্লোরে ফেলে হাটু দিয়ে বুকের উপর আঘাত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও আসামীরা গেট তালাবদ্ধ করে রাখে। প্রায় এক ঘন্টা প্রেসক্লাবে আটক থাকার পর বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মিজানুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত বশিরুল আলম প্রেসক্লাবে প্রবেশ করে মাসউদকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার ১৩ দিন পর শনিবার (০২ মার্চ) রাত ১১ টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তালুকদার মাসউদ।
মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী মুশফিক আরিফ, মিজানুর রহমান ও হারুন অর রশিদ রিংকু বলেন, ওই আসামীরাসহ অজ্ঞাত আসামীরা মাসউদ তালুকদারকে অমানষিক ভাবে নির্যাতন করেছে। আমরা থামাতে গেলে আমাদের লাঞ্ছিত করে। আঘাতের ফলে মাসউদ তালুকদার মারা যায়।

এ বিষয়ে বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা কাদেরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। সাবেক সভাপতি মোঃ হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, তালুকদার মাসউদের মৃত্যুর ঘটনায় আমি ব্যথিত। থানায় মামলা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন, আমি আশা করি তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, সাংবাদিক তালুকদার মাসউদের মৃত্যুর ঘটনাটি দুঃখজনক। তার স্ত্রী সাজেদা বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। আমরা আসামীদের যতদ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছি।

রোববার বিকেলে তালুকদার মাসউদের মরদেহ বরিশাল হাসপাতাল থেকে বরগুনায় নিয়ে আসা হয়। পৌরসভা ভবনের পশ্চিম পাশের মাঠে জানাজা শেষে ঐ রাতে মাসউদের গ্রামের বাড়ি নলটোনা ইউনিয়নের গোরাপদ্মা নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমি এই প্লাটফর্মটি তৈরী করেছি এ দেশের সাধারণ মানুষের কন্ঠস্বর হিসাবে পরিচালিত করার জন্য।আমরা অবিরত থাকবো সততা নিয়ে সত্যের সাথে। দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা এ দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত গনমানুষের কথা বলবে এবং সত্য প্রকাশে থাকবে আপোষহীন।
ট্যাগস :

বরগুনায় সাংবাদিক মাসউদ হত্যার অভিযোগে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ০২:৩৯:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মার্চ ২০২৪

||বরগুনায় সাংবাদিক মাসউদ হত্যার অভিযোগে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা||

নিজেস্ব প্রতিবেদক;
দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার বরগুনা সাংবাদিক তালুকদার মাসউদকে হত্যায় ১৩জনকে আসামী করে বরগুনা থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। সোমবার বেলা তিনটার দিকে নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোঃ মিজানুর রহমান।

জানা যায়, তালুকদার মাসউদ ১৯ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ টায় সাংবাদিক মুশফিক আরিফ, মিজানুর রহমান ও হারুন রহ রশিদ রিংকুর সঙ্গে বরগুনা প্রেসক্লাবে ক্যারাম খেলতে যায়। একটু পর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংবাদিক সোহেল হাফিজ প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে তাদের আগমন বিষয় জানতে চায়। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে যান তারা। ধীরে ধীরে প্রেসক্লাবের সদস্যরা আসতে থাকেন। কথা কাটাকাটিতে উত্তেজিত হয় উভয় পক্ষ। এক পর্যায় এজাহার ভুক্ত আসামী আ.স.ম হাফিজ আল আসাদ (সোহেল হাফিজ), আরিফুল ইসলাম মুরাদ (২৮), মোঃ কাসেম হাওলাদার (৩০), ফেরদৌস খান ইমন (৪০) মোঃ সাইফুল ইসলাম মিরাজ (৩০), মোঃ ছগির হোসেন টিটু (২৮), আঃ মালেক মিঠু (২৮) ওয়ালিউল্লাহ ইমরান (২৮), জাহিদুল ইসলাম মেহেদী (২৮), সোহাগ হাওলাদার (২৫), এ.এস.এম সিফাত (২৭), শহিদুল ইসলাম শহিদ (৪৫), ও মোঃ জাফর হোসেন হাওলাদার। এদের মধ্যে আ.স.ম হাফিজ আল আসাদ (সোহেল হাফিজ) এনটিভি, ফেরদৌস খান ইমন যমুনা টিভি, আঃ মালেক মিঠু ডিবিসি নিউজ, মোঃ সাইফুল ইসলাম মিরাজ সময় টেলিভিশন ও মোঃ জাফর হোসেন হাওলাদার মোহনা টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। এ ছাড়াও অজ্ঞাত আসামীরা মারধর শুরু করে। মারধরে এক পর্যায় তালুকদার মাসউদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পরে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। দ্রুত তালুকদার মাসউদকে এ্যাম্বুলেন্সে প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। বরগুনার চিকিৎসক মাসউদকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বরিশাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে প্রেরণ করেন। মাসউদ একটু সুস্থ হলে তাকে বরগুনার বাড়িতে নিয়ে আসে স্বজনরা। শনিবার আবার অসুস্থ হলে মাসউদকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। শনিবার রাত ১১ টায় মাসউদ মৃত্যু বরণ করে।

নিহত সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে গোরাপদ্মা এলাকার ইউপি আবদুল ওয়াহাব মাষ্টারের ছেলে। তিনি দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার বরগুনা জেলা প্রতিনিধি। এছাড়াও তিনি ওই এলাকার ইউপি সদস্য ছিলেন। তার স্ত্রী সাজেদা বেগম একজন স্কুলশিক্ষক, মেয়ে সাদিয়া তালুকদার তন্নি বরগুনা পলিটেকনিকে সিভিল প্রকৌশলে ৭ম সেমিস্টারে ও ছেলে তালুকদার তানহা বরগুনা জিলা স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত।

মাসউদের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, আমার স্বামী তালুকদার মাসউদ ভোরের ডাক পত্রিকায় কাজ করতেন। তিনি বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য হওয়ার আপ্রান চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে ২০১৫ সালের ২৯ জুলাই ‘বরগুনা জেলা প্রেসক্লাব’ নামে একটি সংগঠন করেন। এতে বরগুনা প্রেসক্লাবের নেতৃত্বস্থানীয় কিছু সদস্য তালুকদার মাসউদের উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। ওই আসামী ছাড়াও কিছু অজ্ঞাত আসামীরা আমার স্বামীকে সেই থেকে সহ্য করতে পারতেন না। ১৯ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টার বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য মুশফিক আরিফ, মিজান, রিংকুর সাথে বরগুনা প্রেসক্লাবে গিয়ে ক্যারাম খেলা শুরু করেন সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ। প্রেসক্লাবে মাসউদকে দেখে সোহেল হাফিজ তার দল নিয়ে তালুকদার মাসউদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্কের এক পর্যায়ে সোহেল হাফিজসহ অন্য আসামীরা প্রেসক্লাবের গেট বন্ধ করে হামলা চালায়। মুশফিক আরিফ, মিজান, রিংকুসহ অনেকে থামাবার চেস্টা করে ব্যর্থ হয়। মাসউদকে আসামীরা মারতে মারতে ফ্লোরে ফেলে হাটু দিয়ে বুকের উপর আঘাত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও আসামীরা গেট তালাবদ্ধ করে রাখে। প্রায় এক ঘন্টা প্রেসক্লাবে আটক থাকার পর বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মিজানুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত বশিরুল আলম প্রেসক্লাবে প্রবেশ করে মাসউদকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার ১৩ দিন পর শনিবার (০২ মার্চ) রাত ১১ টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তালুকদার মাসউদ।
মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী মুশফিক আরিফ, মিজানুর রহমান ও হারুন অর রশিদ রিংকু বলেন, ওই আসামীরাসহ অজ্ঞাত আসামীরা মাসউদ তালুকদারকে অমানষিক ভাবে নির্যাতন করেছে। আমরা থামাতে গেলে আমাদের লাঞ্ছিত করে। আঘাতের ফলে মাসউদ তালুকদার মারা যায়।

এ বিষয়ে বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা কাদেরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। সাবেক সভাপতি মোঃ হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, তালুকদার মাসউদের মৃত্যুর ঘটনায় আমি ব্যথিত। থানায় মামলা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন, আমি আশা করি তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, সাংবাদিক তালুকদার মাসউদের মৃত্যুর ঘটনাটি দুঃখজনক। তার স্ত্রী সাজেদা বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। আমরা আসামীদের যতদ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছি।

রোববার বিকেলে তালুকদার মাসউদের মরদেহ বরিশাল হাসপাতাল থেকে বরগুনায় নিয়ে আসা হয়। পৌরসভা ভবনের পশ্চিম পাশের মাঠে জানাজা শেষে ঐ রাতে মাসউদের গ্রামের বাড়ি নলটোনা ইউনিয়নের গোরাপদ্মা নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।