ঢাকা ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাজাপুরে জমি দখল করতে গিয়ে গাছ কেটে তিন লাখ টাকার ক্ষতির অভিযোগ তানোরে নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে বিএনপির নেতা কর্মীদের সৌজন্য সাক্ষাৎ হরিপুরে স্বপ্নসারথী গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান ২০২৫ সর্বস্তরের জনগণ প্রথম আলো ও ইনকিলাব পত্রিকায় সাতক্ষীরার উন্নয়নের বিভ্রান্তিকর সংবাদের প্রতিবাদে মানববন্ধন মুন্ডুমালা বাজারে অব্যবস্হাপনায় ও যানজটে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেই সংযোগ সড়ক,২৭ লাখ টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে নোয়াখালী সংগঠকদের নিয়ে এবি পাটির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় দুমকীতে গাঁজা সেবনে বৃদ্ধকে এক মাসের কারাদণ্ড দুমকীতে ডেঙ্গুর ছোবলে প্রাণ হারালেন ছাত্র হিজবুল্লাহ নেতা জাকারিয়া র‌্যাবের অভিযানে নীলফামারীর চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার পলাতক অভিযুক্ত গ্রেফতার

প্রথমবারের মত মৃগীরোগীর মাথার খুলিতে যন্ত্র স্থাপন

নিজেস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৯:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪ ৮১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
গুরুতর মৃগীরোগে আক্রান্ত যুক্তরাজ্যের এক কিশোরের মাথার খুলিতে একটি নতুন যন্ত্র (ডিভাইস) স্থাপন করা হয়েছে। খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বে এই প্রথম কোনো মৃগীরোগীর খুলিতে পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্র স্থাপন করা হলো।

মৃগীরোগে আক্রান্ত কিশোরটির নাম ওরান নোলসন। যন্ত্রটি (নিউরোস্টিমুলেটর) ওরানের মস্তিষ্কের গভীরে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠায়, যা তার দিনের বেলার খিঁচুনি ৮০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে।ওরানের মা জাস্টিন নোলসন বিবিসিকে বলেছেন, যন্ত্র স্থাপনের পর ওরান আগের চেয়ে উৎফুল্ল সময় পার করছে। তার জীবন আগের চেয়ে অনেক ভালো কাটছে।পরীক্ষার (ট্রায়াল) অংশ হিসেবে গত বছরের অক্টোবরে লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওরানের খুলিতে যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়। তখন ওরানের বয়স ছিল ১২ বছর। এখন তার বয়স ১৩ বছর।যুক্তরাজ্যের সমারসেটের বাসিন্দা ওরান। তার লেনক্স-গ্যাস্টট সিনড্রোম রয়েছে। এটি মৃগীরোগের একটি মারাত্মক পর্যায়, যা শিশুদের স্নায়ুকে শৈশব থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।তিন বছর বয়সে ওরানের এই রোগ হয়। তখন থেকে ওরানের দুর্বিষহ ভোগান্তির শুরু। দিনে দুই ডজন থেকে শতাধিকবার পর্যন্ত তার খিঁচুনি হয়েছে।

অস্ত্রোপচারের আগে গত শরতে ওরানের মায়ের সঙ্গে প্রথম কথা বলে বিবিসি। তখন তিনি কীভাবে মৃগীরোগ ওরানের জীবনকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে তার বিবরণ দিয়েছিলেন। তাঁর ভাষ্যে, এই রোগ ওরানের শৈশব কেড়ে নেয়।ওরানের মা জাস্টিন বলেছিলেন, তাঁর ছেলের বিভিন্ন ধরনের খিঁচুনি রয়েছে। সে মাটিতে পড়ে যায়। প্রচণ্ডভাবে কাঁপে। জ্ঞান হারায়।জাস্টিন আরও বলেছিলেন, মাঝেমধ্যে তাঁর ছেলের শ্বাস বন্ধ হয়ে যেত। তখন তাকে বাঁচাতে জরুরি ওষুধের প্রয়োজন হতো।ওরানের অটিজম আছে। আছে অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি)। বাংলায় এই সমস্যাকে (এডিএইচডি) বলে অতিচঞ্চল অমনোযোগিতা। এটি শিশুর একধরনের স্নায়ু বিকাশজনিত সমস্যা।তবে জাস্টিন বলেন, তাঁর ছেলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো মৃগীরোগ। তাঁর তিন বছর বয়সী ছেলেটি ছিল মোটামুটি বুদ্ধিদীপ্ত, সম্ভাবনাময়। কিন্তু খিঁচুনি শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। সে অনেক দক্ষতা হারিয়ে ফেলে।ওরান হলো সিএডিইটি প্রকল্পের একটি অংশ। এই প্রকল্পের আওতায় ক্রমিক পরীক্ষা (ট্রায়াল) চালানো হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য গুরুতর মৃগীরোগীর ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের গভীরে উদ্দীপনা পাঠানোর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা।

প্রকল্পটিতে গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতাল, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, কিংস কলেজ হাসপাতাল ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীদারত্ব আছে।পিকোস্টিম নিউরোট্রান্সমিটারটি তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যের কোম্পানি অ্যাম্বার থেরাপিউটিকস।মস্তিষ্কে সব সময়ই বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ ঘটে। মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক কার্যকলাপের বিস্ফোরণ হলে মৃগীরোগীর খিঁচুনি শুরু হয়। যন্ত্রটি অবিরাম বৈদ্যুতিক স্পন্দন পাঠিয়ে মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক সংকেতগুলোকে ব্লক বা ব্যাহত করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

প্রথমবারের মত মৃগীরোগীর মাথার খুলিতে যন্ত্র স্থাপন

আপডেট সময় : ০৫:৪৯:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
গুরুতর মৃগীরোগে আক্রান্ত যুক্তরাজ্যের এক কিশোরের মাথার খুলিতে একটি নতুন যন্ত্র (ডিভাইস) স্থাপন করা হয়েছে। খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বে এই প্রথম কোনো মৃগীরোগীর খুলিতে পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্র স্থাপন করা হলো।

মৃগীরোগে আক্রান্ত কিশোরটির নাম ওরান নোলসন। যন্ত্রটি (নিউরোস্টিমুলেটর) ওরানের মস্তিষ্কের গভীরে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠায়, যা তার দিনের বেলার খিঁচুনি ৮০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে।ওরানের মা জাস্টিন নোলসন বিবিসিকে বলেছেন, যন্ত্র স্থাপনের পর ওরান আগের চেয়ে উৎফুল্ল সময় পার করছে। তার জীবন আগের চেয়ে অনেক ভালো কাটছে।পরীক্ষার (ট্রায়াল) অংশ হিসেবে গত বছরের অক্টোবরে লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওরানের খুলিতে যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়। তখন ওরানের বয়স ছিল ১২ বছর। এখন তার বয়স ১৩ বছর।যুক্তরাজ্যের সমারসেটের বাসিন্দা ওরান। তার লেনক্স-গ্যাস্টট সিনড্রোম রয়েছে। এটি মৃগীরোগের একটি মারাত্মক পর্যায়, যা শিশুদের স্নায়ুকে শৈশব থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।তিন বছর বয়সে ওরানের এই রোগ হয়। তখন থেকে ওরানের দুর্বিষহ ভোগান্তির শুরু। দিনে দুই ডজন থেকে শতাধিকবার পর্যন্ত তার খিঁচুনি হয়েছে।

অস্ত্রোপচারের আগে গত শরতে ওরানের মায়ের সঙ্গে প্রথম কথা বলে বিবিসি। তখন তিনি কীভাবে মৃগীরোগ ওরানের জীবনকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে তার বিবরণ দিয়েছিলেন। তাঁর ভাষ্যে, এই রোগ ওরানের শৈশব কেড়ে নেয়।ওরানের মা জাস্টিন বলেছিলেন, তাঁর ছেলের বিভিন্ন ধরনের খিঁচুনি রয়েছে। সে মাটিতে পড়ে যায়। প্রচণ্ডভাবে কাঁপে। জ্ঞান হারায়।জাস্টিন আরও বলেছিলেন, মাঝেমধ্যে তাঁর ছেলের শ্বাস বন্ধ হয়ে যেত। তখন তাকে বাঁচাতে জরুরি ওষুধের প্রয়োজন হতো।ওরানের অটিজম আছে। আছে অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি)। বাংলায় এই সমস্যাকে (এডিএইচডি) বলে অতিচঞ্চল অমনোযোগিতা। এটি শিশুর একধরনের স্নায়ু বিকাশজনিত সমস্যা।তবে জাস্টিন বলেন, তাঁর ছেলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো মৃগীরোগ। তাঁর তিন বছর বয়সী ছেলেটি ছিল মোটামুটি বুদ্ধিদীপ্ত, সম্ভাবনাময়। কিন্তু খিঁচুনি শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। সে অনেক দক্ষতা হারিয়ে ফেলে।ওরান হলো সিএডিইটি প্রকল্পের একটি অংশ। এই প্রকল্পের আওতায় ক্রমিক পরীক্ষা (ট্রায়াল) চালানো হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য গুরুতর মৃগীরোগীর ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের গভীরে উদ্দীপনা পাঠানোর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা।

প্রকল্পটিতে গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতাল, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, কিংস কলেজ হাসপাতাল ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীদারত্ব আছে।পিকোস্টিম নিউরোট্রান্সমিটারটি তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যের কোম্পানি অ্যাম্বার থেরাপিউটিকস।মস্তিষ্কে সব সময়ই বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ ঘটে। মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক কার্যকলাপের বিস্ফোরণ হলে মৃগীরোগীর খিঁচুনি শুরু হয়। যন্ত্রটি অবিরাম বৈদ্যুতিক স্পন্দন পাঠিয়ে মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক সংকেতগুলোকে ব্লক বা ব্যাহত করে।