ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আগৈলঝাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত পুতনি ধর্ষণ মামলায় দাদা কারাগারে – বাবার মুক্তির দাবিতে সন্তানদের সংবাদ সম্মেলন চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ছয়ঘরিয়ায় রিয়াদ হোসেন (১৩) নামের এক স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দেবহাটা আওয়ামী লীগের সাবেক কলেজ সভাপতি গ্রেফতার শরীয়তের জাহাজ খ্যাত একজন আলেম ছিলেন অধ্যক্ষ নুরুল মোনাওয়ার (র:)– ওরশ মাহফিলে বক্তারা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এক দফায় কমপ্লিট ‘শাটডাউন’ ঘোষণা যশোর লেবুতলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়ে যুবকের মৃত্যু গাবুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত সভাপতি মাস্টার মতিয়ার রহমানের প্রথম পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত আগৈলঝাড়ায় এসিল্যান্ডের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেলো এক কিশোরী মণিরামপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবাসহ যুবক গ্রেফতার

পাকিস্তানে নারীর পোশাকে আরবি লেখা, ব্লাসফেমির অভিযোগে উত্তেজিত জনতা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৮:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৪৩ বার পড়া হয়েছে

পাকিস্তানে নারীর পোশাকে আরবি লেখা, ব্লাসফেমির অভিযোগে উত্তেজিত জনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোববার পাকিস্তানের পাঞ্জাবের কয়েকটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায় একটির রেস্তোরাঁর এক কোণে দু’হাত দিয়ে মুখ ঢেকে একজন নারী বসে আছেন। আর সামনে বিক্ষুব্ধ জনতার ভিড়।

যাদের কেউ কেউ চিৎকার করে তার ‘শার্ট’ খুলে ফেলতে বলছেন। কেউ কেউ বলছেন, যারা ব্লাসফেমি (ধর্ম অবমাননা) করে তাদের শিরশ্ছেদ করা উচিত।

পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে ওই রেস্তোরাঁয় আসা নারীটির পোশাকে আরবি ক্যালিগ্রাফি ছিল। স্থানীয়দের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, সেখানে কোরানের আয়াত লেখা।

ফলে, অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক বিক্ষুব্ধ লোক জড়ো হয়ে যান সেখানে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

প্রায় ৩০০ লোক সেখানে ভিড় করেছিল বলে বিবিসিকে জানায় পুলিশ। রোববার স্থানীয় সময় দুপুরে তারা এ ব্যাপারে একটি কল পান।

সহকারী পুলিশ সুপার সাইয়েদা শেহরবানোর নেতৃত্বে একটি দল ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। তারা দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেন।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শেহরবানো রেস্তোরাঁর প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে ক্রমশ উত্তেজিত হয়ে ওঠা জনতার মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে বলছেন তাদের।

“কেউ আসলে জানত না শার্টে কি লেখা ছিল,” বলছিলেন শেহরবানো।
পোশাকটিতে ক্যালিগ্রাফি করা আরবি হরফে “হালওয়া” শব্দটি মুদ্রিত ছিল। আরবি ভাষায় ‘হালওয়া’ শব্দের অর্থ মিষ্টি। ‘সুন্দর’ অর্থেও ব্যবহৃত হয় শব্দটি।

কিন্তু স্থানীয়রা সেটিকে ভুল করে কোরানের আয়াত ভেবেছিল।

পুলিশের সহকারী সুপারিটেনডেন্ট শেহরবানো বলেন, “সবচেয়ে দুঃসাধ্য কাজ ছিলো ওই নারীকে নিরাপদে ওই জায়গা থেকে বের করে আনা।”

ভুক্তভোগীকে একটি বোরকার সঙ্গে হিজাবের মতো করে মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে বের করে নিয়ে আসেন তিনি। এ সময় তাদের বেষ্টন করেছিল পুলিশ সদস্যরা। উত্তেজনামুখর পরিস্থিতিতে একরকম দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তারা।

কট্টরপন্থী দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) এর সমর্থকরা ভিড়ের মধ্যে ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মিজ শেহরবানো জানান, তাকে সমবেত লোকজনের সাথে রীতিমত “আলোচনা” করতে হয়েছিল।

“আমরা তাদের বলি, এই নারীকে আমাদের সাথে করে নিয়ে যাবো, তার কর্মকাণ্ড আইনিভাবে আমলে নেয়া হবে এবং দেশের আইন অনুসারে যদি তিনি কোনো অপরাধ করে থাকেন তবে অবশ্যই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে,” যোগ করেন তিনি।

তাকে একটি থানায় যাওয়া হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন আলেমের মতামত নেয় হয়। তারা নিশ্চিত করেন যে, পোশাকের লেখাটিতে আরবি ক্যালিগ্রাফিই ছিল, কোরানের আয়াত নয়।

তখন পুলিশ আলেমদের একটি ভিডিও রেকর্ড করতে বলে। ভিডিওতে তাদের মতামত এবং নারীটি যে নির্দোষ সেটি উল্লেখ করা হয়।

পাকিস্তানে ব্লাসফেমির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এমনকি মামলার বিচারের আগেই পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনাও আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

পাকিস্তানে নারীর পোশাকে আরবি লেখা, ব্লাসফেমির অভিযোগে উত্তেজিত জনতা

আপডেট সময় : ১১:৫৮:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পাকিস্তানে নারীর পোশাকে আরবি লেখা, ব্লাসফেমির অভিযোগে উত্তেজিত জনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোববার পাকিস্তানের পাঞ্জাবের কয়েকটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায় একটির রেস্তোরাঁর এক কোণে দু’হাত দিয়ে মুখ ঢেকে একজন নারী বসে আছেন। আর সামনে বিক্ষুব্ধ জনতার ভিড়।

যাদের কেউ কেউ চিৎকার করে তার ‘শার্ট’ খুলে ফেলতে বলছেন। কেউ কেউ বলছেন, যারা ব্লাসফেমি (ধর্ম অবমাননা) করে তাদের শিরশ্ছেদ করা উচিত।

পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে ওই রেস্তোরাঁয় আসা নারীটির পোশাকে আরবি ক্যালিগ্রাফি ছিল। স্থানীয়দের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, সেখানে কোরানের আয়াত লেখা।

ফলে, অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক বিক্ষুব্ধ লোক জড়ো হয়ে যান সেখানে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

প্রায় ৩০০ লোক সেখানে ভিড় করেছিল বলে বিবিসিকে জানায় পুলিশ। রোববার স্থানীয় সময় দুপুরে তারা এ ব্যাপারে একটি কল পান।

সহকারী পুলিশ সুপার সাইয়েদা শেহরবানোর নেতৃত্বে একটি দল ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। তারা দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেন।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শেহরবানো রেস্তোরাঁর প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে ক্রমশ উত্তেজিত হয়ে ওঠা জনতার মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে বলছেন তাদের।

“কেউ আসলে জানত না শার্টে কি লেখা ছিল,” বলছিলেন শেহরবানো।
পোশাকটিতে ক্যালিগ্রাফি করা আরবি হরফে “হালওয়া” শব্দটি মুদ্রিত ছিল। আরবি ভাষায় ‘হালওয়া’ শব্দের অর্থ মিষ্টি। ‘সুন্দর’ অর্থেও ব্যবহৃত হয় শব্দটি।

কিন্তু স্থানীয়রা সেটিকে ভুল করে কোরানের আয়াত ভেবেছিল।

পুলিশের সহকারী সুপারিটেনডেন্ট শেহরবানো বলেন, “সবচেয়ে দুঃসাধ্য কাজ ছিলো ওই নারীকে নিরাপদে ওই জায়গা থেকে বের করে আনা।”

ভুক্তভোগীকে একটি বোরকার সঙ্গে হিজাবের মতো করে মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে বের করে নিয়ে আসেন তিনি। এ সময় তাদের বেষ্টন করেছিল পুলিশ সদস্যরা। উত্তেজনামুখর পরিস্থিতিতে একরকম দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তারা।

কট্টরপন্থী দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) এর সমর্থকরা ভিড়ের মধ্যে ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মিজ শেহরবানো জানান, তাকে সমবেত লোকজনের সাথে রীতিমত “আলোচনা” করতে হয়েছিল।

“আমরা তাদের বলি, এই নারীকে আমাদের সাথে করে নিয়ে যাবো, তার কর্মকাণ্ড আইনিভাবে আমলে নেয়া হবে এবং দেশের আইন অনুসারে যদি তিনি কোনো অপরাধ করে থাকেন তবে অবশ্যই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে,” যোগ করেন তিনি।

তাকে একটি থানায় যাওয়া হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন আলেমের মতামত নেয় হয়। তারা নিশ্চিত করেন যে, পোশাকের লেখাটিতে আরবি ক্যালিগ্রাফিই ছিল, কোরানের আয়াত নয়।

তখন পুলিশ আলেমদের একটি ভিডিও রেকর্ড করতে বলে। ভিডিওতে তাদের মতামত এবং নারীটি যে নির্দোষ সেটি উল্লেখ করা হয়।

পাকিস্তানে ব্লাসফেমির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এমনকি মামলার বিচারের আগেই পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনাও আছে।