পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাওয়াই এখন অগ্রাধিকার
																
								
							
                                - আপডেট সময় : ০৮:৫২:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ৯০ বার পড়া হয়েছে
 

নিজেস্ব প্রতিবেদক: চীনের রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন পরিকল্পনা গুলো বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাও এখন অগ্রাধিকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চীন সফরে আলোচিত পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাওয়া এখন আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। আমরা চাই না এই গতি হারিয়ে ফেলি। রোববার (২০ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকে সম্প্রতি তার চীন সফরের ফলাফল পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতা জোরদারে পরবর্তী করণীয় নিয়ে উভয়ের আলোচনা হয়। বৈঠকে উভয়ে অবকাঠামো, বাণিজ্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন খাতে আলোচনা থেকে বাস্তব প্রকল্পে রূপান্তরের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে একমত পোষণ করে বলেন, এটি আমরাও অগ্রাধিকার দিচ্ছি। চীন সফরে উচ্চপর্যায়ের আলোচনাগুলো হয়েছে, এবং আমরা চাই না আবার দুই-তিন বছর কেবল চুক্তি সইয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হোক-আমরা দ্রুত বাস্তবায়নে যেতে চাই।
বৈঠকে মংলা ও আনোয়ারা অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, প্রস্তুতির কাজ চলছে এবং প্রস্তুতি শেষ হলে ডেভেলপারদের কাছে অঞ্চলগুলো হস্তান্তর করা হবে।
চীন থেকে চারটি নতুন জাহাজ সংগ্রহের পরিকল্পনাও আলোচনায় উঠে আসে। চীনা পক্ষ জানায়, আগামী জুনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, শিগগির চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসবেন এবং তার সঙ্গে প্রায় ১০০ সদস্যের বিনিয়োগকারী প্রতিনিধিদল থাকবেন, যারা নতুন বিনিয়োগ সম্ভাবনা অনুসন্ধান করবেন।
বিডা চেয়ারম্যান আশিক বলেন, আমরা চীনা বিনিয়োগকারীদের নিয়ে একটি ক্ষুদ্র বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করবো, যা খাতভিত্তিক সহযোগিতা জোরদারে সহায়ক হবে।
স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতা বৈঠকের একটি প্রধান বিষয় ছিল। চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা বাংলাদেশে প্রস্তাবিত ১,০০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট স্থাপনে চলমান সহায়তার কথাও তারা উল্লেখ করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, কুনমিং-চট্টগ্রাম সরাসরি ফ্লাইট চালুর অগ্রগতি হচ্ছে এবং বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চিকিৎসা ভিসা দ্রুত প্রাপ্তির ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক বিনিময় প্রসঙ্গে গুরুত্বারোপ করে বলেন, আমরা চাই একটি চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হোক, যাতে আমাদের তরুণরা চীনা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত হতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, বিশেষ করে তিস্তা নদী ব্যবস্থা নিয়ে ৫০ বছরের মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা চীনে পাট রপ্তানি সম্প্রসারণের প্রস্তাব তোলেন এবং রেল ইঞ্জিন খাতে চীনের আরও বিনিয়োগ আহ্বান করেন। তিনি চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুরে রেল ইঞ্জিন উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগের প্রস্তাব দেন।
কৃষিপণ্য বাণিজ্যেও অগ্রগতির কথা উঠে আসে। এ মৌসুমেই বাংলাদেশ থেকে চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে, আর আগামী বছর থেকে কাঁঠাল রপ্তানি করা হবে। আমি নিজেই প্রেসিডেন্ট শি’কে একটা তাজা আমের ঝুড়ি পাঠাব,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমান, বিডা চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফাইজ তাইয়েব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া ও এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ।
																			
										



















