নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উৎযাপন
- আপডেট সময় : ১০:১৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪ ৭০ বার পড়া হয়েছে
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উৎযাপন করা হয়েছে।
আজ রোববার (১৭ মার্চ)। দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি ও ‘প্রধান ফটক’-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদ্যাপন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সকালে শিশুদের নিয়ে ‘গাহি সাম্যের গান’ মঞ্চে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়। কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরসহ অন্যরা চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা পরিদর্শন করেন। এরপর সেখান থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে গিয়ে জমায়েত হয়। পরে ভাস্কর্যে বিশ^বিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এরপরে ডীন অফিস, বিভাগীয় অফিস, হল প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারী সমিতি (১১-১৬ গ্রেড), কর্মচারী ইউনিয়ন (১৭-২০ গ্রেড), বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, কবি নজরুল বিশ^বিদ্যালয় স্কুলসহ অন্যান্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জীবনদানকারী প্রত্যেককে স্মরণ করেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে উপাচার্য বঙ্গবন্ধুর জীবনের অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা তুলে ধরেন। তিনি ধর্ম নিয়ে রাজনীতির চরমবিরোধী ছিলেন জানিয়ে প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বঙ্গবন্ধুর ধর্ম নিরপেক্ষতা শব্দ নিয়ে তাঁর সমকালে ও উত্তরকালে অনেকেই জল ঘোলা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর স্পষ্ট অবস্থান; ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্ম হীনতা নয় তবে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করাকে তিনি অপছন্দ করেছেন এবং তিনি এটিকে বরদাস্ত করেন নি। সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা নীতি গ্রহণ বঙ্গবন্ধুর কোনো লোক দেখানো রাজনীতি ছিল না। এর প্রমাণ হিসেবে দেখা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক ঘোষণা হিসেবে চিহ্নিত সাত মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক চেতনাকেই উর্ধ্বে তুলে ধরেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ভ্রাতৃভাবে বাঙালি, অবাঙালি, হিন্দু, মুসলমান এই বাংলাদেশে বাস করবেনÑএটিই ছিল বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন। যে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে এ মহান মানুষটিকে ঘাতকেরা সময় দেয় নি। বঙ্গবন্ধুর দেহান্তর হয়েছে সত্য, তাকে হত্যা করা হয়েছে সত্য কিন্তু বাঙালির সামনে রয়ে গেছে বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও তাঁর রাজনীতির সুবর্ণ রেখা। এখন আমাদের সময় তাঁর আদর্শকে অবলম্বন করে এগিয়ে যাওয়া। আজকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে এই হোক প্রত্যয়, এই হোক শপথ।
আয়োজক কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার। আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. তুষার কান্তি সাহা, ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ মো. জালাল উদ্দিন, কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল, কর্মচারী সমিতি (গ্রেড ১১-১৬) সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, কর্মচারী ইউনিয়ন ( গ্রেড ১৭-২০) সভাপতি রেজাউল করিম রানাসহ অন্যরা। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আয়োজক কমিটির সদস্য-সচিব কল্যানাংশু নাহা। সঞ্চালনা করেন সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদুর রহমান।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। বাদ মাগরিব বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে। সন্ধ্যা সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে কেক কাটা হবে, সাতটায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।