ধরা পড়েও রেহাই চিহ্নিত চোর মোজাহিদকে শুধু জরিমানা করে ছেড়ে দিলেন বণিক সমিতি

- আপডেট সময় : ০১:০৩:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক, ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:-
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের প্রতাপকাটি গ্রামে পান চুরি করে আবারও আলোচনায় এসেছে এলাকার চিহ্নিত মাদকাসক্ত ও পেশাদার চোর মোজাহিদ (২২)। সে উপজেলার বারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, ডাব ব্যবসায়ী কামাল হোসেনের ছেলে।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। প্রতাপকাটি গ্রামের কৃষক শ্রী নির্মল কুমারের পান বরজে গোপনে ঢুকে পান চুরি করে মোজাহিদ। পরে সেই চোরাই পান বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকুরিয়া বাজারে গেলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। বিষয়টি জানানো হয় ঢাকুরিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুল হান্নানকে। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোজাহিদকে পানসহ বণিক সমিতির অফিসে নিয়ে যান।
তবে এখানেই শুরু হয় বিতর্ক। বণিক সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশে না দিয়ে মোজাহিদের বাবাকে ডেকে এনে মাত্র ২,০০০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, “একজন পেশাদার চোর ও মাদকাসক্তকে এইভাবে ছেড়ে দেওয়া কি অপরাধকে উৎসাহ দেওয়া নয়?”
স্থানীয়দের অভিযোগ, পান চুরির আগেও মোজাহিদের বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সে নিজের বাড়ির পাশের রহমত আলীর ঘর থেকে সোনার চেইন, একাধিক বাড়ি থেকে পানি তোলার মোটর চুরি করেছে। বাগানের চুই গাছ কেটে বিক্রি করাও তার অপরাধের তালিকায় রয়েছে।
এছাড়া, বোয়ালিয়া উত্তরপাড়া থেকে গরু চুরি এবং ঢাকুরিয়া ও ভবানীপুর এলাকার দরিদ্র মানুষের ভ্যান চুরির ঘটনাতেও মোজাহিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের দাবি, মোজাহিদ একা নয়—তার সঙ্গে একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র কাজ করছে। এই চক্রের সদস্য হিসেবে অভিযুক্তরা হলেন:
ঢাকুরিয়ার উকিল গাজীর ছেলে জিহাদ
বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী রুস্তম আলীর ছেলে মনজিল হোসেন (২৫)
ভোমরদাহ গ্রামের মুবিন হোসেন
তারা রাতের অন্ধকারে বা ফাঁকা সময়ে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি সংঘটিত করে বলে অভিযোগ।
এছাড়া জানা গেছে, কিছুদিন আগেই মোজাহিদ মাদকসহ মনিরামপুর থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাকে এএসআই শহীদুল ইসলাম আদালতে সোপর্দ করেছিলেন। কিন্তু আইনের ফাঁক গলে সে আবারও ছাড়া পেয়ে অপরাধের ধারায় ফিরে আসে।
এলাকাবাসীর প্রশ্ন—“একজন চিহ্নিত চোর ও মাদকসেবীকে যদি পুলিশে না দিয়ে সামান্য জরিমানায় ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে সমাজে আইনের শাসন কোথায়?”
তাদের দাবি, চোরচক্রের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে এই ধরনের অপরাধ দমন করতে হবে, না হলে অপরাধীরা আরও সাহস পাবে।
অপরাধকে প্রশ্রয় না দিয়ে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।