দুর্নীতি ও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত শ্যামনগর থানার কনস্টেবল সানি
																
								
							
                                - আপডেট সময় : ১০:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭১ বার পড়া হয়েছে
 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে দুর্নীতি ও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত শ্যামনগর থানার কনস্টেবল সানি – তদন্তের দাবি জনসাধারণের*
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার কম্পিউটার অপারেটর কনস্টেবল সানির বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে জানা যায়, প্রতিদিন থানায় আসা ৮-১০টি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের আবেদন থেকে তিনি কারও কাছ থেকে ৫০০, আবার কারও কাছ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করেন।  
যেসব আবেদনকারী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান, তাদের বাড়িতে তদন্ত পাঠানোর নামে হয়রানি করা হয় অথবা তাদের আবেদন আটকে রাখা হয়।
স্থানীয় কিছু কম্পিউটার দোকানদারদের মাধ্যমেও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।
কনস্টেবল সানির কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তবে স্থানীয়রা জানান, তিনি একজন অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ব্যক্তি, যা পুলিশ সদস্য হিসেবে অগ্রহণযোগ্য এবং বিপজ্জনক।
এমন অসদাচরণে সাধারণ মানুষ যেমন ভোগান্তিতে পড়ছে, তেমনি পুলিশের সেবার প্রতি আস্থা হারাচ্ছে জনগণ।
এখনো এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপারকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি, তবে স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জানা গেছে, শ্যামনগর থানার বাইরে বিভিন্ন অনলাইন কম্পিউটার দোকান থেকেও পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের আবেদন নেওয়া হয়।
এই দোকানগুলোর বেশ কয়েকটির সঙ্গে কনস্টেবল সানির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  
তারা আবেদনকারীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে এবং সানির মাধ্যমে দ্রুত ক্লিয়ারেন্স পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেয়।
অনলাইন আবেদনকারী সাধারণ মানুষ না বুঝেই এই দালালচক্রের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছেন।
ঘুষ না দিলে আবেদন আটকে দেওয়া, তদন্তে নেতিবাচক প্রতিবেদন পাঠানো বা দেরি করানো যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
এইভাবে অনলাইন আবেদন ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে একটি বড়সড় ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা মনে করছেন, এটি একটি সমন্বিত চক্র, যেখানে থানার ভেতর ও বাইরের কিছু অসাধু ব্যক্তি জড়িত। স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভুগী এই নাম্বার দিয়ে +880 1965-436935 বলেন যে কনস্টেবল সানি বিকাশের মাধ্যমে এই নাম্বারে একাধিকবার টাকা লেনদেন করেছে।
এই পরিস্থিতিতে শ্যামনগর থানার সার্বিক ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
সাধারণ মানুষ ন্যায্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং পুলিশের প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে।
অবিলম্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।এই কনস্টেবল সানি তার দুর্নীতি আড়াল করতে স্থানীয় কিছু কথিত সাংবাদিককে নিয়মিত টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে রাখছে।
জানা গেছে, এসব সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ প্রকাশ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুবিধা নিচ্ছে।
এমনকি কেউ তথ্য তুলে ধরতে গেলেও তারা আগে থেকেই চাপ সৃষ্টি করে মুখ বন্ধ করে দেয়।
ফলে সাধারণ মানুষ অভিযোগ তুলতেও ভয় পাচ্ছে, কারণ তারা জানে—সাংবাদিকরাও সানির পক্ষে।
এই অপপ্রচার এবং ম্যানেজমেন্টের কারণে সানির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগ রয়েছে,এসব নম্বর ছাড়াও তারা ফ্যামিলির বিকাশ নাম্বার ব্যবহার করে লেনদেন করেন, যাতে সরাসরি প্রমাণের পথ বন্ধ থাকে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা আরও জানান, কনস্টেবল সানি নিজের দাপট বজায় রাখতে কিছু সাংবাদিকদের অর্থ দিয়ে “ম্যানেজ” করে রাখেন, যাতে কোনো নেতিবাচক রিপোর্ট না প্রকাশিত হয়।
অনেকে মনে করছেন, এই কম্পিউটার অপারেটর এতটাই দাপুটে হয়ে উঠেছে যে তাদের বিরুদ্ধে থানার ভেতর থেকেই কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। পুলিশের মতো সম্মানিত বাহিনীর মধ্যে এমন দুর্নীতির উপস্থিতি সাধারণ জনগণের আস্থায় চিড় ধরিয়েছে।
একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি দাবি করেছেন, যদি এই দুটি বিকাশ নম্বরের লেনদেন স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করে যাচাই করা হয়, তাহলে প্রতিদিন কত টাকা ঘুষ নেওয়া হচ্ছে, তা খুব সহজেই বেরিয়ে আসবে।
সচেতন নাগরিকদের দাবি— এই বিষয়গুলো শুধু জেলা পুলিশ নয়, দুদক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এনে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। না হলে এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরো জেলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ প্রশাসনের কোনো উচ্চপর্যায়ের প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি, তবে জেলার মানুষ অবিলম্বে তদন্ত দাবি করেছেন।
সাতক্ষীরাবাসীর প্রশ্ন: পুলিশের সেবাখাতে যদি ঘুষই নীতিতে পরিণত হয়, তবে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?
																			
										



















