দালাল চক্রের নিষ্ঠুরতায় অতিষ্ঠ সরকারি হাসপাতালের রোগীরা।

- আপডেট সময় : ০৫:৫০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ২৪৪ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার।
নানা অনিয়ম-দুর্নীতে জর্জরিত বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতাল। এর মাশুল দিতে হয় সাধারণ রোগীদের।দেশের সরকারি হাসপাতালগুলো গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের শেষ ভরসার স্থল। সেখানেই দিনের পর দিন পোহাতে হয় নানা দুর্ভোগ সাধারণ রোগীদের।
এই দুর্ভোগের আবার একটি স্তরে সীমাবদ্ধ নয়। কেউ দালালের খপ্পরে পরে সর্বত্র হারাচ্ছে, কেউ কেউ পড়েন ওয়ার্ডবয়ের খপ্পরে।আবার অ্যাম্বুলেন্সের সার্ভিস নিয়েও আছে ব্যাপক অনিয়ম।অতিরিক্ত ভাড়া না দিলে মেলেনা এম্বুলেন্সও চালকরাও যেতে চান না নির্ধারিত গন্তব্যে।শয্যা ফাঁকা থাকলেও অনেক সময় তা মেলে না রোগীর ভাগ্যে তবে তদবির বা দালালদের টাকা দিলে মুহূর্তের মধ্যে শয্যার ব্যবস্থা হয়ে যায়।আর যাদের এই সক্ষমতা থাকে না, তারা হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েই দিনের পর দিন চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।ট্রলি-স্ট্রেচার নিয়েও পকেট-কাটা ব্যবসা। আগত রোগীদের শুধু হুইল চেয়ার নয়, স্ট্রেচার ব্যবহারেও রোগীর স্বজনদের দিতে হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
গত কয়েকদিন সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় চিকিৎসাসেবা নিতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু রোগী আসছেন। তবে রোগীর চাপে সিট না পেয়ে অনেকে ওয়ার্ড ও বারান্দার মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের ভিড়ে বারান্দা দিয়ে হাঁটা পর্যন্ত যায় না। আবার কিছু কিছু ওয়ার্ডে একটি শয্যা একাধিক রোগীকে বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। ভুক্তভোগীরা দ্রুত এ অবস্থার অবসান চান।
এদিকে, হাসপাতালগুলির বিপরীতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে ক্লিনিক। এসব ক্লিনিকে রোগী ভর্তি করাতে প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেন কিছু লোক। তারা দালাল হিসেবে পরিচিত। তাদের কাজ হচ্ছে সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী বাগিয়ে নিয়ে আসা। দেখা গেছে,বিভিন্ন হাসপাতালের মূল ভবনের প্রবেশমুখেই হুইল চেয়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন নারী ও পুরুষ। পায়ে হেঁটে চলতে অসুবিধা হয়- এমন রোগীদের বসানো হচ্ছে সেইসব হুইল চেয়ারে।
অ্যাম্বুলেন্স চালকদের দৌরাত্ম্যও ভোগায় একই ভাবে।সুস্থ হোক বা কেউ মারা যাক- তাদের বহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে হলে স্বজনদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। একইভাবে ভোগান্তি পোহাতে হয় ফি জমা থেকে শুরু করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গিয়ে। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যে যার মতো আগে ঢুকে সেবা নেয়ার চেষ্টা করেন। তাছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে গিয়েও দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারণ যন্ত্রপাতির তুলনায় রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ। এ অবস্থায় শয্যাসংখ্যা বাড়ানোসহ চিকিৎসাসেবার মতো এ হাসপাতালে অন্যান্য সেবাকেও মানসম্মত করার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ রোগীরা।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মূল গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখা যায় রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির জট। পরিবহনগুলোকে সুশৃঙ্খল রাখার দায়িত্বে নিয়োজিত দুজন আনসার সদস্য। কিন্তু এর বাইরে তারা অন্য দায়িত্বও পালন করেন।
সিএনজিচালকা বলেন এখান থেকে যাত্রী নিলে আনসারদের দশ টাকা করে দিতে হয়। অন্য এক সিএনজিচালক বলেন হাসপাতালের সামনে থেকে যাত্রী নিলে আনসারদের দশ টাকা করে দিতে হয়। এটা আর নতুন কী। এটা সবাই জানে। আনসারদের মধ্যেও কয়েকজনকে দেখা যায় সিএনজি থেকে দশ টাকা বিষ টাকা করে নিচ্ছেন।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে দালালদের দৌরাত্ম্য, নানা অনিয়ম ও দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণের বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এর বক্তব্য , ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার মান বৃদ্ধি, দালাল প্রবেশ বন্ধ করাসহ বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। রোগী ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আশা করি,খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পাবে। আর যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিন কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে কোথাও তেমন চিত্র দেখা যায়নি। উল্টো দেখা যায়, রোগী বহনের ট্রলি, হুইলচেয়ার, স্ট্রেচারের স্বল্পতায় কোলে করে রোগীদের ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন স্বজনরা।
এসব বিষয় নিয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালগুলোতে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়ে থাকে। কোনো রোগীকেই সেবা না দিয়ে ফেরত দেওয়া হয় না। আর যে কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে।আরো বলেন, হাসপাতাল ও রোগীর স্বার্থে যা করণীয় আমরা তা করে থাকি। প্রতিদিন আমাদের হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সবকিছু সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি।
I’m really impressed with your writing skills as well as with the format to your blog. Is this a paid subject matter or did you modify it yourself? Either way keep up the nice high quality writing, it is rare to see a great weblog like this one today!