থার্টি ফার্স্ট নাইটের আতশবাজি: উৎসবের উল্লাসে হারাচ্ছে পাখির প্রাণ

- আপডেট সময় : ১২:০২:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ৫৬ বার পড়া হয়েছে

থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসব মানেই ঝলমলে আলোর রোশনাই আর আকাশে আতশবাজির রঙিন খেলা। এই আনন্দের আড়ালে প্রতিবারই ঘটে যায় এক করুণ বিপর্যয়। আতশবাজির বিকট শব্দ আর তীব্র আলো পরিবেশে ফেলে মারাত্মক প্রভাব, যার প্রধান শিকার হয় অসহায় পাখিরা।
আতশবাজির শব্দে আতঙ্কিত পাখিরা :
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, পাখিদের কান মানুষের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল। আতশবাজির বিকট শব্দ তাদের জন্য কেবল আতঙ্ক সৃষ্টি করে না, বরং প্রায়শই তাদের দিকভ্রান্ত করে তোলে। আতঙ্কিত পাখিরা গাছ থেকে পালিয়ে অন্ধকারে উড়তে গিয়ে ভবনের কাচ, বৈদ্যুতিক তার কিংবা অন্যান্য বাধার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মৃত্যুবরণ করে।
প্রকৃতিপ্রেমীরা জানান, ‘প্রতি বছর থার্টি ফার্স্টের পরদিন সকালে আমরা গাছের নিচে অনেক মৃত পাখি পড়ে থাকতে দেখি। যা খুবই দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতশবাজির শব্দ প্রায়শই ৯০-১০০ ডেসিবেলের বেশি হয়ে যায়, যা কেবল পাখি নয় এমনকি মানুষের কান এবং হৃদপিণ্ডের জন্যও ক্ষতিকর।
আলোর ঝলকানিতে দৃষ্টিহীন পাখি :
শব্দের পাশাপাশি আতশবাজির তীব্র আলো পাখিদের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেয়। পাখিদের রাতের দৃষ্টিশক্তি তাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে আতশবাজির হঠাৎ জ্বলে ওঠা আলো তাদের সাময়িকভাবে অন্ধ করে দেয়, যার কারণে তারা উড়তে গিয়ে বাধার সঙ্গে ধাক্কা খায় বা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে।
পরিবেশের ওপর প্রভাব:
আতশবাজি শুধু পাখিদের নয়, পুরো পরিবেশের ওপরই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আতশবাজিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশের জন্য বিষাক্ত। এর ফলে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, এবং সালফার ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়, যার ফলে আমাদের বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে।
পাখিরা পরিবেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, পাখিরা পরিবেশের প্রাণ। তাই পরিবেশ, প্রাণীকুল এবং নিজেদের রক্ষায় আমাদের উচিত আরো দায়িত্বশীল হওয়া। উৎসবের নামে বন্ধ করা উচিত আতশবাজির এই তান্ডবলীলা।
‘উৎসবের উল্লাস যেন না হোক কারো মৃত্যুর কারণ’।
রিসালাত আলিফ,
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ