তিন দিন ধরে জেলে সাংবাদিক!
- আপডেট সময় : ১২:২৪:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪ ৭৮ বার পড়া হয়েছে
জি এম আবু জাফর- ক্রাইম রিপোটার, সাতক্ষীরা।
৩ দিন ধরে জেল খাটছেন একজন মফস্বল সাংবাদিক। তার অপরাধ-তিনি তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করে রিসিভড কপি চেয়েছিলেন।আবেদনে জাইকার কয়েকটি প্রকল্পের ৫০ লাখ টাকার কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছিল। এতে স্থানীয় ইউএনও ওই সাংবাদিকের ওপর ক্ষুব্ধ হন।
তারপর তিনি তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সেই সাংবাদিককে ছয় মাসের জেল দেন। ঘটনাটি শেরপুরের নকলা উপজেলার। অথচ কোথায় এমন বিনা অপরাধে জেল খাটার ঘটনায় প্রতিবাদ নেই। সাংবাদিক নেতারা চুপচাপ। টু শব্দ না করার কারণ হালুয়া রুটির ভাগিদার সবাই। রেজিমভুক্তদের গায়ে আঘাত পড়লে কোন সাড়া শব্দ হয় না এদেশে।
গত মঙ্গলবার দেশ রূপান্তরের নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানা ওই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিনের কাছে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনটি কার্যালয়ের কর্মচারী গোপনীয় সহকারী (সিএ) শীলার কাছে দিয়ে রিসিভড কপি চান রানা। শীলা তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। রানা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার শীলার কাছে রিসিভড কপি চান। তখন শীলা জানান, ইউএনওকে ছাড়া রিসিভড কপি দেওয়া যাবে না। পরে রানা জেলা প্রশাসককে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান।
এতে ইউএনও আরও ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে নকলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউএনও এবং সিএ শীলার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে রানাকে গ্রেপ্তার করে। নকলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শিহাবুল আরিফ ওই কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন।সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানার সামনে তার ১৫ বছরের ছেলে মাহিনকে এই ইউএনও বলেছেন, ‘বাপের মতো চোর সাংবাদিক হবি’।
কেন বলেছেন জানেন? কারণ, তার ‘বাপ’ কয়েকটি প্রকল্পের ৫০ লাখ টাকা কীভাবে ব্যয় করা হয়েছে সেই তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। তাও তথ্য অধিকার আইনে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় আবেদন করে। সেটি এই ইউএনওর পছন্দ হয়নি। তিনি গোস্বা করেন এবং ক্ষুব্ধ হন। আর সঙ্গে সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই সাংবাদিক রানাকে ছয় মাসের জেল দেন। রানা জেল খাটছেন।
ইউএনও এর আগে যত জায়গাতে কর্মরত ছিলেন সবখানে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
কি আশ্চার্য্য ব্যাপার দেখেন, দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একজন গণমাধ্যমকর্মী তথ্য চেয়ে আবেদন করেও হয়রানির শিকার হয়েছেন। তিনি জেল খাটছেন। সাংবাদিক সমাজ নিরব। প্রতিবাদের ভাষা বাক্সবন্দি করে সাংবাদিক নেতারা ভাগ্যন্নোয়নে ব্যস্ত। নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই গণমাধ্যম হাউজগুলো মিছিল সহকারে ভীড়। আর এখন কোন প্রতিবাদ নেই। অবিলম্বে এ জঘন্য ও ন্যক্কারজনক ঘটনার তদন্ত করে ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। সাংবাদিক রানার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।