এমদাদুল হক ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:যশোরের মনিরামপুর উপজেলার তারুয়া পাড়া কালুয়ার মহাশ্মশানে ধর্মীয় শ্রদ্ধা, ভক্তি ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৪তম বার্ষিক সাধক শ্যামল পাগলের মেলা। ঢাকুরিয়া ও নরেন্দ্রপুর মতুয়া সম্প্রদায়ের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী এই মেলার অধিবাস অনুষ্ঠিত হয় ২০ জুন শুক্রবার এবং মূল মেলা অনুষ্ঠিত হয় ২১ জুন শনিবার।

প্রাচীনকাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা এই সাধু-মেলাটি এলাকাবাসীর কাছে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। মূল মেলার দিন সন্ধ্যা সাতটায় পরিবেশিত হয় ‘অভিমূলক’ ভক্তিগীতি ও ধর্মীয় সংগীত, যা উপস্থিত ভক্তদের আবেগে ভাসিয়ে তোলে।

মেলার প্রধান অতিথি ছিলেন মনিরামপুর থানা বিএনপির সভাপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবী আলহাজ্ব এডভোকেট শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মাস্টার মতিয়ার রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মোশারফ হোসেন টুকু, ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ সেলিম হোসেন, সমাজসেবক মোঃ মোল্লা মিজান, যুবনেতা মোঃ তরিকুল ইসলাম এবং মামুন হোসেনসহ আরও অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি।

অনুষ্ঠানে বক্তারা সাধক শ্যামল পাগলের জীবনদর্শন, মানবিকতা, সহমর্মিতা ও ধর্মীয় সহনশীলতার মূল্য তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, “এই ধরনের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক মেলাগুলো তরুণ প্রজন্মের মাঝে নৈতিকতা, সহনশীলতা ও সামাজিক সম্প্রীতির বীজ বপন করে।”

মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকা সাজানো হয় বিভিন্ন আলোকসজ্জা ও ব্যানারে। আয়োজকরা আগত ভক্তদের জন্য পানি, প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুন্দর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। স্বেচ্ছাসেবকদের নিরলস প্রচেষ্টায় মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা ছিল প্রশংসনীয়।

এলাকাবাসী জানান, প্রতি বছর এই মেলাকে ঘিরে একটি আত্মিক বন্ধনের সৃষ্টি হয়, যা ধর্মীয় গণ্ডি ছাড়িয়ে সামাজিক ঐক্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতীক হিসেবে কাজ করে। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, এই ঐতিহ্যবাহী মেলার ধারাবাহিকতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।