ঢাকা ০১:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দুমকীতে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বাহেরচর, চোখের জলে ভাসছে মানুষ ঝিনাইদহে তালাবদ্ধ ফার্নিচার দোকানের ভিতর থেকে উদ্ধার হলো গৃহবধূর মৃতদেহ সমাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা উদ্যোগে দুস্থ অসহায়দের মাঝে চাউল বিতরণের আয়োজন করা হয় বকশীগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী পরিবারের মাঝে ছাগল বিতরণ চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত মদ খেয়ে ৬ জনের মৃত্যু রাণীশংকৈলে মাদকবিরোধী জনসচেতনতায় একতার ডাক সাতক্ষীরায় যৌতুক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গণসচেতনতা দেবহাটায় ব্যতিক্রমী নাটিকা ও লোকসংগীত কুতুবদিয়ায় ডেইল ইউনিয়ন শ্রমিক দলের দ্বি বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত রাজাপুরে বিএনপির পক্ষে ইঞ্জি. রেজাউল করিমের গণসংযোগ শাল্লায় ঠিকাদারের দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ড বিদ্যুৎপৃষ্ঠে ৬বছরের শিশু আহত

তহবিলসংকটের কারণে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী কমাচ্ছে জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৮:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫ ৫৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:বিশ্বের নয়টি অঞ্চলের শান্তি রক্ষা মিশন থেকে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী বাহিনী কমিয়ে আনতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমে যাওয়ায় তহবিলঘাটতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা বলেন, তহবিল কমানোর ফলে ১৩ থেকে ১৪ হাজার সামরিক ও পুলিশ সদস্যকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে। এ ছাড়া মিশনে কর্মরত বিপুলসংখ্যক বেসামরিক কর্মীর ওপর এর প্রভাব পড়বে।

জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সেনাসদস্য ও পুলিশ শান্তিরক্ষী মিশনে কাজ করেন। জাতিসংঘের এই মিশনে শান্তিরক্ষী পাঠানোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। গত ৩১ আগস্টের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ১০ দেশে শান্তিরক্ষী হিসেবে ৪৪৪ নারীসহ ৫ হাজার ৬৯৬ বাংলাদেশি দায়িত্ব পালন করছেন।

২০২৫-২৬ সালে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের মোট বাজেট ছিল ৫৪০ কোটি ডলার। এর মধ্যে অনুদান হিসেবে ১৩০ কোটি ডলার দেওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখন জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা বাজেটের অর্ধেক, অর্থাৎ প্রায় ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার দেবে। এর মধ্যে ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার বরাদ্দ থাকবে হাইতির অ্যান্টি-গ্যাং মিশনের জন্য; যা জাতিসংঘের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

১০ দেশে শান্তির পতাকা হাতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা
২৯ মে ২০২৫। ১০ দেশে শান্তির পতাকা হাতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা

যুক্তরাষ্ট্রের পর শান্তি রক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি অনুদান দেয় চীন। তারা শান্তি রক্ষা বাজেটে প্রায় ১২০ কোটি ডলার অনুদান দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে গত জুলাই পর্যন্ত দেশটির ২০০ কোটি ডলার বকেয়া জমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে শান্তি রক্ষা তহবিলের বাজেটে ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ ঘাটতি থাকার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।

শুধু তা-ই নয়, হোয়াইট হাউসের বাজেট দপ্তর ২০২৬ সালে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য অর্থায়ন বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা বলেছে, মালি, লেবানন ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে এসব মিশন ব্যর্থ হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুযোগ নিচ্ছে। জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট করছেন তিনি।

জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা জানি যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা ও মানবিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করা বা অন্যান্য শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে এর প্রভাব পড়বে।’

ওই কর্মকর্তা বলেন, ১১টি শান্তি রক্ষা মিশনের ৯টিতে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী কমানোর প্রক্রিয়া কার্যকর করা হবে। এসব মিশন সম্ভাব্য বাজেটসংকটের জন্য আগেই বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছিল।

বর্তমানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণ লেবানন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান, পশ্চিম সাহারাসহ বিভিন্ন স্থানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিনিধি লুই চারবোনি বলেন, এ ঘোষণার ফলে মানবিক সহায়তা এবং সেই সহায়তার ওপর নির্ভরশীল বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও আরও বড় পরিসরে সংস্থাটির কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও খরচ কমানোর পথ খুঁজছেন। এ বছর ঠিক এমন এক সময়ে আন্তর্জাতিক এই সংস্থা ৮০ বছরে পা দিচ্ছে, যখন তারা অর্থসংকটে ভুগছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

তহবিলসংকটের কারণে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী কমাচ্ছে জাতিসংঘ

আপডেট সময় : ১২:৪৮:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:বিশ্বের নয়টি অঞ্চলের শান্তি রক্ষা মিশন থেকে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী বাহিনী কমিয়ে আনতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমে যাওয়ায় তহবিলঘাটতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা বলেন, তহবিল কমানোর ফলে ১৩ থেকে ১৪ হাজার সামরিক ও পুলিশ সদস্যকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে। এ ছাড়া মিশনে কর্মরত বিপুলসংখ্যক বেসামরিক কর্মীর ওপর এর প্রভাব পড়বে।

জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সেনাসদস্য ও পুলিশ শান্তিরক্ষী মিশনে কাজ করেন। জাতিসংঘের এই মিশনে শান্তিরক্ষী পাঠানোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। গত ৩১ আগস্টের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ১০ দেশে শান্তিরক্ষী হিসেবে ৪৪৪ নারীসহ ৫ হাজার ৬৯৬ বাংলাদেশি দায়িত্ব পালন করছেন।

২০২৫-২৬ সালে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের মোট বাজেট ছিল ৫৪০ কোটি ডলার। এর মধ্যে অনুদান হিসেবে ১৩০ কোটি ডলার দেওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখন জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা বাজেটের অর্ধেক, অর্থাৎ প্রায় ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার দেবে। এর মধ্যে ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার বরাদ্দ থাকবে হাইতির অ্যান্টি-গ্যাং মিশনের জন্য; যা জাতিসংঘের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

১০ দেশে শান্তির পতাকা হাতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা
২৯ মে ২০২৫। ১০ দেশে শান্তির পতাকা হাতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা

যুক্তরাষ্ট্রের পর শান্তি রক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি অনুদান দেয় চীন। তারা শান্তি রক্ষা বাজেটে প্রায় ১২০ কোটি ডলার অনুদান দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে গত জুলাই পর্যন্ত দেশটির ২০০ কোটি ডলার বকেয়া জমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে শান্তি রক্ষা তহবিলের বাজেটে ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ ঘাটতি থাকার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।

শুধু তা-ই নয়, হোয়াইট হাউসের বাজেট দপ্তর ২০২৬ সালে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য অর্থায়ন বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা বলেছে, মালি, লেবানন ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে এসব মিশন ব্যর্থ হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুযোগ নিচ্ছে। জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট করছেন তিনি।

জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা জানি যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা ও মানবিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করা বা অন্যান্য শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে এর প্রভাব পড়বে।’

ওই কর্মকর্তা বলেন, ১১টি শান্তি রক্ষা মিশনের ৯টিতে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী কমানোর প্রক্রিয়া কার্যকর করা হবে। এসব মিশন সম্ভাব্য বাজেটসংকটের জন্য আগেই বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছিল।

বর্তমানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণ লেবানন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান, পশ্চিম সাহারাসহ বিভিন্ন স্থানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিনিধি লুই চারবোনি বলেন, এ ঘোষণার ফলে মানবিক সহায়তা এবং সেই সহায়তার ওপর নির্ভরশীল বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও আরও বড় পরিসরে সংস্থাটির কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও খরচ কমানোর পথ খুঁজছেন। এ বছর ঠিক এমন এক সময়ে আন্তর্জাতিক এই সংস্থা ৮০ বছরে পা দিচ্ছে, যখন তারা অর্থসংকটে ভুগছে।