ঢাকা ১২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শাল্লা থানা পরিদর্শন করলেন সুনাগঞ্জের পুলিশ সুপার যশোরের কপোতাক্ষ লাইন্স হাসপাতালের চেয়ারম্যান হলেন অ্যাডভোকেট দেবাশীষ দাস আপ বাংলাদেশ’র বান্দরবান জেলার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুলিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের মারপিটে গুরুত্বর জখম-১, থানায় অভিযোগ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের উপর হামলার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন ছাত্র সমাজের ঐক্য ও শিক্ষার মানন্নয়নের ডাক নিয়ে, বিষম্ভরপুরে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুলটিয়ায় তিন ফসলি জমিতে অবৈধ ঘের খনন, অভিযান চালালেন ইউএনও নিশাত তামান্না সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন এর “শিক্ষক প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে দক্ষিণ মাদার্শা সেবাশ্রমে তিনদিনব্যাপী মহোৎসব অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা

ঢাকুরিয়ায় প্রথমবারের মতো মেধা হান্টিং ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত, অনুপ্রেরণায় ইউএনও আবু সাঈদ

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:-

শিক্ষা, মেধা ও সমাজে গুণীজনদের স্বীকৃতিকে ঘিরে যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী ও অনুপ্রেরণামূলক আয়োজন। গত ৯ জুন ২০২৫, সোমবার বিকাল ৪টায় ঢাকুরিয়া স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এই অনুষ্ঠান, যার মূল উদ্যোক্তা ছিল ঢাকুরিয়া প্রতাপকাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফোরাম। আয়োজনের মূল অনুপ্রেরণা ছিলেন ঢাকুরিয়ার কৃতিসন্তান ও বর্তমান ঘাটাইল উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আবু সাঈদ। তাঁর উৎসাহ ও প্রস্তাবেই এই ব্যতিক্রমী ‘মেধা হান্টিং ২০২৫’ ও গুণীজন সংবর্ধনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।

এই আয়োজনে মনিরামপুর উপজেলার ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিয়নের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় মেধা যাচাই প্রতিযোগিতা। গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস ও মেধা তুলে ধরাই ছিল এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে ঢাকুরিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সামিয়া মৌরিন অর্নি, যার এই সাফল্য বিদ্যালয় এবং এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি করে।

একই মঞ্চে সম্মাননা জানানো হয় ঢাকুরিয়া গ্রামের তিন কৃতি সন্তানকে, যাঁরা দেশ ও সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে অবদান রেখে চলেছেন। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘গুণীজন সংবর্ধনা সম্মাননা’। সংবর্ধিতরা হলেন—মোঃ আবু সাঈদ, ইউএনও, ঘাটাইল; মোঃ আমিনুর রহমান, প্রভাষক, সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মাগুরা; এবং ডা. মোঃ আব্দুল কাদের, এমবিবিএস, এফসিপিএস, পিজি হাসপাতাল, ঢাকা। ইউএনও আবু সাঈদের জনসেবা ও শিক্ষার প্রসারে কাজ, প্রভাষক আমিনুর রহমানের আদর্শ শিক্ষা দান এবং চিকিৎসক কাদেরের স্বাস্থ্যখাতে অবদান বিশেষভাবে আলোচিত হয় অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংবর্ধিত তিনজন গুণীজন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—জি এম মিজানুর রহমান (সভাপতি, মনিরামপুর উপজেলা বিএনপি), মাষ্টার মতিয়ার রহমান (সহ-সভাপতি, ৪নং ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপি), ইফতেখার আহমেদ অগ্নি (সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, যশোর জেলা বিএনপি), মোঃ আব্দুল হান্নান (সভাপতি, ঢাকুরিয়া বণিক সমিতি), মাওলানা আব্দুল জলিল (আমির, ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন) এবং শহীদুল ইসলাম (এএসআই, মনিরামপুর থানা)।

বক্তারা বলেন, “আজকের দিনটি প্রমাণ করে দিয়েছে—গ্রামের ছেলে-মেয়েরাও যদি সুযোগ পায়, তবে দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। এই সংবর্ধনা শুধুমাত্র সম্মান নয়, এটি ভবিষ্যতের প্রেরণাও।”

আয়োজিত হয় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যেখানে সংগীত, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাঁদের প্রতিভা প্রকাশ করে। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফোরামের সদস্যরা, যাঁরা জানান, “এই আয়োজন একটি সূচনা মাত্র। আমরা চাই এ ধারা নিয়মিত চলুক। আবু সাঈদ স্যারের মতো গুণীজনদের পাশে পেয়ে আমরা ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে এই উদ্যোগ চালিয়ে যেতে চাই।”

ঢাকুরিয়া এখন আর শুধুমাত্র একটি গ্রামের নাম নয়—এটি অনুপ্রেরণার প্রতীক। এই গ্রাম দেখিয়ে দিয়েছে, সুযোগ পেলে গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা ও গর্বিত সন্তানেরা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে কতটা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। আবু সাঈদ, আমিনুর রহমান ও ডা. কাদেরের মতো কৃতি সন্তানদের সম্মাননা এবং উদীয়মান শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া এই আয়োজন নিঃসন্দেহে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

ঢাকুরিয়ায় প্রথমবারের মতো মেধা হান্টিং ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত, অনুপ্রেরণায় ইউএনও আবু সাঈদ

আপডেট সময় : ১২:৫৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:-

শিক্ষা, মেধা ও সমাজে গুণীজনদের স্বীকৃতিকে ঘিরে যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী ও অনুপ্রেরণামূলক আয়োজন। গত ৯ জুন ২০২৫, সোমবার বিকাল ৪টায় ঢাকুরিয়া স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এই অনুষ্ঠান, যার মূল উদ্যোক্তা ছিল ঢাকুরিয়া প্রতাপকাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফোরাম। আয়োজনের মূল অনুপ্রেরণা ছিলেন ঢাকুরিয়ার কৃতিসন্তান ও বর্তমান ঘাটাইল উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আবু সাঈদ। তাঁর উৎসাহ ও প্রস্তাবেই এই ব্যতিক্রমী ‘মেধা হান্টিং ২০২৫’ ও গুণীজন সংবর্ধনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।

এই আয়োজনে মনিরামপুর উপজেলার ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিয়নের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় মেধা যাচাই প্রতিযোগিতা। গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস ও মেধা তুলে ধরাই ছিল এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে ঢাকুরিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সামিয়া মৌরিন অর্নি, যার এই সাফল্য বিদ্যালয় এবং এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি করে।

একই মঞ্চে সম্মাননা জানানো হয় ঢাকুরিয়া গ্রামের তিন কৃতি সন্তানকে, যাঁরা দেশ ও সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে অবদান রেখে চলেছেন। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘গুণীজন সংবর্ধনা সম্মাননা’। সংবর্ধিতরা হলেন—মোঃ আবু সাঈদ, ইউএনও, ঘাটাইল; মোঃ আমিনুর রহমান, প্রভাষক, সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মাগুরা; এবং ডা. মোঃ আব্দুল কাদের, এমবিবিএস, এফসিপিএস, পিজি হাসপাতাল, ঢাকা। ইউএনও আবু সাঈদের জনসেবা ও শিক্ষার প্রসারে কাজ, প্রভাষক আমিনুর রহমানের আদর্শ শিক্ষা দান এবং চিকিৎসক কাদেরের স্বাস্থ্যখাতে অবদান বিশেষভাবে আলোচিত হয় অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংবর্ধিত তিনজন গুণীজন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—জি এম মিজানুর রহমান (সভাপতি, মনিরামপুর উপজেলা বিএনপি), মাষ্টার মতিয়ার রহমান (সহ-সভাপতি, ৪নং ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপি), ইফতেখার আহমেদ অগ্নি (সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, যশোর জেলা বিএনপি), মোঃ আব্দুল হান্নান (সভাপতি, ঢাকুরিয়া বণিক সমিতি), মাওলানা আব্দুল জলিল (আমির, ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন) এবং শহীদুল ইসলাম (এএসআই, মনিরামপুর থানা)।

বক্তারা বলেন, “আজকের দিনটি প্রমাণ করে দিয়েছে—গ্রামের ছেলে-মেয়েরাও যদি সুযোগ পায়, তবে দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। এই সংবর্ধনা শুধুমাত্র সম্মান নয়, এটি ভবিষ্যতের প্রেরণাও।”

আয়োজিত হয় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যেখানে সংগীত, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাঁদের প্রতিভা প্রকাশ করে। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফোরামের সদস্যরা, যাঁরা জানান, “এই আয়োজন একটি সূচনা মাত্র। আমরা চাই এ ধারা নিয়মিত চলুক। আবু সাঈদ স্যারের মতো গুণীজনদের পাশে পেয়ে আমরা ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে এই উদ্যোগ চালিয়ে যেতে চাই।”

ঢাকুরিয়া এখন আর শুধুমাত্র একটি গ্রামের নাম নয়—এটি অনুপ্রেরণার প্রতীক। এই গ্রাম দেখিয়ে দিয়েছে, সুযোগ পেলে গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা ও গর্বিত সন্তানেরা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে কতটা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। আবু সাঈদ, আমিনুর রহমান ও ডা. কাদেরের মতো কৃতি সন্তানদের সম্মাননা এবং উদীয়মান শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া এই আয়োজন নিঃসন্দেহে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে থাকবে।