ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শাল্লা থানা পরিদর্শন করলেন সুনাগঞ্জের পুলিশ সুপার যশোরের কপোতাক্ষ লাইন্স হাসপাতালের চেয়ারম্যান হলেন অ্যাডভোকেট দেবাশীষ দাস আপ বাংলাদেশ’র বান্দরবান জেলার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুলিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের মারপিটে গুরুত্বর জখম-১, থানায় অভিযোগ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের উপর হামলার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন ছাত্র সমাজের ঐক্য ও শিক্ষার মানন্নয়নের ডাক নিয়ে, বিষম্ভরপুরে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুলটিয়ায় তিন ফসলি জমিতে অবৈধ ঘের খনন, অভিযান চালালেন ইউএনও নিশাত তামান্না সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন এর “শিক্ষক প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে দক্ষিণ মাদার্শা সেবাশ্রমে তিনদিনব্যাপী মহোৎসব অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা

জেনে নিন! সাগরের পানি লবণাক্ত কেন

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১০:১৩:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১০৭ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদন মো: শফিউল্লাহ,নিজেস্ব প্রতিনিধি: আমরা সবাই জানি, সাগরের পানি লবণাক্ত। কিন্তু কেন? আসলে, পৃথিবীর পৃষ্ঠের প্রায় ৭০ শতাংশ জুড়ে রয়েছে বিশাল সব সাগর-মহাসাগর। আর পৃথিবীর মোট পানির প্রায় ৯৭ শতাংশই লবণাক্ত। গবেষণায় বলা হয়, যদি সমুদ্রের সমস্ত লবণ তুলে নিয়ে পৃথিবীর ভূমির উপর ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলে তা ১৬৬ মিটার (প্রায় ৫০০ ফুট) পুরু একটি স্তর তৈরি করবে — যা একটি ৪০-তলা ভবনের উচ্চতার সমান!

কিন্তু এত লবণ এলো কোথা থেকে?
সমুদ্রের লবণের উৎস মূলত দুটো। ভূমি থেকে প্রবাহিত আয়ন আর সমুদ্রের তলদেশ থেকে নির্গত আয়ন।

প্রথমত, স্থলভাগের শিলা (পাথর) থেকে লবণ আসে। যখন বৃষ্টি হয়, তখন বৃষ্টির পানিতে বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড মিশে সামান্য এসিডীয় হয়ে যায়। এই এসিডীয় পানি শিলাকে ক্ষয় করে এবং শিলা থেকে লবণ ও খনিজ পদার্থ বের করে নিয়ে আসে। এরপর নদী-নালা হয়ে এই দ্রবীভূত খনিজ ও লবণ সাগরে পৌঁছে যায়। এর মধ্যে কিছু খনিজ সামুদ্রিক জীব ব্যবহার করলেও, অনেক আয়ন দীর্ঘ সময় পানিতে মিশে থেকে যায় এবং ধীরে ধীরে ঘন হয়ে সমুদ্রের পানি লবণাক্ত করে।

দ্বিতীয়ত, সমুদ্রের তলদেশ। হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট নামে পরিচিত সমুদ্রতলের ফাটলগুলো থেকে গরম পানি নির্গত হয়। এই গরম পানিতে থাকে নানা ধরনের খনিজ, যেমন সোডিয়াম (Na), ক্লোরাইড (Cl), পটাশিয়াম (K), ক্যালসিয়াম (Ca) ইত্যাদি। যখন এই গরম পানি সমুদ্রে মিশে যায়, তখন সেটাও সাগরের পানিকে আরও লবণাক্ত করে। এছাড়া, পানির নিচে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকেও কিছু লবণ এসে যোগ হয়।

সমুদ্রের পানিতে মূলত কোন লবণ থাকে?

সমুদ্রের পানিতে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ক্লোরাইড (Cl⁻), সোডিয়াম (Na⁺) আয়ন। এই দুটো আয়ন মিলে সমুদ্রের দ্রবীভূত লবণের প্রায় ৮৫% তৈরি করে। এরপর রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম (Mg²⁺) এবং সালফেট (SO₄²⁻), যা মিলে আরও ১০% যোগ করে। অন্যান্য আয়ন খুব কম পরিমাণে থাকে।

লবণাক্ততা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হয়। সমুদ্রের পানির লবণাক্ততা নির্ভর অক্ষাংশ, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বাষ্পীভবনসহ আরো অনেক বিষয়ের উপর। সাধারণভাবে, নিরক্ষরেখা এবং মেরুর কাছাকাছি লবণাক্ততা কম, আর মাঝামাঝি অঞ্চলে বেশি। গড় হিসেবে, প্রতি ১০০০ গ্রাম (১ কেজি) সমুদ্রপানিতে প্রায় ৩৫ গ্রাম লবণ থাকে। অর্থাৎ সমুদ্রপানির ওজনের প্রায় ৩.৫% লবণ।
ভূতাত্ত্বিক সময়ের (geologic time) হিসাবে সমুদ্রের পানি আজ যেভাবে লবণাক্ত, তা হতে সময় লেগেছে লক্ষ লক্ষ বছর।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

জেনে নিন! সাগরের পানি লবণাক্ত কেন

আপডেট সময় : ১০:১৩:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

প্রতিবেদন মো: শফিউল্লাহ,নিজেস্ব প্রতিনিধি: আমরা সবাই জানি, সাগরের পানি লবণাক্ত। কিন্তু কেন? আসলে, পৃথিবীর পৃষ্ঠের প্রায় ৭০ শতাংশ জুড়ে রয়েছে বিশাল সব সাগর-মহাসাগর। আর পৃথিবীর মোট পানির প্রায় ৯৭ শতাংশই লবণাক্ত। গবেষণায় বলা হয়, যদি সমুদ্রের সমস্ত লবণ তুলে নিয়ে পৃথিবীর ভূমির উপর ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলে তা ১৬৬ মিটার (প্রায় ৫০০ ফুট) পুরু একটি স্তর তৈরি করবে — যা একটি ৪০-তলা ভবনের উচ্চতার সমান!

কিন্তু এত লবণ এলো কোথা থেকে?
সমুদ্রের লবণের উৎস মূলত দুটো। ভূমি থেকে প্রবাহিত আয়ন আর সমুদ্রের তলদেশ থেকে নির্গত আয়ন।

প্রথমত, স্থলভাগের শিলা (পাথর) থেকে লবণ আসে। যখন বৃষ্টি হয়, তখন বৃষ্টির পানিতে বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড মিশে সামান্য এসিডীয় হয়ে যায়। এই এসিডীয় পানি শিলাকে ক্ষয় করে এবং শিলা থেকে লবণ ও খনিজ পদার্থ বের করে নিয়ে আসে। এরপর নদী-নালা হয়ে এই দ্রবীভূত খনিজ ও লবণ সাগরে পৌঁছে যায়। এর মধ্যে কিছু খনিজ সামুদ্রিক জীব ব্যবহার করলেও, অনেক আয়ন দীর্ঘ সময় পানিতে মিশে থেকে যায় এবং ধীরে ধীরে ঘন হয়ে সমুদ্রের পানি লবণাক্ত করে।

দ্বিতীয়ত, সমুদ্রের তলদেশ। হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট নামে পরিচিত সমুদ্রতলের ফাটলগুলো থেকে গরম পানি নির্গত হয়। এই গরম পানিতে থাকে নানা ধরনের খনিজ, যেমন সোডিয়াম (Na), ক্লোরাইড (Cl), পটাশিয়াম (K), ক্যালসিয়াম (Ca) ইত্যাদি। যখন এই গরম পানি সমুদ্রে মিশে যায়, তখন সেটাও সাগরের পানিকে আরও লবণাক্ত করে। এছাড়া, পানির নিচে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকেও কিছু লবণ এসে যোগ হয়।

সমুদ্রের পানিতে মূলত কোন লবণ থাকে?

সমুদ্রের পানিতে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ক্লোরাইড (Cl⁻), সোডিয়াম (Na⁺) আয়ন। এই দুটো আয়ন মিলে সমুদ্রের দ্রবীভূত লবণের প্রায় ৮৫% তৈরি করে। এরপর রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম (Mg²⁺) এবং সালফেট (SO₄²⁻), যা মিলে আরও ১০% যোগ করে। অন্যান্য আয়ন খুব কম পরিমাণে থাকে।

লবণাক্ততা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হয়। সমুদ্রের পানির লবণাক্ততা নির্ভর অক্ষাংশ, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বাষ্পীভবনসহ আরো অনেক বিষয়ের উপর। সাধারণভাবে, নিরক্ষরেখা এবং মেরুর কাছাকাছি লবণাক্ততা কম, আর মাঝামাঝি অঞ্চলে বেশি। গড় হিসেবে, প্রতি ১০০০ গ্রাম (১ কেজি) সমুদ্রপানিতে প্রায় ৩৫ গ্রাম লবণ থাকে। অর্থাৎ সমুদ্রপানির ওজনের প্রায় ৩.৫% লবণ।
ভূতাত্ত্বিক সময়ের (geologic time) হিসাবে সমুদ্রের পানি আজ যেভাবে লবণাক্ত, তা হতে সময় লেগেছে লক্ষ লক্ষ বছর।