চাটখিলের বিশ্বাস ঘাতক ভয়ংকর প্রতারক হুমায়ুনকে ধরাশায়ী করতে অনুসন্ধান
- আপডেট সময় : ০৫:১১:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪ ৩২ বার পড়া হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার:-
নিজ এলাকার সহজ সরল বিধবা মহিলার কাছে বিভিন্ন কায়দায় ২ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে ভুয়া চেক দিয়ে ধরা পড়ার আগেই ধূর্ততার সাথে বিদেশ পলায়ন করেছে হাইকোর্টের উকিল পরিচয়ধারী প্রতারক ভন্ড হুমায়ুন কবির (৩৬)।
খবরে প্রকাশ, নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার বদলকোট এলাকার উম্মে হামিদা ডালিয়ার(৫৫) সাথে বহুদিন যাবত পরিচয় একই থানার সুন্দরপুর এলাকার ভদ্রবেশী হুমায়ুন কবিরের।এই হুমায়ুন নিজেকে হাইকোর্টের উকিল হিসেবে গর্বের সাথে পরিচয় দিয়ে থাকেন। হামিদার সাথে দীর্ঘদিন পরিচিতির একপর্যায়ে এই বাটপার হুমায়ুন ধরাকে সরাজ্ঞান বুঝিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ২ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের একটি চেক (যার এসবি নং ৯০৪৮৩৪৬ এবং হিসাব নাম্বার ০১২৪৩১১০০০০৬৪৫৮ চাটখিল শাখা, নোয়াখালী) ধরিয়ে দিয়ে টাকা ফেরতের বিশ্বাস স্থাপন করেন। তারপর বিভিন্ন অজুহাতে অনেক উপকার করার আশ্বাসে হিসেব বিহীন ভাবে টাকা নেন যা সঠিক সময়ে ফেরত দেওয়ার ওয়াদা থাকে। কিন্তু, না জানিয়েই একপর্যায়ে কানাডায় গা-ঢাকা দিলেন এই ভদ্রবেশী দু’পায়া ভয়ংকর প্রাণী প্রতারক হুমায়ুন।
অপরদিকে উক্ত টাকা ফেরত প্রদানের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতারক টাকা ফেরত দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস ও রঙিন স্বপ্ন দেখিয়ে নানান কায়দায় আরও টাকা বাগিয়ে নেয় হামিদার কাছ থেকে। এরপরও সে মিষ্টি বুলিতে আবার পাঁচ লক্ষ টাকা ধার চাইলে হঠাৎ করে ছলচাতুরি টের পেয়ে টাকা ফেরত এর জন্য জোর তাগাদা দেন হামিদা। ক্রমেই সন্দেহ ভারী হয়ে ওঠে এই ভদ্রবেশি প্রতারকের উপর। টাকা ফেরতের ব্যাপারে কোন লক্ষন বা সদুত্তর না পেয়ে গত ১২/০৩/২০২৪ ইং তারিখে নিয়মানুযায়ী সেই চেক ব্যাংকে জমা দিলে তা সরাসরি অপর্যাপ্ত তহবিল উল্লেখ্যে প্রত্যাখ্যাত হয়।ওদিকে প্রতারক হুমায়ুনের ফোন বন্ধ পেয়ে কোন উপায়ান্তর না দেখে হামিদা প্রতারকের ঠিকানায় সরাসরি উকিল নোটিশ পাঠাতে বাধ্য হন ১৯/০৩/ ২০২৪ ইংরেজি তারিখে।
অনেক দেরিতে হামিদা এই বুঝতে পেরে হতভম্ভ হয়ে যান যে, তিনি আসলেই ভয়ঙ্কর প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন।
তিনি ঘটনাটি জানান ঢাকার সিনিয়র গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী কামাল হোসেনকে। কামাল হোসেন সেই বাটপার হুমায়ুনের সাথে হোয়াট এপে যোগাযোগ করে বক্তব্য নিতে চাইলে হুমায়ুন কোন উত্তর না দিয়ে আক্রমত্মকভাবে নিকৃষ্ট, বিদঘুটে ও বজ্জাতের মত আচরণ করে কেটে দেয়। পরবর্তীতে সেই বাটপারকে আর ফোনে পাওয়া না গেলে সাংবাদিক কামাল তাৎক্ষণিক গোপন অনুসন্ধানে নেমে পড়েন। চমৎকার দক্ষতার সাথে এই চৌকস সাংবাদিক সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে জানতে পারেন সেই প্রতারক প্রায় আট মাস আগেই কানাডায় পালিয়েছেন! হুমায়ুন একটি প্রতারক চক্রেরও নেতা। দাপুটে প্রভাব দেখিয়ে সমস্ত অসাধ্যকে সাধন করতে পারেন এমন আশ্বাসে বিদেশ নেয়ার নামে বহু লোককে নানান আশা-ভরসা ও আকাশ কুসুম কল্পনায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সে মহানন্দে দূর দেশে ভিজিট ভিসায় ফুর্তিতে মত্ত। অনেকের মতে,এই রকম জনসেবাই নাকি তার নেশা ও পেশা! অন্যদিকে ভুক্তভোগীরা টাকার অভাবে ও লজ্জায় মুখ দেখাতেও নারাজ। অনেকেই সর্বশান্ত হয়ে পথে পথে ভিক্ষে করছে।কারো কাছেই দেনা পাওনার প্রমাণাদি সংরক্ষণ করা নেই।
আরো জটিল অনুসন্ধানে সাংবাদিক কামাল উদঘাটন করলেন সেই ভন্ড বজ্জাতের জাতীয় পরিচয় পত্র ও ভিসা। তারপর বাটপার হুমায়ুনের আপন বড় ভাই টিটুর ফোন নাম্বারও পাওয়া যায়। জানা যায়, এই টিটু পেশায় একজন শিক্ষক। তার সঙ্গে সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে উক্ত ঘটনার বিবরণ জানিয়ে সমাধানের উপায় জানতে চাইলে টিটু সহযোগিতা করার আশ্বাসে বলেন তিনি ফোনে কথা বলে জানাবেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পর টিটু কিছুই না জানালে আবারও কামাল সেই বাটপারের ভাই বড়ো বাটপারকে ফোন করলে টিটু সরাসরি অমানুষিক, উদ্ভট ও জোচ্চোরের মতো আচরণ করে কেটে দেন।
হামিদা গণমাধ্যমকে জানান, হুমায়ূন আমার এলাকার সম্মানিত ভদ্রলোক ভেবেই তাকে বিশ্বাস করেছিলাম। বাস্তবে সেযে চরম লোভী ও দুষ্ট প্রকৃতির সেটা ভোলাভালা চেহারা দেখলে মনেই হয় না ! গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী কামাল হোসেন জানান– আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনে সারাদেশ ভ্রমণ করে থাকি। জীবনে অনেক বড় বড় অপরাধীদের আইনের হাতে সোপর্দ করেছি । আমার দেখা মতে এই বজ্জাত হুমায়ুনের আচরণ সবচাইতে নিকৃষ্ট ইতর সদৃশ যা সরাসরি জানোয়ার তুল্য। আমি এমন ব্যবস্থা নিচ্ছি যাতে ওই বেয়াদবটা বিশ্বের যেখানেই থাকুক আইনের কাছে ধরা তাকে পড়তেই হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ প্রয়োজনীয় সকল স্থানে গিয়ে তাকে ধরাশায়ী না করা পর্যন্ত এই অনুসন্ধান ও আইনী প্রক্রিয়া জোড়ালো ভাবে চালু থাকবে ইনশাল্লাহ।