গাইবান্ধায় বাড়িতে আটক রেখে মারপিটসহ চাঁদা দাবি সংক্রান্ত ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের।
- আপডেট সময় : ১২:৪২:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৯২ বার পড়া হয়েছে
গাইবান্ধায় বাড়িতে আটক রেখে মারপিটসহ চাঁদা দাবি সংক্রান্ত ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের।
গাইবান্ধায় বাড়িতে আটক রেখে মারপিটসহ চাঁদা দাবি সংক্রান্ত ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের। ঘটনার আসল নেপথ্য রহস্য নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। উঠেছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। জনমনে প্রশ্ন, এটি অর্থ লেন-দেন না অন্য কিছু?
মামলা সুত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার
খামার বল্লমঝাড় গ্রামের মৃত হোসেন আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলমের সাথে একই গ্রামের মৃত ছারোয়ার হোসেনের স্ত্রী দুলালী বেগমের অর্থ লেন-দেন সংক্রান্ত ঘটনায় দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসে। এ ঘটনার জের ধরে গত ১৪-০১-২০২৪ইং তারিখ সন্ধ্যে আনুমানিক সাড়ে ৬টায় বে-আইনি জনতায় দলবদ্ধ হয়ে অবৈধ আটক ও চাঁদা দাবি করে মারপিট, চুরি, নন জুডিসিয়াল স্টাম্পে স্বাক্ষর ও টিপসহিসহ ভয়ভীতির ঘটনা ঘটে মর্মে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম নিজে বাদী হয়ে গত ২৩-০১-২০২৪ইং তারিখে দুলালী বেগমসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে গাইবান্ধা সদর থানায় একটি মামলা (নম্বর জি আর-১৬/২০২৪) দায়ের করেন।
দায়েরকৃত এ মামলার ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এর বিষয়-বস্তু, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন, যুক্তি-তর্ক নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। উঠেছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। অনেকেই বলাবলি করছেন, মেসার্স আর.এস.এস ব্রিকস এর স্বত্বাধিকারী হচ্ছেন দুলালী বেগমের স্বামী ছারোয়ার হোসেন। এখানে স্বামী জীবিত থাকতে স্ত্রী দুলালী বেগম মালিক হতে পারেননা। ভাটার ক্যাশ মেমোতে স্বত্বাধিকারী ছারোয়ার হোসেনের স্বাক্ষর থাকার কথা। সেখানে স্ত্রী দুলালী বেগমের স্বাক্ষর কতটুকু যুক্তিসম্মত তা প্রশ্ন বিদ্ধ। দুলালী বেগমসহ তার স্বামী ছারোয়ার হোসেন যদি প্রতারক ও সন্ত্রাসী হয়ে থাকেন তবে জেনে শুনে দুলালী বেগমের স্বাক্ষরিত ক্যাশ মেমোতে জাহাঙ্গীর আলম কি করে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিলেন বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত। শুধু তাই নয়, এ টাকা আদায়ে জাহাঙ্গীর আলমের পুত্র রাকিব হাসান যদি থানায় অভিযোগ করে পরবর্তীতে মিমাংসার স্বার্থে প্রত্যাহার করে থাকেন তা কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করলেন?
এও বলাবলি হচ্ছে, ঘটনার ১৪-০১-২০২৪ইং তারিখ সন্ধ্যে আনুমানিক সাড়ে ৬টায় প্রতিপক্ষ দুলালী বেগম সংগীয় লোকজন নিয়ে টাকা পরিশোধের কথা বলে যদি জাহাঙ্গীর আলমকে কৌশলে রানু মিয়ার বাড়িতে ডেকে গালি গালাজসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে থাকেন এসময় ঘটনার প্রথমেই প্রতিপক্ষগণের গতিবিধি দেখে জাহাঙ্গীর আলম পারতেন নিজের আত্নরক্ষায় চিৎকার দিতে। এরপর যখন লোহার রড,বাঁশের লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাতে আহত করে ৫০ হাজার টাকা বের করে নেয়াসহ নন জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় তখনও পারতেন চিৎকার দিয়ে লোকজনের সমাগম ঘটিয়ে কিংবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশ ডেকে আত্নরক্ষা করতে। যেহেতু এটি করেননি সেহেতু কোন খবরের ভিত্তিতে সাক্ষীগন ঘটনাস্থলে এসে আহত জাহাঙ্গীর আলমকে উদ্ধার করলেন সেই সাথে চিৎকার না দিয়ে সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কি ভাবে জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থলে থাকলেন বিষয়টি বোধগম্য নয়। সত্য সত্যিই যদি জাহাঙ্গীর আলম এমন ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়ে থাকেন তবে তার উচিৎ ছিল তাৎক্ষনিকভাবে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া। তা না করে স্থানীয় ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়ে ঘটনার ৫ দিন পর হাসপাতালে ভর্তি হবার রহস্যই বা কি? মামলার অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা বের করে নেয়ার যে দাবি করা হয়েছে এখানে কত টাকার কতটি নোট ছিল তা অভিযোগে উল্লেখ করা উচিৎ ছিল। শুধু তাই নয়, কি করেই বা ঘটনা ঘটার পর তাৎক্ষনিক মামলা না করে ঘটনার এক সপ্তাহ পর মামলার আশ্রয় নিলেন। ঘটনা যদি সত্য সত্যিই ঘটে থাকে তবে উভয় পক্ষের বাড়ি পাশাপাশি এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হবার সুবাদে আশেপাশের লোকজন ঘটনার বিষয়ে জানার কথা সেই সাথে মামলার সাক্ষী হবার কথা। সেখানে ৪ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদী জাহাঙ্গীর আলম এর স্ত্রী, মাসহ আপন ভগ্নিপতি সাক্ষী হলেন কি করে? এমন ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, আসলে এটি অর্থ লেন-দেন না অন্য কিছু?
সচেতন মহলের ধারনা, পুলিশ প্রশাসন তৎপর হলে সঠিক তদন্তে বেড়িয়ে আসবে ঘটনার আসল নেপথ্য রহস্য। সেই সাথে ঘটবে সৃষ্ট ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান।