গতকাল উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু’জন খুন
- আপডেট সময় : ০১:৫৯:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪ ১১৬ বার পড়া হয়েছে
নিজেস্ব সংবাদদাতা;
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের একটি ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক যুবক নিহত হয়েছে। একই ঘটনায় আহত হয়েছে পুলিশ সদস্যসহ আরও ২০ জন।
শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ফলাফল ঘোষণার পর দুধঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোহসীন।
নিহত যুবকের নাম মো. হৃদয় ভুঁইয়া (২৪)। তিনি দুধঘাটা গ্রামের আমির আলী ভুঁইয়ার ছেলে।
সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন হৃদয়ের চাচাতো ভাই ওমর ফারুক ভুঁইয়া (৩৫)। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোশারফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পূর্বেই হৃদয় নামে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের সামনের অংশে বেশ কয়েকটি ছররা গুলির দাগ রয়েছে। আরও একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।’
সংঘর্ষে আহত অন্তত ১১ জন পুলিশ সদস্য হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে বলেও জানান এই চিকিৎসক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য মজিবুর রহমান গত বছর ২০ মে মারা গেলে ইউপি সদস্য পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এই পদে উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হন কায়সার আহমেদ রাজু ও আজিজুর রহমান। শনিবার নির্বাচন শেষে ফলাফল ঘোষণার পর উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা পুলিশের উপরও হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ।
সংঘর্ষে নিহত হৃদয়ের বড়ভাই জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কায়সার আহমেদ রাজুর সমর্থক। ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। ফলাফল ঘোষণার পর আজিজুর রহমান তার লোকজন নিয়ে তাদের উপর হামলা চালান। আজিজুর ও তার লোকজন গুলি করছে, ওই গুলিতে আমার ভাই মারা গেছে। আমার বড়ভাই ইকবাল ও চাচাতো ভাই ফারুকও আহত হয়েছে। ফারুকের গুলি লাগছে, সে ঢাকা মেডিকেলে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি আছে।’
জানতে চাইলে আজিজুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কায়সার আহমেদ রাজুর লোকজন পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে একজন নিহত হন। আমাদের পক্ষের কেউ গুলি করেনি।’
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘সারাদিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ফলাফল ঘোষণার পর যখন নির্বাচন কর্মকর্তারা কেন্দ্র থেকে উপজেলা পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন তখন কেন্দ্রের একপাশে দুইপক্ষের সংঘর্ষে বাঁধে। এক পর্যায়ে তারা নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা কর্মকর্তা ও সদস্যদের উপর ইট-পাটকেল মারতে থাকে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।’
পুলিশের অন্তত ১১জন সদস্য আহত হয়েছেন জানিয়ে এসপি বলেন, ‘নিহত ওই যুবক প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছে।’
এই ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী আজিজুর রহমান পিরোজপুর ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হিসেবে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।