ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কালিগঞ্জে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে কেড়ে নিল ১ কৃষকের লক্ষ টাকার স্বপ্ন ঢাকা সাভার আশুলিয়ায় ছুরিকাঘাতে পোশাক শ্রমিক নিহত, আটক ২ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হলে ভারতও ক্ষতিগ্রস্থ হবে—- সাতক্ষীরায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত মাদক সেবনের অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত চুয়াডাঙ্গা ভিমরুল্লার চঞ্চলসহ ৩জন গ্রেফতার হারুয়ালছড়ি বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার: বাকৃবির গবেষণা যে কারণে বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন স্বেচ্ছাসেবকরা নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে স্বীকৃত – স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজ ৭১ অনলাইন পোর্টালে”প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত আশাশুনির হাঁড়িভাঙ্গা বাজারে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

খালি কলস নিয়ে রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি উপকূলে লবণ পানি নিয়ন্ত্রণ ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪ ১০৯ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:-
উপকূলে লবণ পানি নিয়ন্ত্রণ ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট নানা কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এরপর লবণাক্ততার আগ্রাসনে এই সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ফলে উপকূলের জীবন-জীবিকা ও প্রাণ-প্রকৃতি হুমকির মুখে পড়েছে। এই হুমকি মোকাবেলায় লবণ পানি নিয়ন্ত্রণ ও সুপেয় পানি নিশ্চিত করা জরুরি।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত খালি কলসি হাতে নারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে এ সব কথা বলেন তারা। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ হ ম তারেক উদ্দিন, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের ব্যবস্থাপক মো. হেলাল উদ্দিন, ব্যাংক কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন, ঢাকাস্থ পাইকগাছা সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ইঞ্জিনিয়ার তুহীন পারভেজ, সাবেক ছাত্র নেতা মৃত্যুঞ্জয় দাশ প্রমূখ।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারি নারীরা জানান, উপকূলের নারীদের অনেক দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়। দস্তার কলসে দূর থেকে এই পানি সংগ্রহ করার ফলে তাদেরকে সারাবছর কোমরে ব্যাথা, মাজার হাড় ক্ষয়ে যাওয়া, কিডনির সমস্যাসহ অনেক রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়। এছাড়া অনেক সময় মেয়েদের ইভটিজিং ও নানাধরণের লাঞ্চনার শিকার হতে হয়। তারা আরো বলেন, পানি নিয়ে উপকূলবাসীর দূর্ভোগের সীমা নেই। চারদিক লবণ পানি দ্বারা বেষ্টিত। পান করার উপযোগী না হলেও অনেকটা বাধ্য হয়ে এলাকার অনেকে লবণ পানি পান করে থাকে। ফলে তাদের নানা ধরনের পানি বাহিত রোগে ভুগতে হয়। এর মধ্যে নারী ও শিশুরা বেশি সমস্যায় ভোগে।
পরিবেশ আন্দোলনের নেতা শরীফ জামিল বলেন, একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলে পানির আধারগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এরপর লবণাক্ত পানিতে চিংড়ি চাষের কারণে মিঠাপানির পুকুরগুলোর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আর সময়ে-অসময়ে লবণাক্ত পানি ফসলি জমিতে প্রবেশ করায় জমিতে ফসল হচ্ছে না। তাই জীবন-জীবিকা রক্ষায় উপকূলের বসতি ও ফসলি এলাকায় লবণ পানি বন্ধ করতে হবে।
অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, অতিরিক্তি লবণাক্ত পানি গ্রহণের ফলে নারীদের জরায়ুতে বিভিন্ন রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভকালীন খিঁচুনি, গর্ভপাত, এমনকি অপরিণত শিশু জন্ম দেওয়ার হার বেড়েছে। যে কারণে উপকূলীয় এলাকায় বাল্যবিয়ে বাড়ছে। আবার রোগে আক্রান্ত হয়ে জরায়ু কেটে ফেলার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটছে। তাই টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে উপকূলে লবণ পানির আগ্রাসন বন্ধ ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি।
কর্মসূচিতে উত্থাপিত দাবিনামায় বলা হয়, পানি আইনের ধারা-১৭ অনুযায়ী উপকুলীয় অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। মিঠা পানির উৎস ভরাট ও দূষণ করে এমন যে কোন ব্যক্তিগত বা শিল্প উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে। নিরাপদ পানির সর্বজনীন, ন্যায্য ও সজলভ্যতা নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। জলবায়ু ঝুঁকি, দারিদ্র্য ও বিপদাপন্নতার মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে উপকূল সংশ্লিষ্ট উপজেলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির (বিশেষ করে নগদ ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি) আওতা ও পরিধি বাড়াতে হবে। আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সাধনে উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমি এই প্লাটফর্মটি তৈরী করেছি এ দেশের সাধারণ মানুষের কন্ঠস্বর হিসাবে পরিচালিত করার জন্য।আমরা অবিরত থাকবো সততা নিয়ে সত্যের সাথে। দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা এ দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত গনমানুষের কথা বলবে এবং সত্য প্রকাশে থাকবে আপোষহীন।
ট্যাগস :

খালি কলস নিয়ে রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি উপকূলে লবণ পানি নিয়ন্ত্রণ ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি

আপডেট সময় : ১০:০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:-
উপকূলে লবণ পানি নিয়ন্ত্রণ ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট নানা কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এরপর লবণাক্ততার আগ্রাসনে এই সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ফলে উপকূলের জীবন-জীবিকা ও প্রাণ-প্রকৃতি হুমকির মুখে পড়েছে। এই হুমকি মোকাবেলায় লবণ পানি নিয়ন্ত্রণ ও সুপেয় পানি নিশ্চিত করা জরুরি।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত খালি কলসি হাতে নারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে এ সব কথা বলেন তারা। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ হ ম তারেক উদ্দিন, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের ব্যবস্থাপক মো. হেলাল উদ্দিন, ব্যাংক কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন, ঢাকাস্থ পাইকগাছা সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ইঞ্জিনিয়ার তুহীন পারভেজ, সাবেক ছাত্র নেতা মৃত্যুঞ্জয় দাশ প্রমূখ।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারি নারীরা জানান, উপকূলের নারীদের অনেক দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়। দস্তার কলসে দূর থেকে এই পানি সংগ্রহ করার ফলে তাদেরকে সারাবছর কোমরে ব্যাথা, মাজার হাড় ক্ষয়ে যাওয়া, কিডনির সমস্যাসহ অনেক রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়। এছাড়া অনেক সময় মেয়েদের ইভটিজিং ও নানাধরণের লাঞ্চনার শিকার হতে হয়। তারা আরো বলেন, পানি নিয়ে উপকূলবাসীর দূর্ভোগের সীমা নেই। চারদিক লবণ পানি দ্বারা বেষ্টিত। পান করার উপযোগী না হলেও অনেকটা বাধ্য হয়ে এলাকার অনেকে লবণ পানি পান করে থাকে। ফলে তাদের নানা ধরনের পানি বাহিত রোগে ভুগতে হয়। এর মধ্যে নারী ও শিশুরা বেশি সমস্যায় ভোগে।
পরিবেশ আন্দোলনের নেতা শরীফ জামিল বলেন, একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলে পানির আধারগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এরপর লবণাক্ত পানিতে চিংড়ি চাষের কারণে মিঠাপানির পুকুরগুলোর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আর সময়ে-অসময়ে লবণাক্ত পানি ফসলি জমিতে প্রবেশ করায় জমিতে ফসল হচ্ছে না। তাই জীবন-জীবিকা রক্ষায় উপকূলের বসতি ও ফসলি এলাকায় লবণ পানি বন্ধ করতে হবে।
অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, অতিরিক্তি লবণাক্ত পানি গ্রহণের ফলে নারীদের জরায়ুতে বিভিন্ন রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভকালীন খিঁচুনি, গর্ভপাত, এমনকি অপরিণত শিশু জন্ম দেওয়ার হার বেড়েছে। যে কারণে উপকূলীয় এলাকায় বাল্যবিয়ে বাড়ছে। আবার রোগে আক্রান্ত হয়ে জরায়ু কেটে ফেলার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটছে। তাই টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে উপকূলে লবণ পানির আগ্রাসন বন্ধ ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি।
কর্মসূচিতে উত্থাপিত দাবিনামায় বলা হয়, পানি আইনের ধারা-১৭ অনুযায়ী উপকুলীয় অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। মিঠা পানির উৎস ভরাট ও দূষণ করে এমন যে কোন ব্যক্তিগত বা শিল্প উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে। নিরাপদ পানির সর্বজনীন, ন্যায্য ও সজলভ্যতা নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। জলবায়ু ঝুঁকি, দারিদ্র্য ও বিপদাপন্নতার মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে উপকূল সংশ্লিষ্ট উপজেলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির (বিশেষ করে নগদ ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি) আওতা ও পরিধি বাড়াতে হবে। আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সাধনে উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।