ঢাকা ১০:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে — মির্জা আলমগীর ডাক্তার শহিদুল আলমের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জি এম আব্বাস উদ্দিন ঢাকা সাভারে জামিনে বের হয়ে বাদীর স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের বিশেষ অভিযানে পিস্তলসহ গ্রেপ্তার ২৫ দেশে প্রথমবারের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি জেলা পুলিশ যশোরের মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত পিরোজপুরে ওয়ার্ল্ড ভিশনের ব্যাতিক্রমধর্মী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ঢাকা সাভারে ভোটারদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে ভোগান্তি রাউজান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে শীতার্তদের কম্বল বিতরণ সোমা মুখলেছ মডেল স্কুল এন্ড কলেজে ২য় বার্ষিক ক্রীড়া, বিচিত্রা ও নাট্যানুষ্ঠান 

কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমাবে বিটি বেগুন – বাকৃবি অধ্যাপক

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৫:২২:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫ ২৮ বার পড়া হয়েছে

বাকৃবি প্রতিনিধি:-বাংলাদেশে বেগুন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল, তবে ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ, বেগুন চাষের অন্যতম প্রধান সমস্যা। দেশের আবহাওয়া এই পোকার জন্য অনুকূল হওয়ায় প্রতি বছর বড় পরিমাণে বেগুন নষ্ট হয়। এ সমস্যা সমাধানে সাধারণত কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এসব সমস্যার কার্যকর সমাধান হিসেবে বিটি বেগুনের ধারণা সামনে আসে।

ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা মূলত লার্ভা অবস্থায় বেগুনের ক্ষতি করে। তাছাড়া বিটি বেগুন চাষে কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমবে। বিটি বেগুন, জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফসল, এবং এর পরিচর্যা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক শরীফ-আল-রাফি।

অধ্যাপক শরীফ-আল-রাফি বলেন, ‘বিটি শব্দটি এসেছে Bacillus thuringiensis (Bt) নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত কীটপতঙ্গের (যেমন বেল বোরার) বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে কাজ করে। এই ব্যাকটেরিয়া ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা বা লার্ভার অন্ত্র নষ্ট করে দেয়। ফলে পোকা বা লার্ভা মারা যায়। বিজ্ঞানীরা এই ব্যাকটেরিয়ার বিশেষ জিন বেগুনের মধ্যে সংযুক্ত করেছেন, যার ফলে বেগুনটি কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে। যদিও শুরুতে বিটি বেগুন নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল, তবে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ফসল। কীটনাশক ব্যবহার কমার পাশাপাশি এই বেগুন কৃষকের অতিরিক্ত খরচও কমাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিটি বেগুন মূলত একটি জেনেটিক্যালি মডিফায়েড বেগুন, যা Bacillus thuringiensis (Bt) ব্যাকটেরিয়ার জিন ধারণ করে। এটি কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে বেগুনকে রক্ষা করে এবং এর নামকরণ করা হয়েছে সেই জিন (Bt) এর কারণে।’

বিটি বেগুন নিয়ে সাধারণের ভুল ধারণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিটি বেগুন নিয়ে আমাদের একটি ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন, বেগুন খেলে যে পোকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেটি মানুষের ক্ষতিও করতে পারে। কীটনাশক যেমন কীটপতঙ্গের ক্ষতি করে, তেমনি মানুষেরও ক্ষতি করে। কিন্তু বিটি বেগুনের ক্ষেত্রে যে ব্যাকটেরিয়ার জিন ব্যবহার করা হয়, সেটি শুধুমাত্র ওই বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার ক্ষতি সাধন করে। এই জিন মানুষের অন্ত্রে কোনো ক্ষতি করে না, বরং এটি নিরাপদ। চাষের ক্ষেত্রে বিটি বেগুনের জন্য আলাদা কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। এটি সাধারণ বেগুনের মতোই চাষ করা যায় এই বেগুন।’

রিসালাত আলিফ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমি এই প্লাটফর্মটি তৈরী করেছি এ দেশের সাধারণ মানুষের কন্ঠস্বর হিসাবে পরিচালিত করার জন্য।আমরা অবিরত থাকবো সততা নিয়ে সত্যের সাথে। দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা এ দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত গনমানুষের কথা বলবে এবং সত্য প্রকাশে থাকবে আপোষহীন।
ট্যাগস :

কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমাবে বিটি বেগুন – বাকৃবি অধ্যাপক

আপডেট সময় : ০৫:২২:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫

বাকৃবি প্রতিনিধি:-বাংলাদেশে বেগুন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল, তবে ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ, বেগুন চাষের অন্যতম প্রধান সমস্যা। দেশের আবহাওয়া এই পোকার জন্য অনুকূল হওয়ায় প্রতি বছর বড় পরিমাণে বেগুন নষ্ট হয়। এ সমস্যা সমাধানে সাধারণত কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এসব সমস্যার কার্যকর সমাধান হিসেবে বিটি বেগুনের ধারণা সামনে আসে।

ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা মূলত লার্ভা অবস্থায় বেগুনের ক্ষতি করে। তাছাড়া বিটি বেগুন চাষে কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমবে। বিটি বেগুন, জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফসল, এবং এর পরিচর্যা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক শরীফ-আল-রাফি।

অধ্যাপক শরীফ-আল-রাফি বলেন, ‘বিটি শব্দটি এসেছে Bacillus thuringiensis (Bt) নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত কীটপতঙ্গের (যেমন বেল বোরার) বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে কাজ করে। এই ব্যাকটেরিয়া ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা বা লার্ভার অন্ত্র নষ্ট করে দেয়। ফলে পোকা বা লার্ভা মারা যায়। বিজ্ঞানীরা এই ব্যাকটেরিয়ার বিশেষ জিন বেগুনের মধ্যে সংযুক্ত করেছেন, যার ফলে বেগুনটি কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে। যদিও শুরুতে বিটি বেগুন নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল, তবে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ফসল। কীটনাশক ব্যবহার কমার পাশাপাশি এই বেগুন কৃষকের অতিরিক্ত খরচও কমাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিটি বেগুন মূলত একটি জেনেটিক্যালি মডিফায়েড বেগুন, যা Bacillus thuringiensis (Bt) ব্যাকটেরিয়ার জিন ধারণ করে। এটি কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে বেগুনকে রক্ষা করে এবং এর নামকরণ করা হয়েছে সেই জিন (Bt) এর কারণে।’

বিটি বেগুন নিয়ে সাধারণের ভুল ধারণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিটি বেগুন নিয়ে আমাদের একটি ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন, বেগুন খেলে যে পোকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেটি মানুষের ক্ষতিও করতে পারে। কীটনাশক যেমন কীটপতঙ্গের ক্ষতি করে, তেমনি মানুষেরও ক্ষতি করে। কিন্তু বিটি বেগুনের ক্ষেত্রে যে ব্যাকটেরিয়ার জিন ব্যবহার করা হয়, সেটি শুধুমাত্র ওই বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার ক্ষতি সাধন করে। এই জিন মানুষের অন্ত্রে কোনো ক্ষতি করে না, বরং এটি নিরাপদ। চাষের ক্ষেত্রে বিটি বেগুনের জন্য আলাদা কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। এটি সাধারণ বেগুনের মতোই চাষ করা যায় এই বেগুন।’

রিসালাত আলিফ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ