ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতায় আসতেই হবে : প্রধান উপদেষ্টা সূফীকথা’র ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশসহ ৬ দেশ রাণীশংকৈলে নারী ও কন্যাশিশুদের মানবাধিকার রক্ষার্থে গণ শুনানি শ্যামনগরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনি খাতুনের বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন আগৈলঝাড়ায় ৭শ পিচ ইয়াবা ও ১ কেজি ৮শ গ্রাম গাঁজা ব্যবসায়ীসহ ৩ জন আটক বরিশালের গৌরনদীতে ৮ মাসে কোরআনে হাফেজ ১০ বছরের শিশু আবদুল্লাহ দুমকি প্রেসক্লাব পরিবর্তনের অঙ্গীকারে-নতুন কমিটি গঠন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৪ দিনের ছুটি যশোরে জাল ওয়ারিশ সনদ প্রদান, ইউপি প্রশাসকের বিরুদ্ধে মামলা

কালীগঞ্জে রিডা হাসপাতালে অবৈধ গর্ভপাত, সন্তান বিক্রি কালে মুচলেকা দিয়ে রেহাই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৬:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫ ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মহাসিন, খুলনা বিভাগীয়, প্রতিনিধি:-

স্বামী -সন্তান ত্যাগ করা বহুগামী এক মহিলা অবৈধভাবে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় ভুয়া স্বামী, স্ত্রী পরিচয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সিজারের মাধ্যমে গর্ভপাত ,অবৈধ সন্তান দত্তকের নামে বিক্রি কালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমির) হস্ত ক্ষেপে সঙ্ঘবদ্ধ চক্রটি মুচলেকা দিয়ে এ যাত্রায় রেহাই পাওয়া পায়।
ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার (১৮ মে) বেলা ১২ টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার পাওখালিতে অবস্থিত রিডা হাসপাতালে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস অবৈধ সন্তানের জনক জৈনক জাকিরের নামে থানায় মামলা দিতে গেলে মানুষিক ভারসাম্যহীন বলে মামলা হয়নী। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় কালিগঞ্জ উপজেলার বাজার গ্রাম রহিমপুর গ্রামের মৃত শেখ ছবিলার রহমানের কন্যা সালমা খাতুনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নারায়ণপুর গ্রামের হাফিজুল গাজীর সঙ্গে বিবাহ হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে ১ টি কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। বর্তমানে এই সন্তান শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর সঙ্গে ঘর সংসার করছে। এদিকে মা সালমা বেগমের উচ্ছৃঙ্খল জীবন ,যাপন ও অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িয়ে স্বামী, সংসার ত্যাগ করে মা লতিফা খাতুনের সঙ্গে বসবাস করে আসছে। এই ভাবে বহুগামী সালমা খাতুন বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে অবৈধভাবে মেলামেশার কারণে একাধিকবার গর্ভবতী হয়ে অবৈধ গর্ভপাত ঘটিয়ে নিজের সন্তানকে দত্তকের নামে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মানসিক ভারসাম্যহীন আখ্যা দিয়ে আবারো অবৈধ মেলামেশায় গর্ভবতী হয়ে পড়ে। জানাজানি হওয়ায় বাড়ি ছেড়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের খালা মাহফুজা এবং খালাতো ভাই মাহবুবের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকে। গত বৃহস্পতিবার ১৫ মে প্রসব বেদনা শুরু হলে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গায় বন্ধন হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে উপায় অন্তর না পেয়ে নিজের খালাতো ভাই মাহবুবওরফে মিন্টু ওরফে রাজ্জাককে স্বামী পরিচয় দিয়ে কালীগঞ্জের পাও খালি তে অবস্থিত রিডা হাসপাতালে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে গোপন কেবিনে ভর্তি করে। ওই সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওই রাতেই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ডাক্তার আহসানুল ইসলাম কল্লোলের মাধ্যমে সিজার অপারেশন করলে ১টি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ওই সময় পূর্ব থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে শ্যামনগর থানার বংশীপুর গ্রামের আইয়ুব আলী গাজীর নিঃসন্তান স্ত্রী শিল্পী আক্তারের নিকট সিজার খরচ সহ মোট অংকের টাকায় বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে রবিবার বেলা আনুমানিক ১২ টার দিকে রিডা হাসপাতালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস হানা দেয়। এ সময় তাদের অপকর্মের কথা অকপটে এই চক্রের সদস্যরা স্বীকার করে মুচলেকা দিয়ে অবৈধ সন্তানের জনকের নামে মামলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে রেহাই পায়। সালমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন মানুষকে ফাঁদে ফেলে অবৈধ মেলামেশা ও গর্ভ পাতের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একাধিক সন্তান বিক্রি করার ঘটনা স্বীকার করে তার মা লতিফা খাতুন ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবে না বলে সাংবাদিকদের জানান। ঘটনার সত্যতা জানার জন্য রিডার হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান তথ্য গোপন করে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে ভর্তি হওয়ায় বিষয়টি জানা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস জানান বিষয়টি নিয়ে আমি ভুক্তভোগীদের সাতে নিয়ে মামলা করার জন্য থানায় গেলেও থানার ওসি সাহেব মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মামলা নেয়নি। তবে ক্লিনিকের প্রতি ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে তিনি পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ বিষয়ে দত্তক নেওয়ার জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার নিকট আবেদন করার জন্য বলেন। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বুলবুল কবিরের নিকট একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুস সালামের নিকট ফোন দিলেও তিনিও রিসিভ করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

কালীগঞ্জে রিডা হাসপাতালে অবৈধ গর্ভপাত, সন্তান বিক্রি কালে মুচলেকা দিয়ে রেহাই

আপডেট সময় : ০৯:৫৬:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

মোঃ মহাসিন, খুলনা বিভাগীয়, প্রতিনিধি:-

স্বামী -সন্তান ত্যাগ করা বহুগামী এক মহিলা অবৈধভাবে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় ভুয়া স্বামী, স্ত্রী পরিচয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সিজারের মাধ্যমে গর্ভপাত ,অবৈধ সন্তান দত্তকের নামে বিক্রি কালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমির) হস্ত ক্ষেপে সঙ্ঘবদ্ধ চক্রটি মুচলেকা দিয়ে এ যাত্রায় রেহাই পাওয়া পায়।
ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার (১৮ মে) বেলা ১২ টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার পাওখালিতে অবস্থিত রিডা হাসপাতালে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস অবৈধ সন্তানের জনক জৈনক জাকিরের নামে থানায় মামলা দিতে গেলে মানুষিক ভারসাম্যহীন বলে মামলা হয়নী। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় কালিগঞ্জ উপজেলার বাজার গ্রাম রহিমপুর গ্রামের মৃত শেখ ছবিলার রহমানের কন্যা সালমা খাতুনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নারায়ণপুর গ্রামের হাফিজুল গাজীর সঙ্গে বিবাহ হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে ১ টি কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। বর্তমানে এই সন্তান শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর সঙ্গে ঘর সংসার করছে। এদিকে মা সালমা বেগমের উচ্ছৃঙ্খল জীবন ,যাপন ও অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িয়ে স্বামী, সংসার ত্যাগ করে মা লতিফা খাতুনের সঙ্গে বসবাস করে আসছে। এই ভাবে বহুগামী সালমা খাতুন বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে অবৈধভাবে মেলামেশার কারণে একাধিকবার গর্ভবতী হয়ে অবৈধ গর্ভপাত ঘটিয়ে নিজের সন্তানকে দত্তকের নামে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মানসিক ভারসাম্যহীন আখ্যা দিয়ে আবারো অবৈধ মেলামেশায় গর্ভবতী হয়ে পড়ে। জানাজানি হওয়ায় বাড়ি ছেড়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের খালা মাহফুজা এবং খালাতো ভাই মাহবুবের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকে। গত বৃহস্পতিবার ১৫ মে প্রসব বেদনা শুরু হলে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গায় বন্ধন হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে উপায় অন্তর না পেয়ে নিজের খালাতো ভাই মাহবুবওরফে মিন্টু ওরফে রাজ্জাককে স্বামী পরিচয় দিয়ে কালীগঞ্জের পাও খালি তে অবস্থিত রিডা হাসপাতালে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে গোপন কেবিনে ভর্তি করে। ওই সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওই রাতেই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ডাক্তার আহসানুল ইসলাম কল্লোলের মাধ্যমে সিজার অপারেশন করলে ১টি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ওই সময় পূর্ব থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে শ্যামনগর থানার বংশীপুর গ্রামের আইয়ুব আলী গাজীর নিঃসন্তান স্ত্রী শিল্পী আক্তারের নিকট সিজার খরচ সহ মোট অংকের টাকায় বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে রবিবার বেলা আনুমানিক ১২ টার দিকে রিডা হাসপাতালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস হানা দেয়। এ সময় তাদের অপকর্মের কথা অকপটে এই চক্রের সদস্যরা স্বীকার করে মুচলেকা দিয়ে অবৈধ সন্তানের জনকের নামে মামলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে রেহাই পায়। সালমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন মানুষকে ফাঁদে ফেলে অবৈধ মেলামেশা ও গর্ভ পাতের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একাধিক সন্তান বিক্রি করার ঘটনা স্বীকার করে তার মা লতিফা খাতুন ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবে না বলে সাংবাদিকদের জানান। ঘটনার সত্যতা জানার জন্য রিডার হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান তথ্য গোপন করে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে ভর্তি হওয়ায় বিষয়টি জানা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস জানান বিষয়টি নিয়ে আমি ভুক্তভোগীদের সাতে নিয়ে মামলা করার জন্য থানায় গেলেও থানার ওসি সাহেব মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মামলা নেয়নি। তবে ক্লিনিকের প্রতি ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে তিনি পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ বিষয়ে দত্তক নেওয়ার জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার নিকট আবেদন করার জন্য বলেন। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বুলবুল কবিরের নিকট একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুস সালামের নিকট ফোন দিলেও তিনিও রিসিভ করেননি।